১২ এপ্রিল ২০২৩, বুধবার, ৪:২০

পাঁচ বছরে সিজার বেড়েছে ১১ শতাংশ

দেশে ৫ বছরে স্বাস্থ্যকেন্দ্র বা হাসপাতালকেন্দ্রিক প্রসব বৃদ্ধির কারণে সি-সেকশনের (সিজারিয়ান) সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে ১১ শতাংশ। ২০১৭ সালে সিজার ৩৪ শতাংশ হলেও ২০২২ সালে সেটা বৃদ্ধি পেয়ে ৪৫ শতাংশে দাঁড়িয়েছে। একই সময়ে কমেছে শিশুমৃত্যুর হার।

মঙ্গলবার রাজধানীর একটি হোটেলে জাতীয় জনসংখ্যা গবেষণা ও প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউট (নিপোর্ট) পরিচালিত বাংলাদেশ ডেমোগ্রাফিক অ্যান্ড হেলথ সার্ভে-২০২২ (বিডিএইচএস)-এর প্রাথমিক ফলাফলে এ তথ্য জানা যায়।

অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের সচিব ড. মু. আনোয়ার হোসেন হাওলাদার, পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক সাহান আরা বানু (এনডিসি), ইউএসএইড বাংলাদেশের পপুলেশন, হেলথ অ্যান্ড নিউট্রিশন পরিচালক মিজ ক্যারি রাসমুসেন। সেমিনারে সভাপতিত্ব করেন নিপোর্ট মহাপরিচালক মো. শফিকুল ইসলাম।

জরিপে বলা হয়েছে, বিগত যে কোনো সময়ের তুলনায় দরিদ্র নারীদের স্বাস্থ্যসেবা গ্রহণের পরিমাণ বৃদ্ধি পেয়েছে। ২০১১ সালের হিসাব অনুযায়ী নারীদের ক্ষেত্রে দরিদ্র জনগোষ্ঠীর তুলনায় ধনীদের স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্র থেকে সেবা গ্রহণের মাত্রা ছয়গুণ বেশি ছিল। ২০২২ সালে দরিদ্রদের তুলনায় ধনীদের সেবা গ্রহণ দ্বিগুণে নেমে এসেছে।

এতে আরও বলা হয়, ৮৮ শতাংশ নারী অন্তত একবার একজন প্রশিক্ষিত স্বাস্থ্যকর্মীর কাছ থেকে গর্ভকালীন বা এএনসি সেবা গ্রহণ করেছেন, যা ২০১৭ সালে ছিল ৮২ শতাংশ। কিন্তু করোনাভাইরাস মহামারি চলাকালীন চারবারের বেশি গর্ভকালীন সেবা বা এএনসি গ্রহণ করেছেন তারা। এই সংখ্যা ৪৭ শতাংশ থেকে হ্রাস পেয়ে ৪১ শতাংশে নেমে এসেছিল। জন্ম বিরতিকরণ সামগ্রী ব্যবহার বেড়েছে উল্লেখ করে জরিপে বলা হয়েছে, জন্ম বিরতিকরণ সামগ্রী ব্যবহারের হার বিগত সময়ের চেয়ে ২ শতাংশ বেড়েছে। জন্ম নিয়ন্ত্রণের ক্ষেত্রে আধুনিক পদ্ধতি ব্যবহারের হারও ৩ শতাংশ বেড়ে ৫৫ শতাংশে উন্নীত হয়েছে।

২০২২ সালের হিসাব অনুযায়ী, নারী প্রতি সন্তানের সংখ্যা ২ দশমিক ৩ জন। তবে কিশোরী বয়সেই সন্তান জন্ম দেওয়ার মাত্রা বিগত বছরগুলোর তুলনায় কমেছে। ২০১৭ সালে এ মাত্রা ছিল ২৮ শতাংশ। ২০২২ সালে তা কমে দাঁড়িয়েছে ২৩ শতাংশে। অল্প বয়সে বিয়ের সংখ্যা ধীরে ধীরে কমে যাচ্ছে। ২০ থেকে ২৪ বছরের নারীদের মধ্যে ১৮ বছরের আগেই বিয়ে হয়ে যাওয়ার মাত্রা ২০১১ সালে ছিল ৬৫ শতাংশ। ২০১৭ সালে এসে তা কমে দাঁড়ায় ৫৯ শতাংশে। ২০২২ সালে তা ৫০ শতাংশে নেমে আসে। জরিপে আরও বলা হয়, পাঁচ বছরের কম বয়সি শিশুদের মধ্যে প্রতি হাজারে ৩১ শিশু মারা যায়। এছাড়া ধারাবাহিক তিন বছরের গড় অনুযায়ী ৫ বছরের নিচে জীবিত শিশু জন্মের পর মৃত্যুর হার প্রতি হাজারে ৪৩ থেকে ৩১ জনে নেমে এসেছে। এছাড়া ২০২২ সালে এক বছরের কম বয়সের শিশুমৃত্যুর হার প্রতি হাজারে ২৫ জনে দাঁড়িয়েছে। এক মাসের কম বয়সের শিশুমৃত্যুর হার প্রতি হাজারে ২০ জন। পাঁচ বছরের নিচে শিশুদের ক্ষেত্রে বৃদ্ধি বাধাগ্রস্ত হচ্ছে অর্থাৎ সঠিক বৃদ্ধি ঘটছে না-এ হার ৩১ থেকে ২৪ শতাংশে নেমে এলেও কম ওজন নিয়ে জন্ম নেওয়া শিশুদের সংখ্যায় কোনো পরিবর্তন হয়নি।

https://www.jugantor.com/todays-paper/last-page/664736