১০ এপ্রিল ২০২৩, সোমবার, ৩:১৮

হারিয়ে গেছে ঢাকার খাল

ঢাকার দুই সিটি কর্পোরেশনের মেয়রদের বলা হয় ‘নগরপিতা’। ৪শ বছরের পুরনো শহর এই ঢাকা কার্যত অভিভাবকহীন। দেখার যেন কেউ নেই। দায়িত্বশীলদের ব্যর্থতা, অযোগ্যতা, দুর্নীতি, প্রভাবশালীদের খাল-বিল-নালা দখলে হারিয়ে যাচ্ছে পানির উৎস। গুলশান লেক, ধানমÐি লেক, হাতির ঝিল, রমনা লেক, সংসদ এলাকায় লেখ থাকলেও আড়াই কোটি জনবসতির রাজধানী ঢাকায় সে লেক ও পানির উৎস থাকার কথা তার সিকি ভাগও নেই। কেতাবের হিসেবে দেখা যায় দুই সিটি করপোরেশন এলাকায় খালের সংখ্যা ৪৭। আবার রিভার অ্যান্ড ডেলটা রিসার্চ সেন্টারের হিসাব অনুযায়ী, ঢাকা শহরে ৫৬টি খাল। এর মধ্যে দখল হয়ে গেছে ২৬টি। ফলে ইরামতের মহানগরী ঢাকায় খাল-বিল-পুকুর-নালায় পর্যাপ্ত পানি না থাকায় কোথাও অগ্নিকাÐ ঘটলে পানির অভাবে আগুন নেভানো যায় না। তার সবশেষ উদাহরণ বঙ্গবাজার হকার্স মার্কেট। বড় কোনো বিল্ডিং নয়, দোতালা মার্কেট চোখের সামনে আগুনে পুড়ে গেলেও পানির অভাবে সময়মতো আগুন নেভানো যায়নি। এতে করে কয়েক ঘন্টার মধ্যে পথে বসেছে কয়েক হাজার ব্যবসায়ী।

জানতে চাইলে বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতির (বেলা) প্রধান নির্বাহী সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেন, নগরীর খালগুলো ক্রমাগত ভরাট হচ্ছে। এখন যে কটা অবশিষ্ট আছে সেগুলোও ভরাট করা হচ্ছে। আমরা সবাই মিলে এ নগরটাকে হত্যা করেছি। এখন এ নগর আমাদের ওপর শোধ নিচ্ছে। ঠিক ফায়ার ব্রিগেডের কাছাকাছি থাকা বঙ্গবাজারেরই যদি এ অবস্থা হয়, তাহলে গোটা ঢাকা শহর তো আসলে অগ্ন্যুৎপাতের ঝুঁকিতে রয়েছে। আমাদের যারা নগর কর্তৃপক্ষ, যারা নগরপিতা, তারা কি দয়া করে একসঙ্গে বসে এ নগরীর নীল আর সবুজ হারিয়ে যাওয়াকে আদৌ থামাবেন?

প্রভাবশালী ভুমিদস্যু থেকে শুরু করে দায়িত্বশীলদের লোভের বলী হয়ে অনেক অত্যাচার সহ্য করছে রাজধানী ঢাকা। যাদের হাতে নিরাপদ থাকার কথা তাদের হাতেই নির্মমতার শিকার হচেছ চারশ বছরের পুরনো এই শহর। নাগরিকের সরাসরি ভোটে নির্বাচিত ঢাকার প্রথম মেয়র মোহাম্মদ হানিফের সময়ের আগে থেকে শুরু হওয়া দখল-দূষণ যেন এখনো থামছে না। অতপর সাদেক হোসেন খোকা সময়ও দখল-দূষণ বন্ধ হয়নি। ঢাকার নাগরিক সুবিধা বাড়ানোর জন্য ঢাকা ভাগ করে দু’টি সিটি কর্পোরেশন করা হয়। কিন্তু একটি চেয়ারের বদলে এখন মেয়রের দু’টি চেয়ার হলেও নাগরিক সুবিধা এবং ঢাকা বাসযোগ্য করা যায়নি। বরং ক্রমান্বয়ে ঢাকা শহর বসবাসের অনুপযোগী হয়ে যাচ্ছে। সরকারি ও ব্যক্তিগত উদ্যোগে সব সময়েই দখল হয়েছে ঢাকার পানির উৎস, খাল, পুকুর ও মাঠ। দীর্ঘ সময় ঢাকার বুকে আত্যাচার চললেও কোন কিছুই করার নেই যেন নগরবাসীর। উন্নয়ন, ব্যক্তিগত ও সরকারি ভবন আর অবাসন তৈরির নাম করে দখল-ভরাট করা হয়েছে জমি ও খালবিল।

