২৭ জুন ২০২৩, মঙ্গলবার, ৭:১৮

বর্ষার শুরুতেই পদ্মায় ভাঙন

রাজবাড়ীতে পদ্মা নদীর ভাঙনে প্রতি বছর বর্ষা মৌসুমে বিলিন হয় শত শত বিঘা ফসলী জমি। বসত ও ভিটেমাটি হারা হয় শত শত পরিবার। তাৎক্ষনিক জিওব্যাগ ফেলার কার্যক্রম পরিচালনা করে বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড (বাপাউবো)। গতকাল সোমবার সকালে সরেজমিনে নদী তীরের স্থানীয়রা বলেন, শুষ্ক মৌসুম শেষ হওয়ায় পদ্মা নদীর পানি বাড়তে শুরু করেছে। পাংশা উপজেলার বাহাদুরপুর, হাবাসপুর, কালুখালী উপজেলার কালিকাপুর, রতনদিয়া, রাজবাড়ী সদর উপজেলার মিজানপুর, চন্দনী, বরাট, গোয়ালন্দ উপজেলার ছোট ভাকলা, দেবগ্রাম, দৌলতদিয়াসহ ১০টি ইউনিয়নের বাসিন্দাদের এখন থেকেই ঘুম নেই। কারণ এ দশটি ইউনিয়নে প্রতি বছরই ভাঙন দেখা দেয়। কোন এলাকায় কম, আবার কোন এলাকায় বেশি।

কালুখালী উপজেলার রতনদিয়া ইউনিয়নের চররাজপুর গ্রামের নাহেরা বেগম, বৃষ্টি বেগম বলেন, এ এলাকায় সদ্য বিদায়ী রাষ্ট্রপতি আব্দুল হামিদ আসছিলেন। তিনি প্রস্তাবিত সেনানিবাস উদ্বোধন করেন। সে উদ্বোধনের নাম ফলক নদীতে ভেঙে গেছে। পদ্মায় পানি বৃদ্ধির সাথে সাথে ব্যাপক ভাবে ভাঙন শুরু হয়েছে। এসময় আসলেই ভাঙন আতঙ্কে রাত্রি যাপন করতে হয়। সরকারিভাবে এখানে সেনানিবাসের জন্য জমির সীমানা করেছেন। তাও ভেঙে যাচ্ছে। দ্রুত ভাঙন প্রতিরোধে ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানাচ্ছি।
সেনানিবাস এলাকার লস্করদিয়া নারায়নপুরের বাসিন্ধা রনি বেপারী, সালাম বেপারী বলেন, আমাদের সারা বছরই পদ্মা নদীর ভাঙন আতঙ্কে থাকতে হয়।

পানি বৃদ্ধি ও পানি কমার সময় ভেঙ্গে ফসলী জমি ও বসত ঘর নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যায়। প্রতি বছরই শুনে আসছি, ভাঙন প্রতিরোধে কাজ হবে, তা আলোর মুখ দেখছে না।

সেনানিবাসের কলসতলা এলাকার বাসিন্ধা কমেলা বেগম বলেন, ২ বার নদী ভাঙনের শিকার হয়ে কলসতলা এলাকায় বাড়ী করে বসবাস করছি। এ সব জায়গা সেনাবাহিনী তাদের সেনানিবাসের জন্য নিয়েছে। কয়েকদিন পানি বৃদ্ধির সাথে সাথে ব্যাপক ভাবে ভাঙন শুরু হয়েছে। আতঙ্কে কাটছে দিন-রাত। দ্রুত ভাঙন প্রতিরোধে ব্যবস্থা গ্রহণের দাবী জানাচ্ছি।

রতনদিয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মেহেদী হাছিনা পারভীন নিলুফা বলেন, প্রতি বছরই পানি বৃদ্ধি ও কমার সময় নদী ভাঙন শুরু হয়। এবারও সেনানিবাস এলাকায় ভাবে ভাঙন শুরু হয়েছে। দ্রুত ভাঙন প্রতিরোধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা প্রয়োজন। বিষয়টি নির্বাহী কর্মকর্তার মাধ্যমে উর্ধতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হয়েছে।

এ প্রসঙ্গে বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড (বাপাউবো)’র রাজবাড়ীর নির্বাহী প্রকৌশলী আব্দুল্লাহ আল-আমীন বলেন, পদ্মা নদীর গতি, স্রোত সবসময় পরিবর্তনশীল। নদীর তলদেশ সম্পর্কে জানা প্রয়োজন। এজন্য প্রচুর সময় ও অর্থের প্রয়োজন। শুষ্ক মৌসুমে কোন প্রকল্প নেই। তবে জরুরি ভিত্তিতে ভাঙনরোধে আমাদের কিছু প্রস্তুুতি থাকে। আমরা আমাদের সাধ্য মতো চেষ্টা করি। গত বছরও আমরা ভাঙনরোধে দিনরাত কাজ করেছি। নদী ভাঙন এলাকা চিন্তিত করে কাজ করার চিন্তা ভাবনা করা হচ্ছে।

https://dailyinqilab.com/inter-country/article/583986