৬ মে ২০২৩, শনিবার, ১২:৪৬

বেড়েছে তেল চিনি ডিম আলু ও পেঁয়াজের দাম

ঈদুল ফিতরের আগেই বেড়ে ছিল মুরগি ও গরুর গোশতের দাম। ঈদ শেষ হওয়ার প্রায় দুই সপ্তাহ হয়ে গেলেও এখনও বাড়তি দামেই বিক্রি হচ্ছে সব ধরনের গোশত। গোশতের পাশাপাশি এবার বাজারে উত্তাপ ছড়াচ্ছে সব ধরনের সবজি। ৫০ টাকার নিচে কোনো সবজিই মিলছে না। এতে বিপাকে পড়েছে স্বল্প আয়ের মানুষ।

গতকাল শুক্রবার রাজধানীর বাজার ঘুরে দেখা যায়, প্রতি কেজি মরিচ ১২০০ টাকা, করলার কেজি ৮০ টাকা, ঢেঁড়স ৬০-৭০ টাকা, পটোল ৬০-৮০ টাকা, লাউ পিস ৬০, মিষ্টি কুমড়া প্রতি পিস ৩০-৩৫ টাকা, চাল কুমড়া ৫০-৬০ টাকা, সজনে ১৪০ টাকা কেজি, ৩০০ গ্রাম ওজনের ফুলকপি ৪০ টাকা, পাতাকপি ৬০ টাকা, পেঁপে ৪০-৫০ টাকা, বেগুন ৬০-৮০ টাকা, বরবটি ৮০ টাকা কেজি, কাঁকরোল ৮০ টাকা, চিচিঙ্গা ৬০ টাকা, শসা ৬০ টাকা, গাজর ৮০ টাকা, ঝিঙা ৮০ টাকা, কচু ১২০ টাকা, কচুর লতি ৮০ টাকা, টমেটো ৪০ টাকা কেজি ও লেবু ৩০ টাকা হালিতে বিক্রি হচ্ছে।

বাসাবো বাজারে আসা ক্রেতা রফিকুল ইসলাম বলেন, প্রতি দিনই জিনিসপত্রের দাম বাড়ছে। কোনো পণ্যের দাম একবার বাড়লে আর সেটি কমছে না। গরু ও খাসির গোশতের দাম বাড়ায় সেগুলো আর কিনতে পারি না। এখন মুরগির দামও বেড়ে গেছে। খাবার মতো সামর্থ্য ছিল সবজির। সেটিও এখন ৫০ টাকার নিচে মিলছে না।

বিক্রেতারা বলছেন, আমাদের নিজেদেরকেও সবজি খেতে হয়। ৫০-৬০ টাকায় সবজি খাওয়া আমাদের জন্যও কষ্টের। আমরা চাই সব ধরনের সবজি ৩০ থেকে ৪০ টাকার মধ্যে বিক্রি করি। কিন্তু পাইকারি বাজারে দাম বেশি। বেশি দামে কেনা থাকায় কম দামে সবজি বিক্রি সম্ভব হচ্ছে না। বাজারে পাট শাক জোড়া আঁটি ২০ টাকা, কলমি শাক জোড়া আঁটি ২০ টাকা, কচুর দুই আঁটি ১০ টাকা, লাল শাকের জোড়া আঁটি ২০ টাকা, পুঁই শাক ৩০ টাকা, শাপলা ডাঁটা ১০ টাকা, ডাঁটা শাক ১০ টাকা, সবুজ ডাঁটা ২০ টাকা আঁটিতে বিক্রি হচ্ছে। আর ধনে পাতা ১০০ গ্রাম ৩০ টাকায় বিক্রি করা হচ্ছে।

