১৪ মে ২০২৩, রবিবার, ১:২৭

গ্যাস চালিত ৪ বিদ্যুৎ কেন্দ্র বন্ধ

বেড়েছে লোডশেডিং

ঘূর্ণিঝড় মোখার প্রভাবে এলএনজি সরবরাহ বন্ধ থাকায় ঢাকায় লোডশেডিং বেড়েছে। দুই বিতরণ কোম্পানি মিলিয়ে প্রায় ৮০০ মেগাওয়াট লোডশেডিং হচ্ছে। এদিকে বিদ্যুৎ সংকট সৃষ্টি হওয়াতে পিডিবির তরফ থেকে ‘দুঃখ প্রকাশ’ করা হয়েছে। বিদ্যুৎ উৎপাদন কম হওয়ায় ইতোমধ্যে ঢাকায় লোডশেডিং শুরু করেছে দুই বিতরণ কোম্পানি।

গতকাল শনিবার পিডিবি তাদের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলছে, মোখা আজ রোববার বাংলাদেশের কক্সবাজার ও অন্যান্য স্থানে আঘাত হানতে পারে। এসময় বিদ্যুৎ পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখার স্বার্থে আপনাদের সাময়িক বিদ্যুৎ বিভ্রাট ঘটতে পারে। দুর্যোগকালীন বিদ্যুৎ উৎপাদন, বিতরণ ও সঞ্চালন ব্যবস্থা নানাভাবে ব্যাহত হয়।

ইতোমধ্যেই ঘূর্ণিঝড় ‘মোখা’র প্রভাবে মহেশখালীর দুটি ভাসমান এলএনজি টার্মিনাল থেকে শুক্রবার দিবাগত রাত ১১টা থেকে গ্যাস সরবরাহ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। ফলে চট্টগ্রাম ও কুমিল্লা অঞ্চলে শনিবার গ্যাস সরবরাহে বিঘœ ঘটবে। এসময় চট্টগ্রাম, মেঘনাঘাট, হরিপুর এবং সিদ্ধিরগঞ্জ এলাকায় গ্যাস চালিত বিদ্যুৎ কেন্দ্র বন্ধ বা আংশিক চালু থাকবে। তবে পরবর্তীতে ঝড়ের পরিস্থিতি বিবেচনায় দ্রুত গ্যাস সরবরাহ স্বাভাবিক করা হবে।

ঢাকা ইলেকট্রিক সাপ্লাই কোম্পানির (ডেসকো) ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) কাওসার আমীর আলী বলেন, গ্যাসের কারণে বিদ্যুৎ উৎপাদন কমে যাওয়ায় আমরা বেশ ঝামেলার মধ্যে আছি। দিনের বেলায় ৩২২ মেগাওয়াট লোডশেডিং করতে হচ্ছে। ডেসকোর অধীন এলাকায় এখন চাহিদা আছে ১ হাজার ১৫৭ আর বিদ্যুৎ পাচ্ছি ৮৩৫ মেগাওয়াট। রাতে লোডশেডিং কমে আসবে বলে তিনি জানান।

এদিকে ডিপিডিসি জানায়, তাদের বিদ্যুতের মোট চাহিদা হচ্ছে ১ হাজার ৬৭৮ মেগাওয়াট। কিন্তু উৎপাদন কম হওয়ায় এর মধ্যে ১ হাজার ২০০ মেগাওয়াট সরবরাহ করা হচ্ছে। এতে প্রায় ৪৭৮ মেগাওয়াট লোডশেডিং চলছে।

এদিকে ঘূর্ণিঝড় মোখার কারণে মহেশখালীর দু'টি ভাসমান এলএনজি টার্মিনাল শুক্রবার রাত ১১টা থেকে গ্যাস সরবরাহ বন্ধ রেখেছে। ফলে চট্টগ্রাম ও কুমিল্লা অঞ্চলে গ্যাস সরবরাহ বিঘিœত হবে। ঝড়ের পরিস্থিতি বিবেচনা করে, গভীর সমুদ্রে সরিয়ে নেওয়ায় টার্মিনাল দুটি দ্রুত পুনঃস্থাপন/পুনসংযোগ দিয়ে গ্যাস সরবরাহ করা হবে বলে জানিয়েছে বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়।

গতকাল শনিবার এক বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানায় বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ঘূর্ণিঝড় মোখা'র প্রভাবে চট্টগ্রাম, মেঘনাঘাট, হরিপুর এবং সিদ্ধিরগঞ্জ এলাকায় গ্যাস চালিত বিদ্যুৎ কেন্দ্র বন্ধ/আংশিক চালু থাকতে পারে।

বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ প্রাকৃতিক এই দুর্যোগের জন্য দুঃখ প্রকাশ করে বলেন, অতিদ্রুত গ্যাস, বিদ্যুৎ পরিস্থিতি স্বাভাবিক করা হবে। একইসঙ্গে তিনি বৈদ্যুতিক ছেঁড়া তার স্পর্শ না করে নিকটস্থ বিদ্যুৎ অফিসে যোগাযোগ করার জন্য গ্রাহকদের প্রতি বিশেষভাবে অনুরোধ করেন।

এদিকে গতকাল শনিবার সকাল থেকে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় ঘনঘন লোডশেডিং হচ্ছে বলে অভিযোগ করছেন গ্রাহকরা। অভিযোগ জানিয়ে অনেকে সামাজিক মাধ্যমে পোস্টও দিচ্ছেন।

আবহাওয়া অধিদপ্তরের ১৫ নম্বর বিশেষ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, কক্সবাজার সমুদ্রবন্দর থেকে ৬৩০ কিলোমিটার দক্ষিণ-দক্ষিণপশ্চিমে অবস্থান করছে ঘূর্ণিঝড় মোখা। এছাড়া চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর থেকে ৭০৫ কিলোমিটার দক্ষিণ-দক্ষিণপশ্চিমে, মোংলা সমুদ্রবন্দর থেকে ৬৯৫ কিলোমিটার দক্ষিণে ও পায়রা সমুদ্রবন্দর থেকে ৬৪৫ কিলোমিটার দক্ষিণে অবস্থান করছে অতিপ্রবল ঘূর্ণিঝড়টি।

https://dailysangram.info/post/524437