২২ জুন ২০২৩, বৃহস্পতিবার, ১১:২৯

তিস্তার পানি আবারও বৃদ্ধি, দুর্ভোগে চরের মানুষ

পানি কমার একদিন অতিবাহিত না হতেই উজানে ঢল ও ভারী বৃষ্টিপাতের কারণে তিস্তা ব্যারাজ পয়েন্টে তিস্তা নদীর পানি আবারও বৃদ্ধি পেয়েছে। বুধবার সকাল থেকেই পানি বিপৎসীমা ছুঁই ছুঁই করছে। পানি নিয়ন্ত্রণে ব্যারাজের ৪৪টি গেট খুলে দিয়েছে কর্তৃপক্ষ। একদিন পর আবারও তিস্তার পানি হুহু করে বৃদ্ধি পাচ্ছে। এতে চর অঞ্চলের ৪ হাজার পরিবার ফের পানিবন্দী হয়ে পড়েছে।

বুধবার বিকেলে ৩টায় দেশের বৃহত্তম সেচ প্রকল্প তিস্তা ব্যারাজের পয়েন্টে তিস্তার পানিপ্রবাহ রেকর্ড করা হয়েছে ৫২ দশমিক ১০ সেন্টিমিটার, যা বিপৎসীমার দশমিক ৫ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। (স্বাভাবিক ৫২ দশমিক ১৫ সেন্টিমিটার)। ডালিয়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আসফাউদ্দৌলা বিপৎসীমার ৫ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
একদিন পর আবারও তিস্তার পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় লালমনিরহাটের ৫ উপজেলার নদীর তীরবর্তী নিম্নাঞ্চল ও চরের বসতবাড়িতে আবারও পানি উঠেছে। পানি বৃদ্ধির ফলে ভোগান্তিতে পড়েছে নদী পাড়ের মানুষ। রাস্তায় পানি ওঠায় চলাচলের ভোগান্তি সৃষ্টি হয়েছে।

জানা গেছে, তিস্তা ও ধরলার পানি বৃদ্ধিতে জেলার পাটগ্রামের দহগ্রাম, হাতীবান্ধার গড্ডিমারী, দোয়ানী, সানিয়াজান ইউনিয়নের নিজ শেখ সুন্দর, সিঙ্গামারি ইউনিয়নের ধুবনী, সিন্দুর্না, পাটিকাপাড়া, ডাউয়াবাড়ী, কালীগঞ্জ উপজেলার ভোটমারী, শৈইলমারী, নোহালী, চর বৈরাতি, আদিতমারী উপজেলার মহিষখোচা, পলাশী ও সদর উপজেলার ফলিমারীর চর খুনিয়াগাছ, রাজপুর, গোকুণ্ডা ইউনিয়নের তিস্তা নদীর তীরবর্তী নিম্নাঞ্চলে পানি প্রবেশ করায় প্রায় ৪ হাজার পরিবার পানিবন্দী হয়ে পড়ে।

গড্ডিমারী ইউনিয়নের ৬ নম্বর ওয়ার্ডের তালেব মিয়া বলেন, তিস্তার পানি বৃদ্ধির ফলে আমাদের এই বাঁধের রাস্তাটি হুমকির মুখে পড়ে। গতরাতে না ঘুমিয়ে জেগে ছিলাম কখন যে ভেঙে যায়। আমাদের দাবি, এই বাঁধটি যেন দ্রুত সংস্কার করা হয়।

গড্ডিমারী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আবু বক্কর সিদ্দিক শ্যামল বলেন, অত্র ইউনিয়নের পাঁচটি ওয়ার্ডে তিস্তার পানি বৃদ্ধি পেলে প্রায় দু’হাজার পরিবার পানিবন্দী হয়ে পড়ে। পরিবারগুলোর জন্য এখনো পর্যন্ত সরকারিভাবে সহযোগিতা পাওয়া হয়নি।

লালমনিরহাট পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী সুনীল কুমার বলেন, ভাঙন প্রবণ এলাকায় জিও ব্যাগ ফেলা হয়েছে। জরুরি পরিস্থিতি মোকাবিলায় আমরা প্রস্তুত রয়েছি।

লালমনিরহাট জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ উল্যাহ বলেন, তিস্তার পানি বেড়েছে। পরিস্থিতি মোকাবিলায় ৩০০ মেট্রিক টন চাল ও ৪ লাখ টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।

এদিকে, লালমনিরহাটের হাতীবান্ধা উপজেলার ফকিরপাড়া ইউনিয়নের সানিয়াজান নদী পার হতে গিয়ে স্কুলছাত্র রাজু (১৮) নিখোঁজ হয়েছেন। সে উপজেলার দালাল পাড়া গ্রামের নুর ইসলামের ছেলে।

https://www.bd-pratidin.com/country/2023/06/21/896505