২ এপ্রিল ২০২৩, রবিবার, ১১:১৭

বাড়ছে বেকারের সংখ্যা

ডলার সংকটের প্রভাব দেশের অর্থনীতিতে চাপ বেড়েছে। এর প্রভাব পড়েছে বেসরকারি খাতের ঋণে। বেসরকারি খাতে বিনিয়োগ বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। ফলে বাড়ছে বেকারের সংখ্যাও। বেড়েছে আমদানি ও আমদানি খরচও। চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে বেসরকারি খাতে ঋণের প্রবৃদ্ধি ১২ দশমিক ১৪ শতাংশে নেমে এসেছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের সংশ্লিষ্ট সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

কোন দেশে বিনিয়োগ কমলে সেদেশে এমনিতেই বেকারের সংখ্যা বেড়ে যায়। বিনিয়োগ না হলে দেশের কলকারখানা নির্মাণ কম হয়। এতে করে শিল্প উদ্যোক্তারা নতুন করে বিনিয়োগ না করে পুরাতন ব্যবসা টিকিয়ে রাখার জন্য চেষ্টা করে। নতুন কর আর শ্রমিক নিয়োগ করতে পারে না। ফলে বেড়ে যায় বেকারের সংখ্যা। তথ্য অনুযায়ী, চলতি ২০২২-২৩ অর্থবছরের প্রথম মাস জুলাইয়ে বেসরকারি খাতে ঋণের প্রবৃদ্ধি ছিলো ১৩ দশমিক ৯৫ শতাংশ। আগস্টে তা আরও বেড়ে দাঁড়ায় ১৪ দশমিক ০৭ শতাংশে। তবে সেপ্টেম্বরে ঋণের প্রবৃদ্ধি কিছুটা কমে আবার ১৩ দশমিক ৯৩ শতাংশে নেমে আসে। এরপর অক্টোবর ও নবেম্বর মাসে ঋণ প্রবৃদ্ধি হয় ১৩ দশমিক ৯১ শতাংশ করে। বেসরকারি খাতের ঋণের এই প্রবৃদ্ধি ডিসেম্বরে আরও কমে দাঁড়ায় ১২ দশমিক ৮৯ শতাংশে। ২০২৩ সালের জানুয়ারিতে এই খাতের ঋণ প্রবৃদ্ধি নেমে আসে ১২ দশমিক ৬২ শতাংশে এবং ফেব্রুয়ারিতে আরও কমে দাঁড়ায় ১২ দশমিক ১৪ শতাংশে। আর্থিক সংকটের কারণে বিশ্ব অর্থনীতিতে নেতিবাচক প্রবৃদ্ধি দেখা দিয়েছে। এসবের প্রভাব বাংলাদেশেও পড়তে শুরু করেছে। বিশেষ করে, ডলার সংকট বেশ ভোগাচ্ছে বাংলাদেশকে। এ সংকট সমাধানে সরকার রিজার্ভ থেকে ডলার সরবরাহ করছে। এতে রিজার্ভের উপরও নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে। বর্তমানে দেশের রিজার্ভের পরিমাণ কমে দাঁড়িয়েছে ৩১ বিলিয়ন ডলারের কাছাকাছি। আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) মানদ-ে হিসাব করলে রিজার্ভের পরিমাণ আরও কমে দাঁড়াবে ২৩ বিলিয়ন ডলারে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, বেসরকারি খাতের ঋণ প্রবৃদ্ধি বাংলাদেশ ব্যাংকের করা প্রাক্কলনের চেয়েও কম। চলতি ২০২২-২০২৩ অর্থবছরে ঘোষিত মুদ্রানীতিতে বেসরকারি খাতে ঋণের প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয় ১৪ দশমিক ১০ ভাগ। এর আগের অর্থবছর ২০২১-২০২২ এ প্রাক্কলন করেছিল ১৪ দশমিক ৮০ ভাগ। যদিও প্রাক্কলিত হারের চেয়ে তা ছিল অনেক কম।
এদিকে বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, ২০২২-২৩ অর্থবছরের প্রথম সাত মাসে আমদানি লেটার অফ ক্রেডিট (এলসি) খোলার পরিমাণ ছিল ৩৯ দশমিক ৪৬ বিলিয়ন ডলার। যা এর আগের অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় ১৩ বিলিয়ন ডলার বা ২৫ শতাংশ কম।

জানা যায়, চলতি অর্থবছরের প্রথম সাত মাসে (জুলাই-জানুয়ারি) পেট্রোলিয়াম ছাড়া ক্যাপিটেল মেশিনারি, ভোগ্যপণ্য, মধ্যবর্তী পণ্য এবং শিল্পের কাঁচামাল আমদানি ব্যাপকহারে কমেছে। এ সময় ক্যাপিটেল মেশিনারির জন্য এলসি খোলা হয় ১ দশমিক ৪১ বিলিয়ন ডলারের। গত বছরের একই সময়ে যার পরিমাণ ছিলো ৪ দশমিক ২৫ বিলিয়ন ডলার।

 

https://dailysangram.com/post/521003