২৮ এপ্রিল ২০২৩, শুক্রবার, ৮:০৭

বিদেশী ঋণের পূর্ণাঙ্গ তথ্য চায় আইএমএফ

ইআরডি কর্মকর্তাদের সাথে বৈঠক

রূপপুর পারমাণবিক প্রকল্পে ঋণের পরিশোধের অর্থ বিদেশী মুদ্রার রিজার্ভে না রেখে পৃথক একটি অ্যাকাউন্টে রাখার পরামর্শ দিয়েছে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ)। রাশিয়া থেকে ঋণ নিয়ে এই প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। ঋণের কিস্তি হিসেবে ৩০ কোটি ডলার বাংলাদেশকে শিগগিরই পরিশোধ করতে হবে। আইএমএফ বলছে, এই অর্থ এখন পর্যন্ত বিদেশী মুদ্রার রিজার্ভে দেখানো হচ্ছে। কিন্তু রিজার্ভ গণনার স্বচ্ছতা ও আন্তর্জাতিক নীতি অনুযায়ী ঋণ পরিশোধের এই অর্থ পৃথক অ্যাকাউন্টে রাখা জরুরি।

গতকাল বৃহস্পতিবার অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের (ইআরডি) সাথে এক বৈঠকে এসব বিষয়ে নিয়ে আলোচনা হয়েছে বলে জানা গেছে।

বৈঠকে বাংলাদেশ কী পরিমাণ বৈদেশিক ঋণ নিয়েছে তার ডাটাবেইজের তথ্য চেয়েছে সংস্থাটি। এ ছাড়া ডাটাবেইজে কোন পদ্ধতি ব্যবহার করা হয় সেটিও জানতে চেয়েছে বাংলাদেশ সফরে আসা এ প্রতিনিধিদল।
এ প্রসঙ্গে ইআরডি সচিব শরিফা খান সাংবাদিকদের বলেন, আইএমএফ আমাদের কাছে ঋণসংক্রান্ত ডাটাবেইজ নিয়ে জানতে চেয়েছে। আমরা তা নিয়েই আলোচনা করেছি।

বিদেশী ঋণ পরিশোধ নিয়ে কোনো আলোচনা হয়েছে কি না এমন প্রশ্নের জবাবে শরিফা খান বলেন, আমাদের রিপেমেন্ট এখনো পর্যন্ত ক্লিয়ার। এ নিয়ে কোনো আলোচনাই হয়নি। তিনি জানান, তারা আমাদের কাছে জানতে চেয়েছে ডাটাবেইজের কোন পদ্ধতি ব্যবহার করি। আমরা বলেছি, বাংলাদেশ আংকটাডের পদ্ধতি অনুসরণ করে থাকে।

ইআরডির ঊর্ধ্বতন এক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, এ প্রতিনিধিদল রাশিয়ার সাথে অ্যাডজাস্টমেন্ট অ্যাকাউন্ট খোলা হয়েছে কি না তাও জানতে চেয়েছে। আমরা বলেছি, সেটি খোলার প্রক্রিয়া শেষ হয়েছে। আর সংশোধিত উন্নয়ন বাজেট নিয়ে জানতে চেয়েছে তারা। এ কর্মকর্তা জানান, প্রতিনিধিদলটির সাথে খুব বেশি আলোচনা হয়নি। তবে আগামী অক্টোবরে সংস্থাটির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা বাংলাদেশে আসবেন। তখন নীতিগত সিদ্ধান্ত নেবেন তারা। এর আগে কিছুই বলা যাচ্ছে না।

জানা গেছে, আইএমএফের ঋণ নিতে ছোট-বড় ৩৮টি শর্ত পূরণ করতে হবে বাংলাদেশকে। শর্তগুলোর মধ্যে বেশির ভাগই আর্থিক খাতের সাথে সম্পর্কযুক্ত। আর্থিক খাতের মধ্যে আবার বড় অংশজুড়ে রয়েছে ব্যাংক খাত। যার মধ্যে উল্লেখযোগ্য অংশ রয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের দায়িত্বে। এর মধ্যে গত মার্চ পর্যন্ত অর্জন এবং আগামী জুন ও সেপ্টেম্বরের মধ্যে যেগুলো বাস্তবায়ন করতে হবে সেগুলোর বাস্তবায়ন পরিস্থিতি যাচাই করছে এবারের মিশন।

এ ছাড়া ২০২৪ সালের জুনের মধ্যে যেসব শর্ত বাস্তবায়নের অঙ্গীকার করেছে সরকার সেগুলো বাস্তবায়নের জন্য আসছে বাজেটে কী কী উদ্যোগ থাকছে, তাও পর্যালোচনা করা হবে।

আইএমএফ গত ৩০ জানুয়ারি বাংলাদেশের জন্য ৪৭০ কোটি ডলার ঋণ প্রস্তাব অনুমোদন করে। এর মধ্যে এক্সটেনডেড ক্রেডিট ফ্যাসিলিটি (ইসিএফ) বা বর্ধিত ঋণসুবিধা ও এক্সটেনডেড ফান্ড ফ্যাসিলিটি (ইএএফএফ) বা বর্ধিত তহবিল সুবিধার আওতায় ৩৩০ কোটি ডলার এবং নতুন গঠিত তহবিল রেজিলিয়েন্স অ্যান্ড সাসটেইনেবিলিটি ফ্যাসিলিটির (আরএসএফ) আওতায় আরো ১৪০ কোটি ডলারের ঋণ অনুমোদন করা হয়েছে। ঋণ প্রস্তাব অনুমোদনের তিন দিন পরই প্রথম কিস্তিতে ছাড় করে ৪৭ কোটি ৬২ লাখ ৭০ হাজার ডলার। ২০২৬ সাল পর্যন্ত সাড়ে তিন বছরে মোট সাত কিস্তিতে ঋণের পুরো অর্থ দেবে আইএমএফ।

https://www.dailynayadiganta.com/first-page/743988