১৯ মে ২০২৩, শুক্রবার, ২:৪৩

প্রশ্নবিদ্ধ গবেষণা ও জাতির গন্তব্য

-ইবনে নূরুল হুদা

কোন জাতির আগামীর কর্মপন্থা নির্ধারণের জন্য জ্ঞান, প্রজ্ঞা ও গবেষণাভিত্তিক দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা গ্রহণ করা প্রয়োজন হয়। আর এজন্য প্রয়োজন হয় উচ্চতর গবেষণা। গবেষকরা তাদের লব্ধ জ্ঞান, প্রজ্ঞা, অভিজ্ঞতা ও অনুসন্ধান দিয়ে জাতিকে দিকনির্দেশনা দেন তাদের অভিসন্দর্ভের মাধ্যমে। কিন্তু আমাদের দেশের প্রেক্ষাপটে যেমন উচ্চতর গবেষণার ক্ষেত্রে নানাবিধ প্রতিবন্ধকতা, সীমাবদ্ধতা রয়েছে; ঠিক তেমনিভাবে বিভিন্ন অনিয়ম ও ক্ষেত্রবিশেষে চৌর্যবৃত্তির অভিযোগও বেশ জোরালো। ফলে একদিকে যেমন গবেষকরা গবেষণার জন্য অনুকুল পরিবেশ, পর্যাপ্ত সুযোগ-সুবিধা ও সহযোগিতা পাচ্ছেন না, ঠিক তেমনিভাবে অসাধু ও অসৎপ্রবণ লোকেরা গবেষণার ক্ষেত্রে শঠতার আশ্রয় নিয়ে দেশ ও জাতিকে রীতিমত বিভ্রান্ত করছেন। এমনকি একশ্রেণির বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকের মধ্যেও এই প্রবণতা আশঙ্কাজনকভাবে বেড়েছে। ফলে দেশে গবেষণা থাকলেও এ থেকে আমরা খুব কমই উপকৃত হচ্ছি।

মূলত, একটা দেশের সামগ্রিক উন্নয়নে উচ্চতর তথা পিএইচডি গবেষণার আবশ্যকতার বিষয়টি অনস্বীকার্য। উন্নত অনেক দেশেই পিএইচডি গবেষণা প্রতিবেদন গ্রহণ করা হয় সরকারিভাবে। তা থেকে দেশের উন্নয়ন ও অগ্রগতির কাজে লাগানো হয় এবং আগামীর জন্য দেয়া হয় প্রয়োজনীয় দিকনির্দেশনা। কিন্তু বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে বিষয়টি প্রতীকী অর্থেই ব্যবহার হচ্ছে- মনে করেন সংশ্লিষ্টরা। বস্তুত, পিএইচডি স্বীকৃত বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্বোচ্চ একাডেমিক ডিগ্রি। সর্বোপরি শিক্ষক, গবেষক ও স্কলারদের জীবনের শ্রেষ্ঠ অর্জন ও সাফল্য। আর এই ডিগ্রি অর্জনের জন্য বেশ কয়েকটি ধাপ অতিক্রম করতে হয় গবেষকদের। এর মধ্যে অন্যতম গবেষণা তত্ত্বাবধায়ক ও বহিঃপরীক্ষক নিয়োগ, এলিজেবিলিটি টেস্ট, কোর্স ওয়ার্ক, একাডেমিক সেমিনার। আন্তর্জাতিক মানের লেখনীর পরই অর্জিত হয় এই ডিগ্রি। উচ্চতর পর্যায়ে কষ্টসাধ্য এই ধাপগুলো উত্তরণের জন্য করতে হয় কঠোর পরিশ্রম ও নিরবচ্ছিন্ন অধ্যবসায়। কিন্তু অধিকাংশ ক্ষেত্রেই উল্টো চিত্র দেখা যায় আমাদের দেশে। কারণ, আমাদের দেশে উল্লেখযোগ্য ক্ষেত্রে গবেষণা অনেকটা দায়সারা গোছের। আবার কোন কোন ক্ষেত্রে রয়েছে বড় ধরনের চৌর্যবৃত্তির অভিযোগও। ফলে গবেষণার অভিসন্দর্ভ থেকে আমরা কাক্সিক্ষত ফল লাভ করতে পারছি না এবং গবেষণাপত্রগুলো আমাদের করণীয় নির্ধারণে পুরোপুরি সহায়ক হচ্ছে না।