এ ছাড়া বাজারে নতুন করে তেল, চিনি, ডিম, আলু, পেঁয়াজ, আদা, রসুনের দামও বেড়েছে। গত বৃহস্পতিবার থেকে বোতলজাত সয়াবিন তেলের লিটারে ১২ টাকা এবং খোলা সয়াবিনের লিটারে ৯ টাকা বেড়েছে। আর ৫ লিটারের বোতলের দাম বেড়েছে ৫৪ টাকা। এ ছাড়া পাম সুপার ওয়েলের দাম লিটারে বাড়ানো হয়েছে ১৮ টাকা। এখন বোতলজাত এক লিটার সয়াবিন তেলের দাম ১৯৯ টাকা, ৫ লিটারের দাম ৯৬০ টাকা এবং খোলা সয়াবিন তেল প্রতি লিটারের দাম ১৭৬ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।

খুচরা বাজারে কোথাও মিলছে না প্যাকেটজাত চিনি। খোলা চিনি কিনতে হলে খুঁজতে হচ্ছে দুই-চার দোকান। কয়েক দিনের ব্যবধানে দাম আরও বেড়ে এখন বিক্রি হচ্ছে ১৩৫ থেকে ১৪০ টাকা কেজিপ্রতি। যা গত সপ্তাহে ১২০-১২৫ টাকার মধ্যে ছিল।

এ ছাড়া বাজারে ঈদের পরে আলুর দাম উল্লেখযোগ্য পরিমাণে বেড়েছে। সারা বছরই স্থিতিশীল থাকলেও মৌসুমের শুরুতে আলুর অস্থিতিশীল বাজারকে অস্বাভাবিক মনে করছেন ক্রেতারা।

দফায় দফায় দাম বেড়ে খুচরা বাজারে আলুর কেজি বিক্রি হচ্ছে ৪০ টাকা, যা ঈদের আগে ২০ থেকে ২৫ টাকার মধ্যে ছিল। আর গত বছরের এ সময় আলুর দাম ছিল ১৬ থেকে ২০ টাকা।

আগে দেশী পেঁয়াজের কেজি বিক্রি হয়েছে ৩০ থেকে ৩৫ টাকায়। যা এখন বেড়ে হয়েছে ৫০ থেকে ৬০ টাকা। একইভাবে আমদানি করা চায়না রসুনের কেজি হয়েছে ১৬০ থেকে ১৬৫ টাকা। আর দেশী রসুনের কেজি ১৪০ থেকে ১৪৫ টাকা। রোজার ঈদের দু-এক দিন পরও চায়না রসুনের কেজি ছিল ১৩০ টাকার আশপাশে। আর দেশী রসুন বিক্রি হয়েছিল ১২০ থেকে ১৩০ টাকায়।

পাশাপাশি দর বেড়েছে আদার। দেশী আদা ২০০ থেকে ২২০ এবং আমদানি করা চায়না আদার কেজি ২৮০ থেকে ৩০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। ঈদের আগেও দেশী আদা ১৫০ থেকে ২০০ টাকা এবং আমদানি করা আদার দাম ২০০ থেকে ২৫০ টাকার মধ্যে ছিল।
এ দিকে বাজারে ঈদের মধ্যে বেড়ে যাওয়া ব্রয়লার মুরগির দাম কমেনি। বিক্রি হচ্ছে ২৪০ থেকে ২৫০ টাকা কেজি দরে। সোনালি মুরগির কেজি ৩২০ থেকে ৩৩০ টাকা। এর সঙ্গে গত দুই দিন ধরে বাড়ছে ডিমের দাম। ১৫ টাকা বেড়ে প্রতি ডজন ফার্মের ডিম বিক্রি হচ্ছে ১৪৫ টাকায়।

মাছের বাজার ঘুরে দেখা গেছে, প্রতি কেজি পাঙ্গাশ ১৭০-২০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। তেলাপিয়া মাছের কেজি হয়েছে ২০০ থেকে ২২০ টাকা। প্রতি কেজি চিংড়ি বিক্রি হচ্ছে ৬০০ থেকে ১০০০ টাকায়। তাজা রুই, কাতলা, মৃগেল বিক্রি হচ্ছে ৩২০ থেকে ৩৬০ টাকা কেজি দরে। দেশী প্রজাতির টেংরা, শিং, গচি ও বোয়াল মাছের কেজি ৬৫০ থেকে ৮০০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।

https://www.dailynayadiganta.com/first-page/745721