১৭ জুন ২০২৩, শনিবার, ৬:৫৫

বাড়তি দামেই বিক্রি হচ্ছে মাছ-সবজি

মানবদেহে প্রোটিনের অন্যতম প্রধান উপকরণ মাছ। প্রতিনিয়তই বাড়ছে এই নিত্যপণ্যের দাম। বাজারে গরিবের ‘সস্তা মাছ’ হিসেবে পরিচিত তেলাপিয়া ও পাঙ্গাশের দামও বেড়েছে। এ দুই ধরনের মাছের দাম এখন প্রতি কেজি ২০০ টাকার ওপরে, যা কিছুদিন আগেও ১০০ টাকার একটু বেশি দামে পাওয়া যেত। এখন কোনো মাছই ২০০ টাকার কমে মিলছে না। একইভাবে বাড়তি দামেই বিক্রি হচ্ছে সব ধরনের সবজি। গতকাল শুক্রবার রাজধানীর বাজার ঘুরে এমন চিত্র দেখা গেছে।

গতকাল মাছের বাজারে গিয়ে দেখা গেছে, পাঙ্গাশ মাছ প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ২০০ থেকে ২২০ টাকায়, তেলাপিয়া ২২০ থেকে ২৫০ টাকা, চাষের কই ২৮০ থেকে ৩০০ টাকা, পাবদা ৪০০ থেকে ৪৫০ টাকা, শিং মাছ (ছোট) প্রতি কেজি ৪২০ থেকে ৪৫০ টাকা, গুঁড়া মাছ (কাচকি) ৪০০ থেকে ৪২০ টাকা, বোয়াল ৬০০ থেকে ৬৫০ টাকা, ট্যাংরা ৫৫০ থেকে ৬৫০ টাকা, রুই মাছ প্রতি কেজি ৩২০ থেকে ৩৫০ টাকা, সিলভার কার্ভ (ছোট) ২৫০ থেকে ২৮০ টাকা, বড় কাতল প্রতি কেজি ৩৮০ থেকে ৪০০ টাকা, চিংড়ি প্রতি কেজি ৬৮০ থেকে ৭০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

ক্রেতারা বলছেন, বাজারে প্রতিটি পণ্যের দাম বাড়লে আবার কমে আসে। কিন্তু এক্ষেত্রে ব্যতিক্রম হচ্ছে মাছের বাজারে। মাছে দাম বাড়লেও আর কমার নাম নেই। বেশ কিছুদিন ধরেই বাড়তি দামে বিক্রি হচ্ছে সব ধরনের মাছ।

ব্যবসায়ীরা বলছেন, বাজারে সব ধরনের মাছের দাম বাড়তি যাচ্ছে। মাছের খাবারের দাম বাড়ার পর থেকে মাছের দামও বেড়েছে। এ ছাড়া পরিবহন খরচও এখন বাড়তি। সব মিলিয়ে পাইকারি আড়ত থেকেই আমাদের আগের চেয়ে বাড়তি দামে মাছ কিনতে হচ্ছে। যার প্রভাব খুচরা বাজারগুলোতেও পড়েছে।

সবজির বাজার ঘুরে দেখা গেছে, গতকাল পটোল কেজি ৫০ থেকে ৬০ টাকা, ঢেঁড়স ৪০ টাকা, কাঁচামরিচ ১২০ টাকা, বেগুন ৫০ থেকে ৬০ টাকা, টমেটো ৫০ থেকে ৬০ টাকা, শসা ৪০ থেকে ৫০ টাকা, করলা ৫০ থেকে ৬০ টাকা, বরবটি ৬০ থেকে ৭০ টাকা, পেঁপে ৪০ থেকে ৫০ টাকা, চালকুমড়া প্রতিটি ৪০ থেকে ৫০ টাকা, কাঁকরোল কেজি ৫০ থেকে ৬০ টাকা, ঝিঙ্গা ৬০ টাকা, চিচিঙ্গা ৫০ টাকা ও কচুরমুখী ৬০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

এ দিকে গত ১১ জুন বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সয়াবিন তেলের দাম লিটারে ১০ টাকা কমিয়ে ১৮৯ টাকা নির্ধারণ করেছে। খুচরা বাজারে নতুন দামের বোতলজাত সয়াবিন না আসায় আগের দামেই বিক্রি হচ্ছে তেল। ক্রেতারা বলছেন, যখন কোনো পণ্যের দাম বাড়ানো হয়, তখন সাথে সাথে বাজারে বাড়তি দামে বিক্রি করা হয়।

বাজারে দেশী রসুন কেজি ১৪০ থেকে ১৫০ এবং আমদানি রসুন ১৫০ থেকে ১৬০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে। দেশী ও আমদানি করা কেরালা জাতের আদা মানভেদে বিক্রি হচ্ছে ৩২০ থেকে ৩৮০ টাকা কেজি। চীনের বড় আদার সরবরাহ না থাকায় এখনো ৪৫০ থেকে ৫০০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে।

ব্রয়লার মুরগি ও ডিমের বাজার অনেকটা অপরিবর্তিত। ব্রয়লার মুরগির কেজি বিক্রি হচ্ছে ২০০ টাকা। সোনালি মুরগি কেজি বিক্রি হচ্ছে ২৭০ থেকে ২৮০ টাকা। ফার্মের মুরগির ডিমের ডজন ১৪৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। পাড়া-মহল্লার দোকানগুলোতে ডজন বিক্রি হচ্ছে ১৫০ টাকায়।

বাজারে দেশী পেঁয়াজের তুলনায় আমদানি পেঁয়াজের দাম কম। এ জন্য ক্রেতারা আমদানি পেঁয়াজ বেশি কিনছেন। খুচরায় ভালো মানের ভারতীয় পেঁয়াজ ৫০ থেকে ৬০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে। আগের সপ্তাহের চেয়ে কেজিতে ২০ থেকে ২৫ টাকা কমে দেশী পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৭০ থেকে ৭৫ টাকায়। পেঁয়াজের আমদানি বাড়লে দাম আরো কমবে বলে ব্যবসায়ীরা জানান।

ব্যবসায়ীরা জানান, ভারতে পেঁয়াজ বাজারে আসার কারণে দাম ক্রেতার নাগালে চলে এসেছে। তা না হলে এখন ক্রেতাদের ১০০ টাকার বেশি দামে কিনতে হতো। এখন প্রতিদিনই বাজারে ভারতের পেঁয়াজ ঢুকছে, সামনে পেঁয়াজের দাম আরো কমে আসবে। ঈদের আগেই আমদানি পেঁয়াজের কেজি ৫০ টাকার নিচে চলে আসবে।

https://www.dailynayadiganta.com/first-page/756050