আমাদের দেশের প্রচলিত রেওয়াজ অনুযায়ী শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ডক্টরেট ডিগ্রি অত্যাবশ্যকীয় অনুষঙ্গ। আর তা কোন কোন ক্ষেত্রে পদোন্নতির জন্য অপরিহার্যও। এমপিওভুক্ত কলেজের শিক্ষকদের জন্য পিএইচডি ডিগ্রি অর্জনের মাধ্যমে অধিক বেতন প্রদান করা হয়। আবার জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন নিয়ম অনুযায়ী সহযোগী অধ্যাপকের জন্য পিএইচডি ডিগ্রি বাধ্যতামূলক করা হয়েছে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের জন্য পিএইচডি ডিগ্রি পদোন্নতির পূর্বশর্ত। পিএইচডি ডিগ্রিধারী কেউ পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ পেলে তিনি ৩টি অগ্রিম বেতন বৃদ্ধির সুবিধা পেয়ে থাকেন। আবার ডক্টরেট ডিগ্রি অর্জন সম্মানের সঙ্গে বিবেচনা করায় অনেক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাও এদিকে ঝুঁকছেন। তবে শিক্ষাবিদরা বলছেন, পিএইচডি ডিগ্রিধারীদের এসব সুবিধা মেলার কারণেই নানা ধরনের দুর্নীতি ও অনিয়ম শুরু হয়েছে। ফলে নামকাওয়াস্তে বা যেনতেনভাবে প্রতিবেদন দিয়েই সেরে ফেলছেন তাদের পিএইচডি ডিগ্রি। আর পিএইচডি ডিগ্রি নিয়ে জালজালিয়াতি ও দুর্নীতির খবর নতুন কিছু নয়। এমনকি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের জালিয়াতি করে ডিগ্রি অর্জনের ঘটনাও নেহাত কম নয়। এমন ঘটনায় শাস্তির মুখেও পড়েছেন কেউ কেউ। যা আমাদের দেশের উচ্চশিক্ষার মানকে বেশ প্রশ্নবিদ্ধ করেছে। বিষয়টি দেশের গ-ি পেড়িয়ে আন্তর্জাতিকভাবেও বেশ আলোচনায় এসেছে। যা জাতি হিসাবে আমাদের জন্য বেশ লজ্জার।

এমনকি বাংলাদেশে ভুয়া পিএইচডির ঘটনা আমেরিকা ওয়ার্ল্ড ইউনিভার্সিটি ইউএসএ (বাংলাদেশ স্টাডি সেন্টার) থেকে অসংখ্য ভুয়া (প্রায় পাঁচ হাজার) পিএইচডি ডিগ্রিধারী বের হয়েছে। যদিও বর্তমানে দেশে এই স্টাডি সেন্টারের কার্যক্রম নেই। এই স্টাডি সেন্টারের বিরুদ্ধে কাজ করেছিল দুর্নীতি দমন কমিশনও। কিন্তু এসব ঘটনার সাথে সংশ্লিষ্টরা এখনো ধরাছোঁয়ার বাইরে রয়ে গেছে। ফলে সার্বিক পরিস্থিতির কোন উন্নতি হয়নি।

