৮ মে ২০২৩, সোমবার, ২:৪৬

উচ্চ মূল্যস্ফীতি ও রিজার্ভ কমে যাওয়ার বিষয়ে সতর্ক করল আইএমএফ

বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ কমে যাওয়াসহ ক্রমাগত মূল্যস্ফীতির চাপ, বিশ্বব্যাপী অর্থনৈতিক অস্থিরতা এবং বাণিজ্যিক অংশীদারভুক্ত দেশগুলোর অর্থনৈতিক শ্লথগতির বিষয়ে বাংলাদেশকে সতর্ক করেছে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ)।
আন্তর্জাতিক অর্থলগ্নিকারী এই সংস্থাটি বলেছে, বিদ্যমান অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জের মুখেও এশিয়া-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের দেশগুলোর মধ্যে যেসব দেশ দ্রুত হারে প্রবৃদ্ধি অর্জন করছে, বাংলাদেশ তাদের মধ্যে অন্যতম। তবে বাংলাদেশের অর্থনীতির জন্য সামনে তিনটি চ্যালেঞ্জ রয়েছে। এগুলো হচ্ছে- অবিরাম মূল্যস্ফীতির চাপ, বিশ্বব্যাপী অর্থনৈতিক অস্থিরতা এবং বাংলাদেশের প্রধান বাণিজ্যিক অংশীদার দেশগুলোর অর্থনীতিতে শ্লথগতি।

আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ)-এর মতে, এসব কারণে বাংলাদেশের প্রবৃদ্ধি, বিদেশী মুদ্রার রিজার্ভ ও স্থানীয় মুদ্রা টাকার মানের ওপর চাপ অব্যাহত থাকবে। প্রায় ১২ দিনের বাংলাদেশ সফর শেষে গতকাল রোববার এক বিবৃতিতে আইএমএফ প্রতিনিধিদলের বাংলাদেশ মিশন প্রধান রাহুল আনন্দ এ কথা বলেন।

প্রসঙ্গত, আইএমএফের স্টাফ পর্যায়ের প্রতিনিধিদল গত ২৫ এপ্রিল থেকে ৭ মে পর্যন্ত বাংলাদেশ সফর করে। সফরকালে আইএমএফ প্রতিনিধিদল বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদার, অর্থসচিব ফাতিমা ইয়াসমিন এবং অন্য ঊর্ধ্বতন সরকারি ও বাংলাদেশ ব্যাংকের কর্মকর্তাদের সাথে বৈঠক করে। এ ছাড়া বেসরকারি খাতের প্রতিনিধি, দ্বিপক্ষীয় দাতা ও উন্নয়ন সহযোগীদের সাথেও বৈঠক করে তারা।

এদিকে জানা যায়, আগামী সপ্তাহে দুই মাসের আমদানি বিল পরিশোধের পর বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ২৯.৮৬ বিলিয়ন ডলারে নেমে আসবে, যা বিগত সাত বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন।

বিবৃতিতে রাহুল আনন্দ বলেন, এই সফরে আমরা সামষ্টিক অর্থনৈতিক ও আর্থিক খাতের সাম্প্রতিক গতি-প্রকৃতি নিয়ে আলোচনা করেছি। আইএমএফ-সমর্থিত কর্মসূচির মূল যেসব প্রতিশ্রুতি ছিল, সেগুলো কতটা পূরণ হলো, তার অগ্রগতিও পর্যালোচনা করেছি। বর্ধিত ঋণ সুবিধা (ইসিএফ), বর্ধিত তহবিল সুবিধা (ইএফএফ) এবং স্থিতিস্থাপক ও টেকসই সুযোগ সুবিধা (রেজিলিয়েন্স অ্যান্ড সাসটেইনেবিলিটি ফ্যাসিলিটি- আরএসএফ) ব্যবস্থার প্রথম পর্যালোচনায় আনুষ্ঠানিকভাবে তা মূল্যায়ন করা হবে, যা এ বছরের শেষের দিকে হবে বলে আশা করা হচ্ছে।

অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থ বিভাগ সূত্রে জানা যায়, আইএমএফ ঋণের সাথে প্রদত্ত বেশ কিছু শর্ত বাংলাদেশ এরই মধ্যে পূরণ করেছে এবং আরো কিছু শর্ত পূরণ প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।

বিবৃতিতে আইএমএফের বাংলাদেশ মিশন প্রধান আরো বলেন, আন্তরিক আলোচনা এবং উষ্ণ আতিথেয়তার জন্য আমরা ধন্যবাদ জানাতে চাই। বাংলাদেশ এবং এর জনগণের সমর্থনে আমাদের সম্পৃক্ততা আমরা অব্যাহত রাখতে চাই।

প্রসঙ্গত গত বছরের ২৪ জুলাই ঋণ চেয়ে আইএমএফের কাছে চিঠি দেয় বাংলাদেশ। এতে পরিমাণের কথা উল্লেখ ছিল না। পরে ১২ অক্টোবর ওয়াশিংটনে বিশ্বব্যাংক-আইএমএফের বার্ষিক সম্মেলনে যোগ দিয়ে গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদার ৪৫০ কোটি ডলারের ঋণ সহায়তার কথা উল্লেখ করেন। এরপর চলতি বছরের ৩০ জানুয়ারি বাংলাদেশের জন্য ৪৭০ কোটি ডলারের ঋণ অনুমোদন করে আইএমএফ। এই ঋণের প্রথম কিস্তি ইতোমধ্যে ছাড় করা হয়েছে। ২০২৬ সাল পর্যন্ত আইএমএফের কর্মসূচি চালু থাকার কথা রয়েছে।

https://www.dailynayadiganta.com/first-page/746271