২২ জুলাই ২০২৩, শনিবার, ১২:৪৩

দক্ষ জনশক্তিতে পিছিয়ে বাংলাদেশ

বাংলাদেশের বৈদেশিক মুদ্রার বড় অংশ আসে প্রবাসে কর্মরত শ্রমিকদের পাঠানো রেমিট্যান্স থেকে। বিশ্বের দেশে দেশে বাংলাদেশের লাখ লাখ শ্রমিক কাজ করছেন। বিস্ফোরণন্মুখ জনসংখ্যার দেশে জনগণকে দক্ষ জনশক্তিতে রুপান্তরের সুচিন্তিত কোনো পদক্ষেপ নেই। ফলে মধ্যপ্রাচ্যসহ বিদেশে ভারত, পাকিস্তান, শ্রীলংকা এমনকি নেপালের শ্রমিকরা যে হারে বেতন পান বাংলাদেশের শ্রমিকরা পান তার চেয়ে অনেক কম বেতন। কারণ দক্ষতার অভাব। বাংলাদেশের শ্রমিকদের প্রশিক্ষণের জোড়ালো কোনো পদক্ষেপই নেই। যা করা হচ্ছে তা লোক দেখানো।

প্রশিক্ষিত জনশক্তিই উন্নয়নের চাবিকাঠি। রাজনৈতিক ধান্দায় বড় বড় প্রকল্প গ্রহণ করে ব্রীজ-কালভার্ট, মেট্রোরেল, ফ্লাইওয়াজ নির্মাণ করে উন্নয়নের তুবরি ফোড়ানো হলেও দেশের সার্বিক উন্নয়নে প্রাতিষ্ঠানিকভাবে দক্ষ শ্রমশক্তি গড়ে তোলার নেই কোনো পদক্ষেপ। বিভিন্ন পেশার শ্রকিকদের প্রশিক্ষণ দিয়ে বিদেশ পাঠানোর উদ্যোগ না থাকায় অদক্ষ শ্রমিকরা বিদেশে রোদেপুরে গায়ের ঘাম পানি করে পানির দামে শ্রম বিক্রি করছেন। ফলে প্রবাসী শ্রমিকদের যে হারে রেমিট্যান্স দেশে পাঠানোর কথা সে হারে আসছে না। আবার দক্ষতার অভাব তথা প্রশিক্ষণ না থাকায় বিদেশ বাংলাদেশের শ্রমিকদের চাহিদা কমতে শুরু করেছে। সংশ্লিষ্টরা জানাচ্ছেন ভারত-পাকিস্তান-নেপাল শ্রমিকদের প্রশিক্ষণ দিয়ে পাঠানোর নানা উদ্যোগ নিয়েছে। কিন্তু বাংলাদেশে এ ধরনের কোনো কার্যকর পদক্ষেপ নেই। বরং অভিযোগ রয়েছে জনশক্তি রফতানি ব্যুরোর এক শ্রেণির অসাধু কর্মকর্তারা বাংলাদেশ থেকে বিদেশ গমনেচ্ছু শ্রমিকদের কাছে থেকে নানা পন্থায় অতিরিক্ত টাকা আদায় করছে।