পানির উৎস হারিয়ে যাচ্ছে রাজধানী থেকে। এ বিষয়ে যেন কারোরই টনক নড়ছে না। দিনে দিনে হারিয়ে গেছে রাজধানীর প্রায় দুই হাজার জলাধার। রাজধানীতে আগুন লাগলেই এখন জলাধারের অভাব অনুভব করেন সংশ্লিষ্টরা। সর্বশেষ গত মঙ্গলবার রাজধানীর বঙ্গবাজারে আগুন নিয়ন্ত্রণ করতে গিয়ে পানির সঙ্কটে পড়ে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা। এ কারণে আগুন নিয়ন্ত্রণে বেগ পেতে হয়। পরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফজলুল হক মুসলিম হলের পুকুর থেকে পাইপ দিয়ে পানি সংগ্রহ করে ফায়ার সার্ভিস। বঙ্গবাজারে আগুনের ঘটনায় ঢাকায় পানি সঙ্কটের বিষয়টি সামনে আসে। মার্কেটটিতে আন্ডারগ্রাউন্ডে পানির কোনো রিজার্ভার ছিলো না। রাস্তার পাশেও নেই কোনো ফায়ার হাইড্রেন্ট। আশাপাশে কোনো উন্মুক্ত জলাধারও নেই। পাশের ওসমানি উদ্যানের পুকুরটিতেও পানি নেই।

প্রাকৃতিক জলাধার সংরক্ষণে আইন থাকলেও তার খুব একটা প্রয়োগ নেই। ফলে যে যার ক্ষমতা দিয়ে জলাধারগুলো দখল করে ভরাট করে ফেলেছে। এতে পানির উৎস দিন দিন কমছে। সরকারি জরিপ অনুযায়ী, ঢাকায় আবাসন চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় গত তিন দশকে ১ হাজার ৯০০টি সরকারি ও বেসরকারি পুকুর ভরাট করা হয়েছে। যেসব খাল ও পুকুর এখনো দখল বা ভরাট হয়নি, সেগুলো ময়লা-আবর্জনার স্ত‚পে ঠাসা। ফায়ার সার্ভিসের সংরক্ষিত পানির বাইরে পানির বড় উৎস না পাওয়ায় আগুন নেভাতে গিয়ে পানি সঙ্কটে পড়েন ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা।

স্থপতি ইকবাল হাবিব বলেন, সিটি করপোরেশন চাইলেই ফায়ার হাইড্রেন্টের জন্য লাইন বসাতে পারে। ওয়াসার সাহায্যের কোনো দরকার নেই। সিটি করপোরেশনের সদিচ্ছা থাকলেই এটি করতে পারে। তবে সরকার যদি এই কাজে অর্থ বরাদ্দ না দেয়, সেই দায় তো সরকারকে নিতে হবে। নিমতলীর পরই আমরা বুঝেছি ফায়ার হাইড্রেন্ট না বসালে হবে না। কারণ আমরা ভয়াল একটি অপরিকল্পিত নগরায়ণ বুনে বসে আছি। আমাদের রক্ষার জন্য এই ব্যবস্থা নিতে হবে। ক্ষতিপূরণ দিয়ে এই সমস্যার সমাধান করা যাবে না। কিন্তু সেই জায়গায় সরকার নির্বিকার।

