৩০ এপ্রিল ২০২৩, রবিবার, ১১:৫৪

সরকার নির্ধারিত দামের চেয়ে ৩০ টাকা বেশি দরে খোলা চিনি বিক্রি

সবশেষ সরকারি নির্দেশ অনুযায়ী খোলা চিনির কেজি ১০৪ টাকায় বিক্রি করার কথা। কিন্তু সে নির্দেশ অমান্য করে চিনি বিক্রি করা হচ্ছে ১৩০ থেকে ১৩৫ টাকা দরে। অর্থাৎ কেজিপ্রতি ২৬ থেকে ৩১ টাকা বেশি নেওয়া হচ্ছে।

ভোক্তারা বলছেন, সরকার বলছে দাম কমিয়েছে, কিন্তু বাজারে গিয়ে দেখছি ব্যবসায়ীরা উল্টো দাম বাড়িয়েছেন। প্রয়োজন থাকায় চিনি কিনতে হচ্ছে বেশি দামেই। সরকারের উচিত অসাধু ব্যবসায়ীদের চিহ্নিত করে ব্যবস্থা নেওয়া। ভোক্তাদের অভিযোগ স্বীকার করেছেন খুচরা ব্যবসায়ীরা। তারা বলছেন, সরকার চিনির নতুন দাম নির্ধারণের পর থেকে নতুন করে বাজারে সংকট তৈরি করেছে বড় বড় কোম্পানিগুলো। তারা ঈদের সময় দাম বাড়িয়েছে, এখনো সেই দামেই বিক্রি করছে। আমরাও বেশি দামে বিক্রি করতে বাধ্য হচ্ছি।

রাজধানীর মালিবাগ এলাকার একাধিক জেনারেল স্টোরের মালিকরা জানান, ঈদের সময় থেকে খোলা চিনি ১৩০ টাকায় বিক্রি করছি। প্যাকেটজাত চিনি এখন চোখেই দেখি না। গত দুই মাস ধরে কোম্পানিগুলো চিনি দেয় না, অনেক বলাবলির পর ৩০ কেজি চাইলে ৫-১০ কেজি পাই। আমরা কী করব? মুদি দোকানিরা জানান, প্যাকেটজাত চিনি বিক্রি বন্ধ করে দিয়েছি এক বছর হলো। এখন খোলা চিনিও বিক্রি বন্ধ করে দেবো। কারণ হিসাবে তারা বলেন, এক কেজি চিনি বিক্রি করে লাভ হয় ৫ টাকা। আর এই চিনির জন্য কাস্টমার ও কোম্পানির লোকদের কাছে যে পরিমাণ কথা বলতে হয় তাতে পোষায় না। ১৫ দিন হলো এক বস্তা চিনির জন্য অর্ডার দিয়েছি, কিন্তু কোম্পানি এখনো চিনি দেয়নি। কীভাবে ব্যবসা করব?

শওকত জামান নামের এক ক্রেতা বলেন, রোজার শেষের দিকে ১২০ টাকা কেজিতে চিনি কিনেছি, আজ (শনিবার) দেখছি ১৩৫ টাকা কেজি। কয়েকটি দোকান ঘুরে দেখেছি, ১৩০-১৩৫ টাকার কম কেউ বিক্রি করছে না। আপাতত চিনি কিনলাম না। কয়েকদিন বাজার দেখে তারপর কিনব।

মালিবাগের মুদি দোকানি আল-আমিন বলেন, পাইকারি বাজারে চিনির সংকট। এখন যে চিনি রয়েছে এই চিনি ঈদের আগে কেনা, বড় জোর আর দুই-তিন দিন বিক্রি করতে পারব। তারপর নতুন করে চিনি না পেলে বিক্রি করতে পারব না। আমি ঈদের আগেই চিনি বিক্রি করেছি ১৩৫ টাকায়। এখনো সেই দামেই বিক্রি করছি। দাম আমি বাড়াইনি। চিনি পাইকারিতে কেনা ১২৬ টাকা। সব খরচ মিলে ১৩৫ টাকায় বিক্রি না করলে আমাদের লাভ থাকে না।

উল্লেখ্য, গত ৬ এপ্রিল সরকার খোলা চিনির দাম ৩ টাকা কমিয়ে ১০৪ টাকা নির্ধারণ করে। এর আগে সরকার নির্ধারিত দাম ছিল ১০৭ টাকা, কিন্তু বাজারে পাওয়া যেত ১১৫ থেকে ১২০ টাকায়। ৬ এপ্রিল দাম কমানোর পর থেকে বড় কোম্পানি ও ব্যবসায়ীরা চিনি সরবরাহ সীমিত করে দেয়। এতে চিনির দাম না কমে উল্টো বেড়েছে। শুধু তাই নয়, বড় ব্যবসায়ীরা খুচরা ব্যবসায়ীদের চিনি কেনার সময় কোনো রসিদও দিচ্ছেন না।

ব্যবসায়ীরা বলছেন, চিনির বাজারে অস্থিরতার কারণে এখন অনেকেই চিনি বিক্রি করছেন না। ঈদের আগে ৫০ কেজি চিনির বস্তা বিক্রি হয়েছে ৫ হাজার ৯০০ থেকে ৫ হাজার ৯৫০ টাকায়। বর্তমানে এক বস্তা চিনিতে দাম বেড়েছে ৩৫০ থেকে ৪০০ টাকা। তারা বলেন, বড় কোম্পানিগুলোর কেউ সরকার নির্ধারিত দামে চিনি বিক্রি করছে না। তারা পাইকারি দর নিচ্ছে ১২৫ টাকা। কিন্তু খুচরা ব্যবসায়ীদের রসিদ দিচ্ছে না। অথচ সরকারের কাছে দেখাচ্ছে তারা নির্ধারিত দামেই (১০৪ টাকা) বিক্রি করছে।

https://dailysangram.com/post/523297