সউদী আরবসহ মধ্যপ্রাচ্য হচ্ছে বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় শ্রম বাজার। এখন বিভিন্ন কাজে আধুনিক যন্ত্রপাতি অধিক ব্যবহৃত হওয়ায় মাধ্যপ্রাচ্যের শ্রমবাজার কেন্দ্রিক দেশগুলোতে অদক্ষকর্মীর চাহিদা দিন দিন হ্রাস পাচ্ছে। তবে আধুনিক বিজ্ঞানের যুগে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত দক্ষ জনশক্তির চাহিদা দিন দিন বাড়ছে। এই সুযোগ কাজে লাগিয়ে ভারত, শ্রীলংকা ফিলিপাইন ও ইন্দোনেশিয়ার বিভিন্ন ট্রেডের টেকনেশিয়ান ও দক্ষকর্মীরা মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোর শ্রমবাজার দখল করে নিচ্ছে। এসব দেশের দক্ষকর্মীরা বাংলাদেশি কর্মীদের তুলনায় প্রতিমাসে দ্বিগুণ মজুরি আয় করছেন। অথচ বাংলাদেশে শ্রমিকদের দক্ষ জনশক্তিতে রুপান্তরের উদ্যোগ নেই। সউদী, দুবাই, কাতার, ওমান, কুয়েত, বাহরাইন, মালয়েশিয়ায় কর্মরত বাংলাদেশি অধিকাংশ কর্মী অদক্ষ এবং লেবার শ্রেণির কর্মী। তারা অদক্ষ হওয়ায় মজুরিও পাচ্ছে কম। বিদেশের শ্রমবাজারগুলোতে দক্ষকর্মী প্রেরণের সংখ্যা বাড়াতে পারলে রেমিট্যান্স আয়ের খাত আরো বেশি চাঙ্গা হতো। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, একটি দেশের উন্নয়ন নির্ভর করে সে দেশের প্রশিক্ষিত জনশক্তি কেমন তার ওপর। সারাবিশ্বে বিশাল শ্রমবাজার। দক্ষ শ্রমিক পাঠাতে পারলে বাংলাদেশে বিদেশি রেমিট্যান্স আসবেই। দেশে ব্রীজ-কালভার্ট উন্নয়নের নামে যে অর্থের অপচায় হয়েছে সেটা না করে শ্রমিকদের প্রশিক্ষণ দিয়ে বিদেশে পাঠালে দেশকে ডলার সংকটে পড়তে হতো না। কেন্দ্রীয় ব্যাংকে রিজার্ভের পরিমাণ রেড লাইনে যেতো না।

প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের সূত্র জানায়, সউদী আরবে বাংলাদেশি অদক্ষ ন্যূনতম বেতন ও অন্যান্য সুযোগ সুবিধাসহ মাসিক বেতন ৭৫০ সউদী রিয়াল এবং ৯৫০ রিয়াল। দেশটিতে দক্ষকর্মী প্রেরণ করতে পারলে মাসিক মজুরি দ্বিগুণ আয় করা সম্ভব বলে একাধিক সূত্র জানিয়েছে। একশ্রেণির অসাধু রিক্রুটিং এজেন্সি সউদীতে ভালো চাকুরি ও বেতনের নামে শত শত অদক্ষ বাংলাদেশি কর্মীকে রিয়াদের আবদ্ধ রুমে নিয়ে আটকে রেখেছে। মাসের পর মাস তাদের শর্তানুযায়ী কাজ ও আকামা দিতে পারছে না এসব প্রতারক এজেন্সি। রিয়াদে অবরুদ্ধ অদক্ষ কর্মীরা অনাহার-অনিদ্রায় চরম উৎকন্ঠায় দিন কাটাচ্ছে। কাজ নেই, আকামা নেই। খাবারও পাচ্ছে না নিয়মিত। অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে কর্ম খাবার ও আকামাহীন এসব প্রবাসী কর্মীদের মাঝে চলছে এক বেহাল অবস্থা। হোটেলে কাজ দেয়ার কথা থাকলেও তা মিলছে না। কাউকে কাউকে বাহিরের কোম্পানিতে মাসে ১০ থেকে ৭ দিন আলগা কাজ দেয়া হলেও বেতন পাচ্ছে না এসব প্রবাসীকর্মী। বাধ্য হয়েই অদক্ষ প্রবাসী সাকিল হোসেন বাধনের স্ত্রী সুমি গত ৫ জুলাই স্বামীর ন্যায্য অধিকার, যথাযথ কাজ এবং আকামা, বেতন খাবার এবং না হয় চার লাখ টাকার ক্ষতিপূরণ আদায় করে তাকে দেশে ফেরত আনার দাবিতে কাকরাইলস্থ বিএমইটির মহাপরিচালকের কাছে লিখিত অভিযোগ পেশ করেছে।

