৭ জুন ২০২৩, বুধবার, ৯:০৮

হোয়াইট হাউজের প্রেস ব্রিফিং

বাংলাদেশে সুষ্ঠু নির্বাচনের পক্ষে যুক্তরাষ্ট্র অবিচল

মার্কিন জাতীয় নিরাপত্তা কাউন্সিলের স্ট্র্যাটেজিক কমিউনিকেশন পরিচালক অ্যাডমিরাল জন কিরবি বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্র বরাবরই বাংলাদেশে অবাধ এবং সুষ্ঠু নির্বাচনের পক্ষে অবিচল রয়েছে। এই অবস্থান স্পষ্ট করতেই বাংলাদেশের জাতীয় নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু এবং শান্তিপূর্ণভাবে আয়োজন করতে সম্প্রতি স্টেট ডিপার্টমেন্ট (যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দফতর) গণতান্ত্রিক নির্বাচন প্রক্রিয়ায় বাধাদানকারীদের বিরুদ্ধে নতুন ভিসানীতি ঘোষণা করেছে।

গতকাল ওয়াশিংটনে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্টের কার্যালয় হোয়াইট হাউজে আয়োজিত প্রেস ব্রিফিংয়ে এক প্রশ্নের জবাবে কিরবি এ সব কথা বলেন। তাকে প্রশ্ন করা হয়েছিল, বাংলাদেশ সরকারের কর্তৃক মানবাধিকার লঙ্ঘন বন্ধে জরুরি পদক্ষেপ নিতে প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনকে চিঠি দিয়েছেন ছয়জন কংগ্রেসম্যান। ওই চিঠিতে বাংলাদেশের জনগণকে অবাধ ও সুষ্ঠু সংসদ নির্বাচনের জন্য সম্ভাব্য সর্বোত্তম সুযোগ নিশ্চিত করার কথা বলা হয়েছে। প্রেসিডেন্টের কাছে সম্প্রতি মার্কিন আইন প্রণেতাদের লেখা চিঠি সম্পর্কে আপনার প্রতিক্রিয়া কী?

জবাবে কিরবি বলেন, আমরা আমাদের অবস্থানে অবিচল রয়েছি। এই চিঠি পাঠানোর বিষয়ে আমি অবগত। যুক্তরাষ্ট্র বরাবরই বাংলাদেশে অবাধ এবং সুষ্ঠু নির্বাচনের পক্ষে অবিচল রয়েছে। এই অবস্থান স্পষ্ট করতেই সম্প্রতি স্টেট ডিপার্টমেন্ট বাংলাদেশের জাতীয় নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু এবং শান্তিপূর্ণভাবে আয়োজন করতে গণতান্ত্রিক নির্বাচন প্রক্রিয়ায় বাধাদানকারীদের বিরুদ্ধে নতুন ভিসানীতি ঘোষণা করেছে।

বাংলাদেশকে অবাধ নির্বাচনের সুযোগ করে দেয়ার জন্য কঠোর ব্যক্তিগত নিষেধাজ্ঞা, আইন প্রয়োগকারী সংস্থা এবং সামরিক বাহিনীর সদস্যদের জাতিসঙ্ঘ শান্তিরক্ষা মিশনে অংশগ্রহণ নিষিদ্ধ করাসহ যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণের অনুরোধ জানিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনকে গত ২৫ মে চিঠি লিখেছেন কংগ্রেসম্যান বব গুড, কংগ্রেসম্যান স্কট পেরি, ব্যারি মুর, টিম বারচেট, ওয়ারেন ডেভিডসন এবং কিথ সেল্ফ। ছয় কংগ্রেসম্যানই যুক্তরাষ্ট্রের বিরোধী দল রিপাবলিকান পার্টির সদস্য।

এ দিকে ওয়াশিংটনে মার্কিন পররাষ্ট্র দফতরে নিয়মিত সংবাদ সম্মেলনে এক সাংবাদিক জানতে চান, মার্কিন নতুন ভিসানীতি নিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্রের এসব বিধি-নিষেধ বা নিষেধাজ্ঞায় তার কোনো মাথাব্যথা নেই। তাই আপনি কিভাবে বিশ্বাস করছেন যে শেখ হাসিনা বিশ্বাসযোগ্য ও নিরপেক্ষ নির্বাচন দেবেন?

জবাবে মার্কিন পররাষ্ট্র দফরের মুখ্য উপ-মুখপাত্র বেদান্ত প্যাটেল বলেন, যুক্তরাষ্ট্র বিশ্বের সর্বত্র গণতন্ত্র এবং অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনকে উৎসাহিত করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। বাংলাদেশ সরকার, রাজনৈতিক দল, নাগরিক সমাজ ও গণমাধ্যম সবাই যাতে আসন্ন জাতীয় নির্বাচন সুষ্ঠু, অবাধ ও শান্তিপূর্ণভাবে অনুষ্ঠিত হয়- সেই ইচ্ছা ব্যক্ত করেছে। এর সমর্থনে বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক নির্বাচন প্রক্রিয়াকে বাধাগ্রস্ত করার জন্য দায়ী বা অবৈধ কাজে সহযোগীদের ভিসা বিধি-নিষেধ আরোপ করার সুযোগ রেখে কয়েক সপ্তাহ আগে যুক্তরাষ্ট্র নতুন নীতি ঘোষণা করেছে। বাংলাদেশের বর্তমান ও সাবেক সরকারি কর্মকর্তা, ক্ষমতাসীন বা বিরোধ রাজনৈতিক দলের সদস্য এবং অন্য যে কেউ যারা দায়ী বলে বিশ্বাস করা হবে, তারা এই বিধি-নিষেধের আওতায় পড়বে।

প্রেসিডেন্ট বাইডেনকে লেখা ছয় কংগ্রেসম্যানের চিঠি বাংলাদেশের সাথে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কে কোনো প্রভাব ফেলবে কি না জানতে চাওয়া হলে প্যাটেল বলেন, অবশ্যই। শুধু বাংলাদেশ নয়, যে কোনো দেশের সাথে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের ক্ষেত্রে আমরা কংগ্রেসে আমাদের অংশীদারদের সাথে কথা বলি, তাদের মতামত জানতে চাই। এই নির্দিষ্ট চিঠির ব্যাপারে আমি কোনো কথা বা মন্তব্য করতে চাই না। কংগ্রেসের সাথে পত্রবিনিময় গোপন রাখা হয়। তবে মোটা দাগে বলা যায়, গত বছর আমরা বাংলাদেশের সাথে সম্পর্কের ৫০ বছর পূর্তি উদযাপন করেছি। আমরা জ্বালানি, জলবায়ু পরিবর্তন, অর্থনীতিসহ বিস্তৃত ক্ষেত্রে বাংলাদেশের সাথে সম্পর্ক গভীর করতে চাই। তিনি বলেন, বিশ্বব্যাপী সব ধর্ম ও বিশ্বাসের মানুষদের মত প্রকাশের অধিকারকে সমুন্নত রাখতে আমরা কাজ করে যাব।

https://www.dailynayadiganta.com/first-page/753625