১৭ মার্চ ২০২৩, শুক্রবার, ১১:৫৮

মাথা গোঁজার ঠাঁই চেয়ে মধ্যরাতে ঢাবি ভিসির বাসার সামনে শিক্ষার্থীদের অবস্থান

থাকার জায়গার দাবিতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে (ঢাবি) মধ্যরাতে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছে স্যার এ এফ রহমান হলের দ্বিতীয় বর্ষের (২০২০-২১ সেশন) শিক্ষার্থীরা। গত বুধবার দিবাগত রাত দেড়টার দিকে ভিসির বাসভবনের সামনে রুমের দাবিতে এই অবস্থান শুরু করে তারা। পরে ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক শেখ ওয়ালি আসিফ ইনানের আশ্বাসে এক ঘণ্টার বেশি সময় অবস্থানের পর রাত ২টা ৪০ মিনিটের দিকে সরে দাঁড়ায় শিক্ষার্থীরা।

শিক্ষার্থীরা জানিয়েছেন, স্যার এ এফ রহমান হলের ১১১ নম্বর রুমে ৪২ জন ছাত্র থাকেন। রুমটি ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক শেখ ওয়ালি আসিফ ইনানের অনুসারী ও হল শাখা সভাপতি রিয়াজুল ইসলামের নিয়ন্ত্রণাধীন। রুমটিতে ৮ জন থাকা সম্ভব। কিন্তু সেখানে ৪২ জন শিক্ষার্থী থাকেন। জায়গা সঙ্কুলান না হওয়ায় শিফট ভাগ করে তাদের রাতে ঘুমাতে হয়। শুধু তাই নয়, এইটুকুতে থাকার জন্যও অনেক নির্যাতন ও অপমান সহ্য করতে হয়।

অবস্থানরত শিক্ষার্থীরা নয়া দিগন্তকে বলেন, নিয়মিত ছাত্রলীগের প্রোগ্রাম করা সত্ত্বেও আমাদের আর একটা রুম দেয়া হচ্ছে না। ৪ জন থাকার রুমে ৪২ জন থাকা একপ্রকার অসম্ভব। সমস্যার কথা জানালে তারা (ইমিডিয়েট সিনিয়র) বলে, ‘তোরা পচে মর, আমাদের সমস্যা নাই’। ৫ মিনিটের আল্টিমেটামে আমাদের বের করে দিয়েছে। আমাদের জিনিসপত্র নেয়ার সময় পর্যন্ত তারা দেয়নি। শিক্ষার্থীরা বলেন, আমরা রুমের দাবি জানানোয় আমাদের সিনিয়ররা আমাদের রুম থেকে বের করে তালা লাগিয়ে দিয়েছে। আমাদের এখন যাওয়ার কোনো জায়গা নেই। আমরা মাথা গোঁজার জন্য একটু ঠাঁই চাই। অনেকের কালকে পরীক্ষা আছে। কয়েকজন অসুস্থ ছিল, তাদের ধরে ধরে বের করে এখানে নিয়ে এসেছি আমরা। আমাদের দাবি না মানলে আমরা এখান থেকে চলে যাবো না। এ সময় শিক্ষার্থীদের ‘দাবি মোদের একটাই- মাথা গোঁজার ঠাঁই চাই, ‘থাকার জন্য জায়গা চাই-দাবি মোদের একটাই, ‘আমাদের দাবি-মানতে হবে, ইত্যাদি সেøাগান দিতে দেখা যায়।

এ দিকে রাত আড়াইটায় ঘটনাস্থলে ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ওয়ালি আসিফ ইনান উপস্থিত হন। তিনি শিক্ষার্থীদের বুঝিয়ে রুম দেয়ার আশ্বাস দিয়ে হলে ফেরত পাঠান। তিনি বলেন, আমি শিক্ষার্থীদের অবস্থানের বিষয়টি জানতে পেরে বিবেকের টান থেকে এখানে এসেছি। এফ রহমান হল যেহেতু আমার বিশ্ববিদ্যালয় জীবনের প্রথম হল ছিল। আমি জানিও না তারা কারা বা কী হয়েছে। তবে আমি শুনেছি এফ রহমান হলের কিছু শিক্ষার্থী আবাসন নিয়ে কোনো সমস্যা হয়েছে এ জন্য তারা ভিসির বাসার সামনে এসে নিজেদের দুঃখ কষ্টগুলো প্রকাশ করেছে।

তিনি আরো বলেন, আমি তাদের বিষয়টি বুঝতে পেরে বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন ছাত্রনেতা হিসেবে ওদের সমস্যাটি দ্রুত সময়ের মধ্যে সমাধান করতে গিয়েছি। আমার বিশ্বাস আমি সমাধান করতে পেরেছি।

এ বিষয়ে কথা বলতে স্যার এ এফ রহমান হলের প্রভোস্ট অধ্যাপক কে এম সাইফুল ইসলামকে কল দিলে তিনি ক্লাসে থাকার কথা বলে কল কেটে দেন।

https://www.dailynayadiganta.com/last-page/734801