ঈদের ছুটি অনেক আগেই শেষ হয়েছে। তবুও মাঝে বুদ্ধ পূর্ণিমা ও সাপ্তাহিক ছুটির কারণে চাপ কমে ছিল রাজধানীর সড়কে। গতকাল রোববার খুলেছে অধিকাংশ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। আবার দুপুর ১টা পর্যন্ত অনুষ্ঠিত হয়েছে এসএসসির ইংরেজি পরীক্ষা। ফলে রোববার স্কুলগামী শিক্ষার্থী, অফিসগামী যাত্রী ও এসএসসি পরীক্ষার চাপ সামলাতে গিয়ে সড়কে বেসামাল অবস্থা ট্রাফিক পুলিশের। রাজধানীতে সকাল থেকেই তীব্র যানজটের কবলে পড়েছে রাজধানীবাসী। একইসাথে পরিবহন সঙ্কটে চরম ভোগান্তিতে পড়তে হয়েছে।
গত ২২ এপ্রিল ঈদুল ফিতরের পর থেকে রাজধানীবাসী এমন তীব্র যানজটের মুখে পড়েননি বলে জানিয়েছেন ভোগান্তিতে পড়া যাত্রীরা। বিজয় সরণি পার হতে প্রতিটি যানবাহনের সময় লাগছে আধা ঘণ্টার বেশি। এরপর বিজয় সরণি পার হয়ে জাহাঙ্গীরগেটেও তীব্র যানজটে পড়তে হচ্ছে পরিবহনগুলোকে। এই দুই মোড় পার হতে গড়ে দেড় ঘণ্টা সময় লাগছে। চলাচলকারী পরিবহনের সহকারীরা বলছেন, রাস্তায় চাপ বেশি। অফিস-আদালত খোলায় চাপ বেড়েছে। কিন্তু অন্যদিনের মতো বাস বাড়েনি। এজন্য অনেক যাত্রী বাস পাচ্ছে না।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সকাল থেকেই রাজধানীর সড়কগুলোতে আগের মতো ব্যাপক যানবাহনের চলাচল শুরু হয়েছে। তার মধ্যে এসএসসি পরীক্ষা বাড়তি চাপ তৈরি করেছে সড়কে। এসএসসি পরীক্ষার কেন্দ্র সংলগ্ন সড়কগুলোতে তীব্র যানজট সকাল থেকেই।
রাজধানীর আগারগাঁও, বিজয় সরণি, জাহাঙ্গীর গেট, মহাখালী, তেজগাঁও শিল্পাঞ্চল এলাকা, মগবাজার, বেইলি রোড, কাকরাইল, রমনা, পল্টন, মতিঝিল ও গুলিস্তান এলাকায় তীব্র যানজট সৃষ্টি হয়েছে। তিন কিংবা চার রাস্তার মোড়গুলোর হ য ব র ল অবস্থা। সড়কে তীব্র যানজট ও যানবাহন চলাচলে স্থবিরতার কারণে প্রচন্ড গরমে ভোগান্তিতে পড়েছেন যাত্রীরা।
ফার্মগেট এলাকায় এক সিএনজি চালক বলেন, শেওড়াপাড়া থেকে দুই যাত্রী নিয়ে বের হয়েছি মতিঝিল যাব। আগারগাঁও সিগনাল পেরিয়ে নতুন রাস্তায় ওঠার মুখেই যানজটে পড়ি। সড়কের অবস্থা বেগতিক দেখে অনেক কষ্টে সামনে ইউটার্ন করে আবার বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রের সামনের সড়ক ধরে রওনা দিই। কিন্তু সংসদ ভবনের সামনে থেকে বিজয় সরণি যাওয়ার সড়ক একদম স্থবির। বাধ্য হয়ে খামারবাড়ি হয়ে ফার্মগেট ঢুকি। এখানেও অবস্থা খারাপ। মোটরসাইকেল আরোহী বলেন, কোনো দিক দিয়ে কুল পাচ্ছি না। সড়কে গাড়ির চাকা যেন ঘুরছেই না। প্রচন্ড গরমে হাপিত্যেশ করছি কিন্তু যানজট লেগেই থাকছে। নাবিস্কো মোড় থেকে বিজি প্রেসের সামনে আসতে পাঁচ মিনিটের পথে লেগে গেল আধা ঘণ্টা।
ট্রাফিক তেজগাঁও বিভাগের অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার মো. জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ঈদ উপলক্ষ্যে ঢাকা ছেড়ে গ্রামে যাওয়া মানুষজন ছুটি শেষে ঢাকায় ফিরেছেন। এর মধ্যে খুলেছে স্কুল-কলেজসহ সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। তার মধ্যে এসএসসির পরীক্ষা। সড়কে চাপ সকাল থেকেই। আমাদের ট্রাফিক বিভাগের সদস্যরা মাঠ পর্যায়ে রোদে পুড়ে কাজ করছেন সড়কের শৃঙ্খলা বজায় রাখতে। কিন্তু সড়কে প্রচন্ড চাপ।
ট্রাফিক রমনা বিভাগের অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার মো. সোহেল রানা বলেন, সড়কে মারাত্মক চাপ। আমরাও প্রেসারে আছি। তিন দিনের ছুটি শেষে সরব হয়েছে অফিসপাড়া। এসএসসি পরীক্ষা, অফিস ও স্কুলগামী যানবাহনের চাপে যানজট লেগেছে। বিশেষ করে বেইলি রোড ও ধানমন্ডির মতো জায়গায় যেখানে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সংখ্যা বেশি সেখানে যানজট বেশি লাগছে।
ডিএমপির অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (ট্রাফিক) মো. মুনিবুর রহমান বলেন, সড়কে তো আমাদের সক্ষমতা আগের মতোই। ঈদের পর আগের মতোই সরব হয়েছে ঢাকা। সপ্তাহের শুরুর দিন, এসএসসি পরীক্ষা, খুলেছে সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানও। অফিসগামী যানবাহনের চাপ তো আছেই।