সউদীর রিয়াদের ৩১ নং বদিয়াস্থ গুদাম ঘরে অবরুদ্ধ প্রতারণার শিকার প্রবাসী বাংলাদেশিরা দীর্ঘদিন যাবৎ মানবেতর জীবনযাপন করছে। কথা অনুযায়ী কাজ না দিয়ে অন্য কোম্পানিতে প্রবাসীকর্মীদের অঘোষিতভাবে বিক্রি করে দেয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। অবরুদ্ধ কর্মীদের হোটেলে কাজ দেয়ার কথা বলে এখনো কাজ দেয়া হয়নি বলে অভিযোগ উঠছে। রিয়াদে অবরুদ্ধ সাকিলের পিতা সেকান্দার ইনকিলাবে কান্না জড়িত কন্ঠে বলেন, এতোগুলো টাকা ঋণ করে চার লাখ টাকা দিয়ে ছেলেকে বুক ভরা আশা নিয়ে আয়াত ওভারসিজের (আরএল-১৬৩৮) মাধ্যমে সউদী পাঠালাম কিন্ত তার কাজ, নেই খাওয়া নেই, আকামা নেই। সে এখন রিয়াদে মানবেতর জীবনযাপন করছে। গুদামঘরে এসিহীন রুমে প্রচ- গরমে তাদের বেহাল দশা। বিদেশে ছেলের কাজের কোনো সুরাহা না হওয়ায় এখন মরণযন্ত্রায় আছি বলেও তিনি উল্লেখ করেন। এক প্রশ্নের জবাবে সাকিলের পিতা সেকান্দার বলেন, তাকে (সাকিল) হোটেল বয় এর কাজ দেয়ার কথা ছিল। কিন্ত অদ্যবধি সাকিলকে নির্ধারিত ও নির্দিষ্ট কোনো কাজ দেয়া হয়নি। তাকে মাঝে মধ্যে আকামা ছাড়া বিভিন্ন কোম্পানিতে ৭ দিন থেকে ১০ দিন কাজ দেয়া হলেও এর বিনিময়ে তাকে কোনো প্রকার বেতন দেয়া হচ্ছে না। অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে সে শারীরিক ও মানসিকভাবে অসুস্থ হয়ে পড়েছে।

এদিকে, অর্থনীতির গুরুত্বপূর্ণ সূচক প্রবাসী আয়ে সুবাতাস বইছে। পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে যাওয়া প্রবাসীরা নতুন অর্থবছরের প্রথম মাস জুলাইয়ের প্রথম ১৪ দিনে ৯৯ কোটি ৫৫ লাখ (৯৯৫ মিলিয়ন) মার্কিন ডলারের রেমিট্যান্স পাঠিয়েছেন। গত ১৬ জুলাই বাংলাদেশ ব্যাংকের হালনাগাদ প্রতিবেদনে এ তথ্য জানা গেছে।

রেমিট্যান্স আয়ের চলমান এই ধারা অব্যাহত থাকলে মাস শেষে প্রবাসী আয় ২০০ কোটি ডলার ছাড়াবে বলে মনে করছেন কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কর্মকর্তারা। বোয়েসেলের মাধ্যমে জর্ডান, কোরিয়ায় দক্ষ নারী পুরুষকর্মীরা বিনা অভিবাসন ব্যয়ে চাকরি লাভ করছে। এসব দক্ষকর্মীরা মজুরিও ভালো পাচ্ছে। সিংগাপুরের বিভিন্ন সেক্টরে যথাযথ প্রশিক্ষণ দিয়ে দক্ষতা অর্জন করে কর্মীরা যাচ্ছে। দেশটির শ্রম মন্ত্রণালয়ের দেয়া সুযোগ সুবিধাও ভোগ করছে প্রবাসী দক্ষ বাংলাদেশিরা। দেশটিতে ওয়েল্ডার ও শিপইয়ার্ডেও চাকরি লাভ করে বাংলাদেশিরা দক্ষতার ছাপ রাখতে সক্ষম হচ্ছে। সিংগাপুর প্রবাসী মুন্সিগঞ্জের শ্রীনগরের আমিনুল ইসলাম তুহিন গতকাল ইনকিলাবকে জানান, সিংগাপুরে দক্ষ বাংলাদেশি কর্মীদের প্রচুর চাহিদা রয়েছে। দেশটির আইনকানুন মেনে চলে প্রবাসী বাংলাদেশিরা কঠোর পরিশ্রম করে প্রচুর রেমিট্যান্স দেশে পাঠাচ্ছে বলে উল্লেখ করেন প্রবাসী তুহিন।