নানাবিধ কারণেই সাম্প্রতিক বছরগুলোতে দেশে পিএইচডি ডিগ্রিধারীর সংখ্যা উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়েছে। কিন্তু প্রায় ক্ষেত্রেই যথাযথভাবে মান নিয়ন্ত্রণ হচ্ছে না। মূলত, পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় থেকেই পিএইচডি ডিগ্রি দেয়া হয় আমাদের দেশে। এ ছাড়াও চলতি শিক্ষাবর্ষ থেকে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের আওতায় ভর্তি করানো হয়েছে শিক্ষার্থী। আবার বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে পিএইচডি করানোর জন্য অনুমোদন চেয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়গুলো। বিভিন্ন সময়ের কথাবার্তায় বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি) থেকে ইতিবাচক কথাই বলা হয়েছে। তবে শিক্ষাবিদরা বলছেন, যত্রতত্র মান নিশ্চিত না করে পিএইচডির সুবিধা না দেয়াই ভালো। এতে গবেষকদের মান আরও খারাপ পর্যায়ে চলে যাবে। ফলে এ থেকে আমরা কাক্সিক্ষত ফলাফল লাভ করতে পারবো না। এমতাবস্থায় চলতি শতাব্দীর চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় আমরা আরো পশ্চাদপদ হয়ে পড়বো।

এ কথা অনস্বীকার্য যে, আমাদের দেশের গবেষকদের প্রয়োজনীয় সুযোগ-সুবিধার অভাবও বেশ প্রকট। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পিএইচডি করা একজন তার মন্তব্যে বলেছেন, ‘আমার গবেষণার বিষয় উচ্চতর সামাজিক উন্নয়ন নিয়ে। এই বিষয়ে বাংলাদেশে উচ্চতর গবেষণা একেবারেই হয়নি বললেই চলে। গবেষণা যেগুলো হয়েছে বিভিন্নভাবে প্রাথমিক বিষয়ে। আমাদের এনথ্রোপলজি বিভাগে এই বিষয়ে একটা বই পড়ানো হয়। কিন্তু এটা খুবই কমন বিষয়। কিন্তু আমার গবেষণার বিষয়ে আমি সার্ফেস থেকে তথ্য সংগ্রজের পর একটা ডাটা ক্যালকুলেশনেও গিয়েছি। কিন্তু আমার যখন উচ্চতর রেফারেন্স প্রয়োজন হয় তখন আর কোনো বই বা লেখা পাই না। এজন্য ইন্টারনেটে বিভিন্ন গবেষণা প্রতিবেদন আছে কিন্তু এগুলো অ্যাকাউন্ট ছাড়া পুরোটা সংগ্রহ করা যায় না। এজন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের প্যাডে ই-মেইল এড্রেস ও যাবতীয় তথ্য দিয়ে আবেদন করতে হয়। কিন্তু এটা দীর্ঘমেয়াদি প্রক্রিয়া। একটা গবেষণার জন্য এসব কাজে একাধিক রেফারেন্স প্রয়োজন হয় কিন্তু এই তথ্য সংগ্রহ করা একটা দুরূহ বিষয়ে পরিণত হয়েছে’।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পিএইচডি করছেন এমন একজন গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন, জার্নালের জন্য নিজে থেকেই ব্যবস্থা করতে হয়। তিনি জার্নালের জন্য বিদেশে থাকা পরিচিতদের সহযোগিতা নিয়েছেন। তার যে জার্নাল প্রয়োজন সেটির লিংক দিয়ে অনুরোধ করেন সংগ্রহের জন্য। তারা খুব সহজেই এই ই-মেইল আইডি পাচ্ছে কিন্তু আমরা পাচ্ছি না।

একই সময়ে দেশের বাইরে থাকা পিএইচডি গবেষকরা কীভাবে কাজ করছেন? এ বিষয়ে অস্ট্রেলিয়া প্রবাসী একজন গবেষক জানিয়েছেন, তার গবেষণার বিষয় প্রাকৃতিক দুর্যোগ। তিনি সেখানে প্রতিটি বিষয়ে রেফারেন্স বই লাইব্রেরিতেই পেয়ে থাকেন। আর কোনো জার্নালের প্রয়োজন হলে তার বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাকাউন্ট এক্সেস আছে যা দিয়ে সহজেই পাওয়া যায়। তিনি প্রশ্নের জবাবে বলেছেন, ‘এখানে সাধারণত দুই বছর সময়ের মধ্যেই পিএইচডি সম্পন্ন করা সম্ভব। বাংলাদেশে তথ্য ও জার্নাল সংগ্রহ করাটাই প্রধান প্রতিবন্ধকতা। কিন্তু এখানে তথ্যের প্রবাহ খুবই সহজলভ্য। আমরা মূলত আমাদের গবেষণা নিয়েই ভাবতে পারি। সেইসঙ্গে একটা অর্থনৈতিক সাপোর্টও দেয়া হচ্ছে। কিন্তু দেশে পিএইচডি করতে প্রধান সমস্যা হয়ে দাঁড়ায় তথ্য সংগ্রহ’।

