২৪ মে ২০২৩, বুধবার, ১১:৩৮

সৌদি আরবে নানা বিড়ম্বনায় হজযাত্রীরা

দেশে সময়মতো ভিসা না হওয়া, টিকিট কাটায় ভোগান্তিসহ নানা সমস্যার পর সৌদি পৌঁছেও বিড়ম্বনার শিকার হচ্ছেন বাংলাদেশের হজযাত্রীরা। হজে যাওয়ার আগে হজযাত্রীদের এক হোটেলের কথা বলা হলেও সৌদিতে যাওয়ার পর ওঠানো হচ্ছে আরেক হোটেলে। এতে দীর্ঘ ভ্রমণের পরও নতুন করে ভোগান্তির শিকার হতে হচ্ছে বাংলাদেশী হজযাত্রীদের। বিষয়টি নজরে আসায় আটটি হজ এজেন্সিকে শোকজ করেছে ধর্ম মন্ত্রণালয়।

হজযাত্রার প্রথম দিনেই গত ২১ মে সময়মতো ভিসা না হওয়ায় ১৪০ জন হজযাত্রী সঠিক সময়ে হজে যেতে পারেননি। পরদিন ভিসা হওয়ার পর তারা জেদ্দার উদ্দেশে রওনা হন। এ ছাড়া হজক্যাম্পে স্থাপিত বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের কাউন্টার থেকে টিকিট কিনতে চরম বিড়ম্বনায় পড়তে হচ্ছে এজেন্সি মালিক ও হজযাত্রীদের। এসব ছাড়াও হজযাত্রীদের বাংলাদেশ অংশ ও সৌদি অংশের ইমিগ্রেশন বাংলাদেশেই অনুষ্ঠিত হওয়ায় প্রায় আট ঘণ্টা লাইনে দাঁড়াতে হচ্ছে। এরপর আরো আট ঘণ্টা বিমান ভ্রমণের পর সৌদি পৌঁছে ইমিগ্রেশন জটিলতা না থাকায় তাদের সরাসরি ভাড়া করা হোটেলে চলে যাওয়ার কথা। এমনকি তাদের লাগেজও ওই হোটেলে সরকারি ব্যবস্থাপনায় পৌঁছে যাওয়ার কথা। কিন্তু প্রথম দিন দেশের নানা জটিলতা পেরিয়ে সৌদি পৌঁছেও আটটি হজ এজেন্সির ব্যাপক হজযাত্রী বিড়ন্বনায় পড়েন।

জানা যায়, ওই হজ এজেন্সিগুলো ভিসা আবেদনের সময় হাজীদের যেসব হোটেলের ঠিকানা দিয়েছিল সেখানে উঠায়নি। শুধু তা-ই নয়, তাদের কোনো গাইড ছিল না। এসব অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে ৮ হজ এজেন্সিকে কারণ দর্শানো নোটিশ (শোকজ) দিয়েছে ধর্ম মন্ত্রণালয়। গত সোমবার ধর্ম মন্ত্রণালয়ের হজ অনুবিভাগের উপসচিব আবুল কাশেম মুহাম্মদ শাহীন স্বাক্ষর করা এক চিঠিতে তাদের আগামী তিন দিনের মধ্যে জবাব দিতে বলা হয়েছে। হজযাত্রীদের সাথে প্রতারণা করা এজেন্সিগুলো হলো, আল কাসেম ট্রাভেলস অ্যান্ড ট্যুরস, ইউরো বেঙ্গল ট্রাভেলস অ্যান্ড ট্যুরিজম, ইউরোপা ট্রাভেলস, কেআই ট্রাভেলস, এল আর ট্রাভেলস, এন জেড ফাউন্ডেশন অ্যান্ড হজ মিশন, সাকের ট্যুরস অ্যান্ড ট্রাভেলস এবং সঞ্জরি ট্রাভেলস অ্যান্ড ট্যুরস এজেন্সি। শোকজে বলা হয়, গত ২১ মে বিজি ৩০০৫ নম্বর ফ্লাইটে আটটি এজেন্সির হজযাত্রী মক্কায় পাঠানো হয়। এসব এজেন্সি হজযাত্রীদের ভিসা যে হোটেলের ঠিকানায় করা হয়েছে সে হোটেলে তাদের না উঠিয়ে মক্কার বিভিন্ন ফিতরা করা হোটেলে তাদের উঠানো হয়। মক্কার এ সব হোটেলে হজযাত্রীদের রিসিভ করার জন্য এজেন্সির কোনো প্রতিনিধি উপস্থিত ছিলেন না। ফলে হজযাত্রীরা তাদের জন্য নির্ধারিত হোটেল খুঁজে পেতে সমস্যায় পড়েন। ভিসা অনুসারে হোটেল না হওয়ায় তাদের লাগেজ হোটেলে পৌঁছতে সমস্যা হয়। পরে হজ মিশনের চেষ্টায় বিষয়টি সমাধান হলেও এটি বিব্রতকর অবস্থার সৃষ্টি করে। চিঠিতে বলা হয়, এ ধরনের অনিয়ম ও অব্যবস্থাপনা হজ ও ওমরাহ ব্যবস্থাপনা আইন, ২০২১-এর ১২ ধারা অনুযায়ী প্রশাসনিক ব্যবস্থা নেয়ার বিধান রয়েছে। তাই এজেন্সির বিরুদ্ধে কেন প্রশাসনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে না তার জবাব আগামী তিন দিনের মধ্যে ধর্ম মন্ত্রণালয়ে দিতে হবে। ওই আট এজেন্সিকে শোকজের পর এই ঘটনার পুনরাবৃত্তি যেন না ঘটে সে কারণে আরেক চিঠিতে ভিসা করা হোটেলের পরিবর্তে অন্য হোটেলে হজযাত্রী উঠানোর ক্ষেত্রে এজেন্সির প্রতিনিধি উপস্থিত থাকার জন্য নির্দেশনা দিয়েছে মন্ত্রণালয়।

https://www.dailynayadiganta.com/first-page/750233