এদিকে, ঢাকা বিশ্বের অন্যতম জনবহুল শহর হলেও এই শহরের কোথাও ফায়ার হাইড্রেন্ট দেখা যায় না। এমনটি অসংখ্য বড় ভবন নির্মাণের আগে ফায়ার সার্ভিস থেকে পিলার হাইড্রেন্টের অনুমতিপত্র নিলেও বাস্তবে ভবনগুলোতে সেগুলোর অস্তিত্ব নেই। ফলে কোথাও আগুন লাগলে সেখানকার সবচেয়ে কাছাকাছি থাকা ফায়ার হাইড্রেন্টগুলোর সাথে পাইপ সংযুক্ত করে সহজেই পানি পেতে পারে ফায়ার সার্ভিস কর্মীরা। কিন্তু ঢাকায় এ ধরণের ব্যবস্থাই নেই। যদিও স¤প্রতি ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন শহরের গুরুত্বপূর্ণ জায়গাগুলো ফায়ার হাইড্রেন্ট বসানোর ঘোষণা দিয়েছে।

জানা যায়, শাহবাগ এলাকায় পাশাপাশি ৩টি পুকুর ছিল। একটি পুকুর ভরাট করে আজিজ সুপার মার্কেট করা হয়। আরেকটি পুকুর ভরাট করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের হল করা হয়েছে। তৃতীয় পুকুর ভরাট করে বিদ্যুৎ স্টেশন বানানো হয়েছে। রাজারবাগ পুলিশ লাইনের পুকুর ভরাট হয়েছে। ভরাট হয়েছে কমলাপুর রেলস্টেশনের পূর্ব দিকের পুকুর। অনেক আগেই ভরাট হয়েছে সেগুনবাগিচা, নারিন্দা, ধোলাইখাল, গোপীবাগ, দেবদোলাই ও সূত্রাপুর খাল। পান্থপথে যে একটি খাল ছিল, অনেকের কাছেই তা অজানা। পার্ক উন্নয়নের নামে ওসমানী উদ্যানের জলাধারটি এখন শুকিয়ে চৌচির। রাজধানী ঢাকার যেসব পুকুর, খাল ও ডোবা এখনো দখল বা ভরাট হয়নি, তার বেশির ভাগই পানিশূন্য। পান্থপথে একসময় খাল ছিল সেটিকে সড়ক বানানো হয়েছে। গ্রিন রোডের মাথায় বিশাল ওয়াটার বডি ছিল, পানি উন্নয়ন বোর্ড সেটিকে ভরাট করে পানি ভবন তৈরি করেছে।

ঢাকার ভ‚গর্ভস্থ পানির স্তর প্রতিবছর দুই থেকে তিন মিটার নিচে নেমে যাচ্ছে বলে ইনস্টিটিউট অব ওয়াটার মডেলিংয়ের এক সমীক্ষায় দেখা গেছে। বর্তমানে ঢাকা শহরের ভ‚গর্ভস্থ পানির স্তর এলাকাভেদে ৩৮ মিটার থেকে ৮২ মিটার নিচে। আর ঢাকা ওয়াসা শহরে ৬৬ শতাংশ ভ‚গর্ভস্থ এবং ৩৪ শতাংশ ভ‚উপরিস্থ পানি সরবরাহ করছে। ২০২৫ সালের মধ্যে রাজধানীতে ভ‚গর্ভস্থ পানির উৎসের ওপর নির্ভরতা ৩০ ভাগে নামিয়ে আনতে না পারলে পরিস্থিতি জটিল আকার ধারণ করবে। ভ‚-উপরিস্থ পানি হতে হবে ৭০ ভাগ। ১৯৮৫ থেকে এ পর্যন্ত ঢাকার ১০ হাজার হেক্টরের বেশি জলাভ‚মি, খাল ও নিম্নাঞ্চল হারিয়ে গেছে। এটা অব্যাহত থাকলে ২০৩১ সাল নাগাদ ঢাকায় জলাশয় ও নিম্নভ‚মির পরিমাণ মোট আয়তনের ১০ শতাংশের নিচে নেমে যাবে।

