১৬ জুন ২০২৩, শুক্রবার, ২:৫৯

আবারও ডলারের বিপরীতে টাকার মানের রেকর্ড পতন

দেশের বাজারে ডলারের সংকট চলছে। আবারও বাড়লো ডলারের দাম। ফলে টাকার বিপরীতে শক্তিশালী হচ্ছে ডলার। দুর্বল হচ্ছে টাকার মান। এমন পরিস্থিতিতে চাহিদা বেশি থাকায় ঘন ঘন বাড়ছে ডলারের দাম। এক বছরের ব্যবধানে ডলারের বিপরীতে টাকার দাম কমেছে ১৪ দশমিক ৮৬ শতাংশ বা ১৬ টাকা ২০ পয়সা।

সবশেষ তথ্য অনুযায়ী, আন্তঃব্যাংক লেনদেনে ডলারের দাম বেড়ে ১০৯ টাকায় উঠেছে। দেশের ইতিহাসে ডলারের এই বিনিময় হার এযাবতকালের সর্বোচ্চ মূল্য। এর আগে চলতি বছরের মে মাসে ১০৮ টাকা ৭৫ পয়সায় উঠেছিল। বুধবার এ দামে ব্যাংকগুলো লেনদেন করেছে। গতকাল বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ ব্যাংক সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।

নিজেদের চাহিদা মেটাতে একটি বাণিজ্যিক ব্যাংক কখনো বাংলাদেশ ব্যাংক আবার কখনো অন্য ব্যাংক থেকে ডলার কিনে। যাকে বলা হয় আন্তব্যাংক ডলার লেনদেন। যখন চাহিদা বেশি থাকে তখন বাড়ে বৈদেশিক মুদ্রার দাম।

বাংলাদেশ ব্যাংকের সবশেষ তথ্য অনুযায়ী, সোমবার ব্যাংকগুলো নিজেদের মধ্যে ডলারের লেনদেন করেছে ১০৮ টাকা ৩ পয়সা থেকে ১০৯ টাকায়। এক বছর আগে আন্তঃব্যাংক লেনদেনে ডলারের দাম ছিল ৯২ টাকা ৮০ পয়সা। অর্থাৎ এক বছরের ব্যবধানে ডলারের বিপরীতে টাকার দাম কমেছে ১৪ দশমিক ৮৬ শতাংশ বা ১৬ টাকা ২০ পয়সা। তথ্য বিশ্লেষণে দেখা গেছে, চলতি জুন মাসে প্রায় প্রতিটি কার্যদিবসেই আন্তঃব্যাংক লেনদেনে ডলারের বিনিময় হার বেড়েছে। গত ১ জুন প্রতি ডলারের দাম ছিল ১০৮ টাকা।

খাত সংশ্লিষ্টরা বলছেন, ডলারের বিপরীতে টাকার দাম কমার অন্যতম কারণ আমদানি ব্যয় বাড়ছে। কিন্তু এর বিপরীতে রপ্তানি আয় এবং রেমিট্যান্সে তেমন গতি নেই। এদিকে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ শুরুর পর গত বছরের মার্চ থেকে দেশে ডলার-সংকট প্রকট আকার ধারণ করে। এ সংকট মোকাবিলায় শুরুতে ডলারের দাম বেঁধে দেয় বাংলাদেশ ব্যাংক। কিন্তু এতে সংকট আরও বেড়ে যায়। পরে গত সেপ্টেম্বরে বাংলাদেশ ব্যাংক ডলারের দাম নির্ধারণের দায়িত্ব থেকে সরে দাঁড়ায়। এ দায়িত্ব দেওয়া হয় এবিবি ও বাফেদার ওপর। এরপর থেকে এই দুই সংগঠন মিলে রপ্তানি ও প্রবাসী আয় এবং আমদানি দায় পরিশোধের ক্ষেত্রে ডলারের দাম নির্ধারণ করে আসছে।

সবশেষ সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, চলতি জুন মাসে রেমিট্যান্স ও রপ্তানি আয়ে ডলারের দাম বাড়িয়ে পুনঃনির্ধারণ করা হয়। এখন বৈধ পথে রেমিট্যান্স পাঠালে প্রতি ডলারে পাচ্ছেন ১০৮ টাকা ৫০ পয়সা। সরকারের আড়াই শতাংশ প্রণোদনাসহ প্রবাসী আয়ে মিলবে ১১১ টাকা। আর রপ্তানিকারকরা প্রতি ডলারের বিপরীতে পাবে ১০৭ টাকা। এতদিন রেমিট্যান্সের ডলারের দাম ছিল ১০৮ টাকা এবং রপ্তানি আয়ে ছিল ১০৬ টাকা।

বৃহস্পতিবার কার্ব মার্কেট বা খোলা বাজারে নগদ এক ডলার কিনতে গ্রাহকদের গুণতে হয়েছে ১১১ টাকা ৭০ পয়সা। আর বিক্রি করে পেয়েছেন ১১১ টাকা ৩০ পয়সা।

https://dailysangram.info/post/527611