সরকার নির্ধারিত অভিবাসন ব্যয়ের চেয়ে কয়েকগুণ বেশি টাকা বিদেশগমনেচ্ছু কর্মীদের কাছ থেকে হাতিয়ে নিচ্ছে রিক্রুটিং এজেন্সিগুলো। সরকার সউদী গমনেচ্ছু কর্মীদের অভিবাসন ব্যয় নির্ধারণ করেছে জনপ্রতি ১ লাখ ৬৫ হাজার টাকা। মালয়েশিয়াগামী কর্মীদের অভিবাসন ব্যয় নির্ধারণ করা হয়েছে ৭৯ হাজার টাকা। কিন্ত রিক্রুটিং এজেন্সিগুলো সরকার নির্ধারিত অভিবাসন ব্যয়কে তোয়াক্কা না করে কর্মীদের কাছ থেকে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে। ফলে বিদেশে গিয়ে প্রবাসীরা দু’বছরেও তারা চড়া অভিবাসন ব্যয়ে টাকা তুলতে পারছে না। অদক্ষ কর্মীরা সউদী যেতে দালাল চক্রের হাত বদল হয়ে তিন থেকে চার লাখ টাকা ব্যয় করছে। সিন্ডিকেট চক্রের মাধ্যমে মালয়েশিয়ায় যেতে কর্মীরা বিভিন্ন দালালদের হাত বদল হয়ে চার লাখ টাকা থেকে পাঁচ লাখ টাকা দিতে বাধ্য হচ্ছে। একটি অসমর্থিত সূত্র জানায়, গুলশানের শীর্ষ ব্যবসায়ী গ্রুপের ৩৮টি সিন্ডিকেট সদস্যকে মালয়েশিয়া কর্তৃপক্ষ কালো তালিকাভুক্ত করেছে। এসব কালো তালিকাভুক্ত রিক্রুটিং এজেন্সিগুলো সামনে দেশটিতে কর্মী পাঠাতে পারবে কি না তা নিয়ে সংশয় দেখা দিচ্ছে। মালয়েশিয়ায় জনশক্তি রফতানিকারকরা এ অভিমত ব্যক্ত করেছেন। এসব এজেন্সির বিপরীতে নতুন ৩৮টি এজেন্সি দেশটিতে কর্মী প্রেরণে তালিকাভুক্ত হবার চেষ্টা চালাচ্ছে বলেও শোনা যাচ্ছে। ঋণ করে অভিবাসন ব্যয়ের টাকা যোগাতে হিমসিম খাচ্ছে বিদেশগমনেচ্ছুরা। ঋণের টাকা পরিশোধ করতে না পেরে অনেক প্রবাসীকর্মীর স্বজনরা বাড়ি-ঘর ছেড়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছে। বিশ্বের বিভিন্ন দেশে প্রায় সোয়া কোটি বাংলাদেশি কঠোর পরিশ্রম করে প্রচুর রেমিট্যান্স দেশে পাঠাচ্ছেন। এই বিপুল অংশের জনশক্তির মধ্যে অধিকাংশ কর্মীই অদক্ষ। প্রতি বছরই ৬ থেকে ৭ লাখ নারী পুরুষ বিদেশগমনেচ্ছু কর্মীদের ৯০% অদক্ষ হিসেবে বিদেশে যাচ্ছে। এসব কর্মীদের দক্ষ হিসেবে গড়ে তুলতে পারলে বিদেশের কর্মস্থলে দ্বিগুন মজুরি আয় করা সম্ভব হতো। অদক্ষ কর্মী বিদেশে যাওয়ায় দেশ বঞ্চিত হচ্ছে বিপুল পরিমাণ রেমিট্যান্স থেকে। দক্ষ জনশক্তি গড়ে তোলার লক্ষ্যে সরকারি উদ্যোগে বিএমইটির অধীনে সারাদেশে ১১০টি কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র (টিটিসি) চালু রয়েছে। এসব প্রত্যেক কেন্দ্র থেকে বছরে ১৫শ’ থেকে ২ হাজার যুবক বিভিন্ন ট্রেডে ৩ মাস থেকে ৪ মাসের কোর্সে প্রশিক্ষণ দিয়ে বের হচ্ছে। কিন্ত দীর্ঘদিন যাবৎ কোনো কোনো টিটিসিতে প্রায় ১৫ থেকে ২০ জন প্রশিক্ষকের পদশূন্য রয়েছে। ফলে টিটিসিগুলো থেকে আশানুরূপ দক্ষ জনবল বের হচ্ছে না।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বিভিন্ন টিটিসির প্রকল্পের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা রাজস্ব খাতে অন্তর্ভুক্ত হবার দাবিতে আদালতে মামলা দায়ের করেছিল। পরে আদালতের রায়ের ভিত্তিতে অনেকেই রাজস্যের আওতায় চাকরি লাভ করেছে। বিএমইটি কর্তৃপক্ষ বিভিন্ন টিটিসির প্রশিক্ষকের শূন্যপদে নিয়োগ প্রদানের অনুমোদনের জন্য পিএসসির কাছে প্রস্তাব পাঠিয়েছে। পিএসসি টিটিসিগুলোর শূন্যপদে নিয়োগ প্রক্রিয়া চূড়ান্ত করলে দক্ষ জনবল তৈরির পথ সুগম হবে।

