২১ এপ্রিল ২০২৩, শুক্রবার, ৩:১৫

জাল সনদে শিক্ষকতা বিব্রত হচ্ছে প্রশাসন

সহস্রাধিক শিক্ষকের সনদ যাচাই করে জাল প্রমাণিত

বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে জাল সনদে চাকরি করেছেন অনেক শিক্ষক। এ নিয়ে প্রায়ই বিব্রত হচ্ছে শিক্ষা প্রশাসন। তবে ২০১৫ সালের আগে জাল সনদে অনেকে প্রশাসনকে ফাঁকি দিয়ে চাকরিতে যোগদান করলেও নতুন করে সেই সুযোগ আর নেই বলে জানিয়েছে বেসরকারি শিক্ষক নিবন্ধন ও প্রত্যয়ন কর্তৃপক্ষ (এনটিআরসিএ)। যদিও ইতোমধ্যে পরিদর্শন ও নিরীক্ষা অধিদফতর জাল সনদে সারা দেশে বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে কর্মরত এক হাজার ১৫৬ জন শিক্ষককে শনাক্ত করেছে। তাদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থারও উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।

সূত্র মতে, সারা দেশের বিভিন্ন বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে জাল সনদ নিয়ে কর্মরত আছেন অনেক শিক্ষক। তবে এই জাল সনদধারী কতজন কর্মরত আছেন সে বিষয়ে সুস্পষ্ট তথ্য নেই শিক্ষা প্রশাসনের কাছে। তবে জাল সনদে নতুন করে আর শিক্ষক নিয়োগের সুযোগ নেই বলে জানিয়েছে সারা দেশের বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে এন্ট্রি লেভেলের শিক্ষক পদে নিয়োগের জন্য প্রার্থী নির্বাচনের দায়িত্বে থাকা সরকারি সংস্থা এনটিআরসিএ।

এ দিকে জাল শিক্ষকদের চাকরির বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে এনটিআরসিএ’র সচিব মো: ওবায়দুর রহমান বলেন, জাল সনদের যেসব শিক্ষক কর্মরত আছেন তারা কমিটির মাধ্যমে নিয়োগ পাওয়া। এসব শিক্ষকের নিয়োগ ২০১৫ সালের আগে। নতুন করে জাল সনদধারীদের শিক্ষক পদে নিয়োগের কোনো সুযোগ নেই। বর্তমানে এনটিআরসিএ শিক্ষকদের নিয়োগ সুপারিশ বা প্রার্থী বাছাই করছে। এ প্রক্রিয়ায় যারা নিবন্ধন পরীক্ষা দিয়ে সনদ অর্জন করেছেন তারাই জাতীয় মেধাতালিকায় স্থান পেয়েছেন। এনটিআরসিএ’র মাধ্যমে নিয়োগপ্রাপ্তদের মধ্যে কোনো জাল সনদধারীর অন্তর্ভুক্ত হওয়ার সুযোগ নেই। তিনি জানান, কোনো শিক্ষক জাল সনদ সংগ্রহ করে থাকলেও তিনি মেধাতালিকায় অন্তর্ভুক্ত হতে পারবেন না। আর তা না হলে তারা গণবিজ্ঞপ্তিতে আবেদনও করতে পারবেন না। তাই জাল সনদধারীদের শিক্ষক পদে নিয়োগ সুপারিশের কোনো সুযোগ নেই। এ দিকে অনেক জাল সনদধারী এনটিআরসিএতে কর্মরতদের কাছ থেকে তথ্য নিয়ে জাল সনদ তৈরি করেন বলে অভিযোগ আছে। আবার শিক্ষক পদে চূড়ান্ত সুপারিশ পাওয়ার প্রলোভন দেখিয়ে এনটিআরসিএ’র কর্মকর্তা-কর্মচারীদের পরিচয় ব্যবহার করে টাকা নেয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ আছে। এসব অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে কর্মকর্তারা বলেন, এনটিআরসিএ’র কোনো কাজে হস্তক্ষেপের সুযোগ নেই।

অন্য দিকে চাকরি প্রার্থীদের কোনো প্রলোভনে বা মিথ্যা তথ্যে বিভ্রান্ত না হওয়ার আহ্বান জানিয়ে এনটিআরসিএ জানায়, টাকা দিয়ে কোনো কাজ হবে না। প্রয়োজনে এনটিআরসিএ কার্যালয়ে এসে খোঁজ নেবেন কিভাবে আমরা এ কাজগুলো করি। সফটওয়্যারে মানুষের হস্তক্ষেপের কোনো সুযোগ নেই। তাই লোভে পরে কাউকে টাকা না দেয়ার পরামর্শ দিয়েছেন সংস্থাটির কর্মকর্তারা। অপর এক সূত্র জানায়, দেশের বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে কয়েক হাজার জাল সনদধারী শিক্ষক কর্মরত আছেন। তাদের বিরুদ্ধে কঠোর অ্যাকশন শুরু করছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। ইতোমধ্যে পরিদর্শন ও নিরীক্ষা অধিদফতর জাল সনদে কর্মরত এক হাজার ১৫৬ জন শিক্ষককে শনাক্ত করেছে। তাদের তালিকা প্রস্তুত করে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে দিয়েছিল ডিআইএ। তাদের সনদ যে আসলেই জাল তা নিশ্চিত হয়ে তাদের বিরুদ্ধে ক্রিমিনাল কেস করার বিষয়ে চিন্তাভাবনা করছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়।

https://www.dailynayadiganta.com/first-page/742891