ঢাকা জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের তথ্য মতে, ঢাকার দুই সিটি করপোরেশন এলাকায় খালের সংখ্যা ৪৭। তবে রিভার অ্যান্ড ডেলটা রিসার্চ সেন্টারের হিসাব অনুযায়ী, ঢাকা শহরে ৫৬টি খালের অস্তিত্ব থাকলেও তার সবই মৃতপ্রায়। এর মধ্যে দখল হয়ে যাওয়া ২৬টি খাল উদ্ধারের পরিকল্পনা দিয়েছে দুই সিটি করপোরেশন। বাকি খালগুলোর অস্তিত্ব তারা এখনো খুঁজে পায়নি। ঢাকা শহরের যে খালগুলোর কথা বলা হচ্ছে সেগুলো ঢাকার চারপাশ দিয়ে বয়ে যাওয়া বুড়িগঙ্গা, শীতলক্ষ্যা, তুরাগ ও বালু নদীর সঙ্গে সংযুক্ত ছিলো আর জাতীয় নদী রক্ষা কমিশন ঢাকাসহ আশপাশের এলাকা মিলিয়ে মোট ৭৭টি খালের অস্তিত্ব চিহ্নিত করেছে।
মৎস্য বিভাগের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ১৯৮৫ সালে ঢাকায় প্রায় দুই হাজার পুকুর ছিল। এখন তা এসে ঠেকেছে মাত্র একশতে। ঢাকার পুকুর নিয়ে কয়েক বছর আগে করা একটি সমীক্ষা রয়েছে ইনস্টিটিউট অব ওয়াটার মডেলিংয়ের (আইডবিøউএম)। এতে দেখানো হয়, গত সাড়ে তিন দশকে হারিয়ে গেছে ঢাকার ১০ হাজার হেক্টরের বেশি জলাভ‚মি, খাল ও নিম্নাঞ্চল। জলাশয় ভরাটের এ প্রবণতা অব্যাহত থাকলে ২০৩১ সাল নাগাদ ঢাকায় জলাশয় ও নিম্নভ‚মির পরিমাণ মোট আয়তনের ১০ শতাংশের নিচে নেমে যাবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।

এতে আরো বলা হয়, ১৯৭৮ সালে ঢাকা ও আশপাশের বিভিন্ন এলাকায় জলাভ‚মির পরিমাণ ছিল ২ হাজার ৯৫২ হেক্টর এবং নিম্নভ‚মি ১৩ হাজার ৫২৮ হেক্টর। একই সময়ে খাল ও নদী ছিল ২ হাজার ৯০০ হেক্টর। রাজধানীর বৃষ্টির পানি এসব খাল দিয়েই পড়েছে নদীতে। ২০১৪ সালে ঢাকা ও আশপাশে জলাভ‚মি কমে দাঁড়িয়েছে ১ হাজার ৯৩৫ হেক্টর, নিম্নভ‚মি ৬ হাজার ১৯৮ হেক্টর এবং নদী-খাল ১ হাজার ২ হেক্টর। অর্থাৎ ৩৫ বছরে জলাশয় কমেছে ৩৪ দশমিক ৪৫ শতাংশ। এ সময়ের ব্যবধানে নিম্নভ‚মি কমেছে ৫৪ দশমিক ১৮ এবং নদী-খাল ৬৫ দশমিক ৪৫ শতাংশ।

বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব প্ল্যানার্স বলছে, সারাদেশে প্রতি বছর গড়ে ৪২ হাজার একর জলাশয় ভরাট করা হচ্ছে। আর শুধু ঢাকা শহরের দুই সিটি করপোরেশন এলাকা থেকেই বছরে গড়ে ৫ হাজার ৭৫৭ একর জলাভ‚মি হারিয়ে যাচ্ছে। ঢাকা মেট্রোপলিটন এলাকায় ৯ হাজার ৫৫৬ একরের মধ্যে ভরাট হয়েছে ৩ হাজার ৪৮৩ একর। পাশাপাশি ঢাকা বিশদ অঞ্চল পরিকল্পনা ২০১০ এর মধ্যে ১ লাখ ৯৩৭ একরের মধ্যে ২২ হাজার ৫১৬ একর জলাশয় ভরাট হয়ে গেছে। ২০১০ সালে ডিটেইল এরিয়া প্ল্যান (ড্যাপ) কর্তৃপক্ষ ১ হাজার ৫৯০ বর্গ কিলোমিটার এলাকা তথা রাজধানীর ১২ শতাংশ পানি সংরক্ষণের উদ্যোগ নিয়েছিল। এর মধ্যে পুকুর, খাল এবং লেকসহ অন্যান্য জলাশয় অন্তর্ভুক্ত ছিল। ২০১৭ সালে রাজউক জরিপ চালিয়ে দেখেছে, রাজধানীতে মাত্র ১ হাজার ৭৪৪ একর পানি সংরক্ষণ এলাকা রয়েছে।

ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. সেলিম রেজা বলেন, ফায়ার হাইড্রেন্ট বসানোর জন্য প্রকল্প নেয়া হয়েছে। কোন ধরনের হাইড্রেন্ট বসাব তা ঠিক করার প্রক্রিয়া চলছে। কারিগরি অন্যান্য বিষয়ও সংশ্লিষ্টরা খতিয়ে দেখছেন। ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের আওতাধীন পুরো এলাকা হাইড্রেন্ট বাসানো হবে। তবে এখানে ওয়াসার সহযোগিতা লাগবে। আশা করছি আমরা সেটি পেয়ে যাব।

ঢাকায় ফায়ার হাইড্রেন্ট না বসার জন্য সিটি করপোরেশন ও ওয়াসার মধ্যে সমন্বয়হীনতাকে দায় দিয়েছেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের নগর ও অঞ্চল পরিকল্পনা বিভাগের অধ্যাপক আদিল মুহাম্মদ খান। তিনি বলেন, ঢাকা অপরিকল্পিতভাবে গড়ে উঠছে, ফলে কখনো ফায়ার হাইড্রেন্ট বসানোর বিষয়ে কেউ মনোযোগী ছিল না। নিমতলীর অগ্নিকাÐের পর ফায়ার হাইড্রেন্ট বসানোর আলাপ জোরালোভাবে শুরু হলেও অদৃশ্য কারণে সিটি করপোরেশন, ওয়াসার মধ্যে পারস্পরিক বোঝাপড়া না হওয়ায় এটি আর আলোর মুখ দেখেনি। ওয়াসা ও সিটি করপোরেশন দুটি প্রতিষ্ঠানই স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের অধীনে। তাহলে সমন্বয় করে প্রকল্প নেয়ায় বাধা কোথায়? পুরান ঢাকায় যেসব পুকুর ছিল, সেগুলো তো আর নেই। আগুন লাগলে দূর থেকে পানি আনতে হচ্ছে।

বাংলাদেশ পরিবেশ বাঁচাও আন্দোলনের সভাপতি আবু নাসের খান বলেন, কেবল পানির উৎসের জন্য নয়, ঢাকা শহরে বৃষ্টির সময় যে পানিবদ্ধতা তৈরি হয় তা থেকে রক্ষার জন্য খাল, পুকুর ও জলাধারগুলো উদ্ধার প্রয়োজন। আর আমরা যদি ভ‚গর্ভের পানির ওপর নির্ভর করে বসে থাকি তাহলো তো চরম সঙ্কটে পড়ব। কারণ পানির স্তর তো নিচে নেমে যাচ্ছে। এক সময় হয়তো গভীর নলক‚পেও পানি পাওয়া যাবে না। দুই সিটিতে যে ৪৭টি খালের হিসাব সরকারই দিচ্ছে সেই খালগুলো আগে উদ্ধার করা হোক। আর সরকারি অনেক পুকুরও ভরাট হয়েছে। পার্কের অনেক পুকুর নাই। সেগুলো উদ্ধার করা হোক।


https://dailyinqilab.com/national/news/567984