দিনাজপুর কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের প্রিন্সিপাল মো. মাসুদ রানা জানান, তিন মাস ও চার মাসের প্রশিক্ষণ দিয়ে দক্ষতা অর্জন করে যুবকদের দেশে ও বিদেশে চাকরি লাভের সুযোগ করে দিচ্ছি। তিন দিনে প্রি-ডিপারচার ওরিয়েনটেশন কোর্স করানো হচ্ছে বিদেশগামীকর্মীদের। এক প্রশ্নের জবাবে প্রিন্সিপাল মাসুদ রানা বলেন, আমার টিটিসিতে ৬৭ জন প্রশিক্ষকের পদ রয়েছে। এর মধ্যে ৫০ জন প্রশিক্ষক রয়েছে। বাকি ১৭ জন প্রশিক্ষকের পদ দীর্ঘ দিন যাবৎ শূন্য থাকায় দক্ষকর্মী গড়ে তোলতে কষ্টকর হচ্ছে। প্রিন্সিপাল রানা বলেন, মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোতে দক্ষ কর্মীর চাহিদা দিন দিন বাড়ছে। রিসিভ কান্ট্রিগুলোতে দক্ষ কর্মী পাঠাতে পারলে অদক্ষ কর্মীর চেয়ে দ্বিগুন মজুরি আয় করতে পারবে বলেও তিনি উল্লেখ করেন। প্রতিটি উপজেলায় একটি করে কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র (টিটিসি) নির্মাণের কার্যক্রম চলমান রয়েছে। এসব টিটিসি চালু হলে কাক্সিক্ষত দক্ষকর্মীর সংখ্যা আরো বাড়বে বলেও তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন। বেশকিছু টিটিসিতে প্রশিক্ষকের পদ খালি থাকায় বিভিন্ন কোর্সে ভর্তিকৃত প্রশিক্ষণার্থীরা বিপাকে পড়েছেন। কোনো কোনো ট্রেডের প্রশিক্ষককে অন্যত্র বদলি করা হলেও ওই শূন্যপদে সংশ্লিষ্ট প্রশিক্ষক নিয়োগ দেয়া হয়নি। এতে টিটিসির কার্যক্রম চরমভাবে বিঘিœত হচ্ছে বলেও অভিযোগ উঠছে। এ ব্যাপারে বিএমইটির পরিচালক (প্রশিক্ষণ ও পরিচালনা ) প্রকৌশলী মো. সালাহ উদ্দিনের সাথে গতকাল একাধিকবার মোবাইলে যোগাযোগ করা হলে তিনি ফোন ধরেননি। বায়রার সাবেক ইসি সদস্য মোহাম্মদ আলী বলেন, মধ্যপ্রার্চ্যরে দেশগুলোতে অদক্ষকর্মীর চাহিদা অনেকটা কমে আসছে। দক্ষ জনবল তৈরিতে সরকারের টিটিসিগুলো আশানুরূপ ভূমিকা রাখতে পারছে না। সউদীসহ মধ্যপ্রাচ্যে দক্ষকর্মী পাঠিয়ে অন্যান্য দেশ রেমিট্যান্স আয়ে বেশি সাফল্য অর্জন করছে। দক্ষ জনশক্তি গড়ে তোলা সম্ভব হলে অভিবাসন ব্যয়ও কম লাগবে এবং রেমিট্যান্স আয়েও অভাবনীয় সাফল্য অর্জিত হবে ইনশাআল্লাহ।

 

https://dailyinqilab.com/national/article/589217