৯ জুন ২০২৩, শুক্রবার, ৮:১০

পানি সঙ্কট রাজধানীর অর্ধেক এলাকাতেই

-প্রয়োজনে ৮ ঘণ্টা পানি বন্ধ রেখে রেশনিং

লোডশেডিংয়ের কারণে ঢাকায় ওয়াসার ১০টি জোনের মধ্যে পাঁচটি জোনেই পানি সরবরাহে সঙ্কট হচ্ছে বলে জানিয়েছেন ওয়াসার ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) তাকসিম এ খান। একই সাথে সঙ্কট কাটাতে মানুষকে পানি কম ব্যবহারের পরামর্শ দিয়েছেন তিনি।
গতকাল কারওয়ানবাজারে ওয়াসা ভবনে চলমান পানি সঙ্কট নিয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন। এদিকে সংবাদ সম্মেলনে অনেক পত্রিকা ও টেলিভিশনের প্রতিনিধিকে ঢুকতে দেয়া হয়নি বলে জানা গেছে। এ ঘটনায় তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে নগর উন্নয়ন সাংবাদিক ফোরাম। সংবাদ সম্মেলনে তাকসিম এ খান বলেন, আমাদের ১০টি মডস জোনের মধ্যে ৫টিতে পানি সরবরাহ স্বাভাবিক আছে। বাকি ৫টি জোনে সমস্যা হচ্ছে। বিদ্যুৎ নিয়মিত না পাওয়ার কারণে পাম্প চালাতে পারছে না ঢাকা ওয়াসা। ফলে ডিপ টিউবওয়েল থেকে পানি উত্তোলন করা সম্ভব হচ্ছে না। এর মধ্যে বসুন্ধরা এলাকার পানি সমস্যা আজ শুক্রবারের মধ্যে সমাধান হয়ে যাবে বলে জানান তিনি।

সঙ্কট কাটাতে ঢাকাবাসীকে পানি কম ব্যবহারের পরামর্শ দিয়ে ওয়াসার এমডি বলেন, এই সঙ্কটের সময় রানিং পানি ব্যবহার না করে, পাত্রে নিয়ে পানি ব্যবহার করুন। এ ছাড়া সঙ্কট বাড়লে প্রয়োজনে রেশনিংয়ের মাধ্যমে কোনো এলাকায় ৮ ঘণ্টা পানি বন্ধ রেখে অন্য এলাকায় দেয়া হবে।

ঢাকা ওয়াসার এমডি জানান, যেসব এলাকায় পানির সমস্যা হচ্ছে, সেখানে ওয়াসার গাড়ির মাধ্যমে পানি সরবরাহ করা হচ্ছে। এ কাজে ঢাকা ওয়াসার ৪৮টি পানির গাড়ি কাজ করছে। ছোট রাস্তার জন্য ১৭টি ট্রলি গাড়ির মাধ্যমে পানি সরবরাহ করা হচ্ছে। তবে বিদ্যুৎ বিভ্রাটের জন্য গাড়িতেও পানি ভরতে সমস্যা হচ্ছে বলে জানান তাকসিম এ খান। তিনি জানান, বিদ্যুৎ সমস্যার কারণে প্রতিদিন ৪০ থেকে ৫০ কোটি লিটার পানি উৎপাদন ব্যাহত হচ্ছে।

ওয়াসা ভবনে সাংবাদিকের প্রবেশে বাধায় ইউডিজেএফবি’র নিন্দা : ঢাকা ওয়াসা ভবনে বিভিন্ন প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার সাংবাদিকদের প্রবেশে বাধা দেয়ার ঘটনায় তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে নগর উন্নয়ন সাংবাদিক ফোরাম বাংলাদেশ (ইউডিজেএফবি)।

গতকাল সংগঠনের সভাপতি অমিতোষ পাল ও সাধারণ সম্পাদক সোহেল মামুন এক বিবৃতিতে বলেন, কোনো প্রতিষ্ঠানের সংবাদ সংগ্রহ এবং সংবাদ সম্মেলন কাভারের অধিকার সব সাংবাদিকেরই রয়েছে। কিন্তু ঢাকা ওয়াসার ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) প্রকৌশলী তাকসিম এ খান বরাবরই পেশাদার সাংবাদিকদের এড়িয়ে বিভিন্ন সভা-সেমিনার করে থাকেন। অনেক সংবাদ সম্মেলনই সাংবাদিকদের জানানো হয় না। পছন্দের দু’চারজনকে নিয়ে এসব সংবাদ সম্মেলন করে থাকেন। বৃহস্পতিবারও এর ব্যতিক্রম ঘটেনি। এ দিন ওয়াসার এমডির পূর্ব নির্ধারিত সংবাদ সম্মেলন কাভার করতে গেলে বিশেষ তালিকায় নাম থাকা কয়েকজন সাংবাদিক ছাড়া অন্যদের কাউকেই ঢুকতে দেয়া হয়নি। এ সময় কর্মচারীরা জানান, এই তালিকার বাইরে কাউকে ঢুকতে দিতে কর্মকর্তারা নিষেধ করেছেন।

বিষয়টি নিয়ে বিবৃতিতে ইউডিজেএফবি’র নেতৃদ্বয় বলেন, একটি সরকারি সংস্থার সংবাদ সম্মেলন কাভার করতে যাওয়া সাংবাদিকদের গেট থেকে ফিরিয়ে দেয়া স্বাধীন সাংবাদিকতার জন্য হুমকি। পেশাগত দায়িত্ব পালনে বাধা দেয়ার শামিল। এর মাধ্যমে ঢাকা ওয়াসা এবং এমডি তাকসিম এ খানের বিরুদ্ধে যেসব অভিযোগ উঠেছে তা আরো ঘনীভূত হচ্ছে। তাদের এমন আচরণে সাংবাদিক সমাজ ক্ষুব্ধ। বিবৃতিতে নেতারা ভবিষ্যতে সাংবাদিকদের পেশাগত দায়িত্ব পালনে বাধা না দেয়ার আহ্বান জানান।

উল্লেখ্য, এর আগেও পেশাদার গণমাধ্যমের বড় একটি অংশকে পাশ কাটিয়ে সংবাদ সম্মেলন করেছেন ঢাকা ওয়াসার এমডি তাকসিম এ খান।

https://www.dailynayadiganta.com/first-page/754107