তিনি উদাহরণ দিয়ে বলেন, ‘আমি অস্ট্রেলিয়া ও এর আশপাশে ঘটে যাওয়া গত ১২ বছরের প্রাকৃতিক দুর্যোগের একটা ডাটা চেয়ে আবেদন করেছিলাম। তারা আমাকে রিপ্লেতে জানায়, ৩ কর্মদিবসের মধ্যে সরবরাহ করবে। এই তথ্য আমি ২ কর্মদিবসের মধ্যেই পেয়ে যাই। একই কথা বলেন, ইংল্যান্ড প্রবাসী বাংলাদেশী শিক্ষার্থী পারভেজ হাসান। তিনি বলেন, আমি বাংলাদেশে পিএইচডি শুরু করেছিলাম। এরপর এখানে সুযোগ মেলার পর চলে আসি। আমি ২০২২ সালের শুরুতে বিশ্ববিদ্যালয়ে যোগদান করি। এরপর প্রথমেই তারা আমাদের গবেষণা সংশ্লিষ্ট একাধিক রেফারেন্স জার্নাল, পূর্বের শিক্ষার্থীদের এই বিষয়ে প্রাপ্ত ফল, ই-লাইব্রেরি এক্সেস দিয়ে দেয়। যেটা কিনা বাংলাদেশের শিক্ষার্থীদের সংগ্রহ করতে হয়। মিললেও সময়সাপেক্ষ বিষয় হয়ে দাঁড়ায়।

বস্তুত, আমাদের দেশে আন্তর্জাতিক মানের গবেষণা খুব একটা হয় না। দেশের বাইরে গবেষণা প্রতিবেদনের যে জার্নাল প্রকাশিত হয় তা আন্তর্জাতিক মানদ-ের আওতাধীন করা হয়। এসব জার্নাল যদি ইনডেক্সে থাকে তবে বিশ্ববিদ্যালয়ের র‌্যাঙ্কিংয়েও ভালো হয়। একথা ঠিক যে, বিশ্বে জার্নালিজমের বেসিক নিয়ে আর গবেষণা হচ্ছে না। এখন উচ্চতর সাংবাদিকতা নিয়ে রিসার্চ হচ্ছে। দেশের বাইরে পিএইচডি করতে গেলে জানা যায় এই ক্ষেত্রটা কতো বড়।

সংশ্লিষ্টরা জানাচ্ছেন, যারা বাংলাদেশে পিএইচডি করছেন দুঃখজনক হলেও সত্য যে প্রোগ্রামে এনরোল করেও খুব সামান্য একটা অংশ সম্পন্ন করতে পারেন। অনেক সময় ১০ শতাংশ বা তারও কম সময়মতো শেষ করতে পারেন। এর প্রধান কারণ, তথ্যের ঘাটতি।

আমাদের দেশে এখনো তথ্য দেবার ক্ষেত্রে উদারতার সংস্কৃতি তৈরি হয়নি। সরকারি, বেসরকারি কিংবা স্বায়ত্তশাসিত কোনো প্রতিষ্ঠানেই তৈরি হয়নি। যখন কোনো তথ্যের প্রয়োজন হয়, তথ্যের পর্যাপ্ত সরবরাহ করা হয় না। সরবরাহ করা হলেও দীর্ঘসূত্রতা করা হয়। অনেক সময় তথ্য পাওয়াই যায় না। দ্বিতীয়ত, যদিও বলা হচ্ছে আমরা তথ্য প্রযুক্তিনির্ভর। কিন্তু তারপরও আমরা অনেক তথ্য গুছিয়ে রাখতে পারি নি। তথ্যের স্টোর হাউস আমাদের দেশে এখনো আধুনিকভাবে সক্ষম হয়নি।

মূলত, আমাদের দেশে গবেষণার জন্য ফান্ডিংয়ের একটা বড় সমস্যা রয়েছে। সরকারি বা বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের দিক থেকে এই অর্থ দেয়া হয় না। সরকারিভাবে অনেককে খুব সামান্য একটা তহবিল সুবিধা দেয়। কিন্তু উন্নত দেশে করপোরেট প্রতিষ্ঠান সহযোগিতা করে। এই গবেষণা দিয়ে তাদের প্রয়োজনগুলো মেটানো হয়। এর মধ্যমে মানুষের চাহিদা ও সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করা হয়। আমাদের দেশে মূলত গবেষকের আগ্রহেই এটা হয়ে থাকে। যারা গবেষণা করেন তারাও নানা সমস্যায় পড়েন।

পরিবার, চাকরি ও সকল প্রকার পারিপার্শি¦কতা সামলিয়ে গবেষণা করতে হয়। বিশ্ববিদ্যালয়গুলো থেকেও সহযোগিতা মেলে না। বিশ্ববিদ্যালয়গুলো নানা জটিলতা তৈরি করে থাকে। তবে ইদানীং পরিবর্তন হচ্ছে। তবে এটা প্রয়োজনের তুলনায় খুবই কম।

শিক্ষা বিশেষজ্ঞরা বলেছেন, যত্রতত্র পিএইচডি ডিগ্রি মেলায় এখন এসব ব্যক্তিদের আগের মতো সম্মান নেই। শুধু তাই নয়, পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা মুনাফার উদ্দেশ্যে প্রভাবশালী ব্যক্তিদের পিএইচডির তত্ত্বাবধায়ক হচ্ছেন। পরবর্তীতে তারা এদের কাছ থেকে নানা সুযোগ-সুবিধা নিচ্ছেন। তারা অভিমত দিয়ে বলছেন, তদারকি করে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলো ভুয়া পিএইচডি বা জালিয়াতির ব্যাপারে আরও সচেতন হবে। সে সঙ্গে গুণগত গবেষণার পরিবেশ নিশ্চিত করার ওপরও গুরুত্ব আরোপ করছেন তারা।

আমাদের দেশের উচ্চতর গবেষকরা একদিকে যেমন উপযুক্ত পরিবেশ, প্রয়োজনীয় সুযোগ-সুবিধা ও অত্যাবশ্যকীয় উপকরণ পান না, ঠিক তেমনিভাবে গবেষণা নিয়ে রয়েছে নানাবিধ জালজালিয়াতি ও অনিয়ন্ত্রিত চৌর্যবৃত্তির অভিযোগও। তাই প্রচলিত গবেষণার অভিসন্দর্ভ থেকে দেশ ও জাতি গঠনে আগামী দিনের করণীয় ও দিকনির্দেশনা অনেক ক্ষেত্রেই পাওয়া যাচ্ছে না। গবেষণাগুলো কোন কোন ক্ষেত্রে শ্রেণি বিশেষের সুবিধা লাভের অনুষঙ্গ হলেও খুবই মানহীন, অপ্রাসঙ্গিক, অন্তঃসারশূন্য ও প্রশ্নবিদ্ধ বলেই মনে করেন শিক্ষা বিশেষজ্ঞরা।
এমতাবস্থায় দেশ ও জাতির বৃহত্তর স্বার্থে একদিকে যেমন দেশে গবেষণার জন্য উপযুক্ত ক্ষেত্র এবং গবেষকদের প্রয়োজনীয় সুযোগ সুবিধা নিশ্চিত করা দরকার, ঠিক তেমননিভাবে এক্ষেত্রে জালজাতিয়াতি ও চৌর্যবৃত্তিও বন্ধ করা জরুরি। অন্যথায় জাতির গন্তব্য হয়ে পড়বে অনিশ্চিত! যা কোনভাবেই কাক্সিক্ষত নয়।

https://dailysangram.info/post/524869