৫ মার্চ ২০২৩, রবিবার, ১২:০৫

লবণাক্ততায় বিল ডাকাতিয়ায় মরে যাচ্ছে কয়েক হাজার বিঘা জমির ধান

আবদুর রাজ্জাক রানা : পরিকল্পিতভাবে স্লুইস গেইট খুলে মাছ ধরা এবং চিংড়ি চাষের জন্য লবণাক্ত পানি ঢোকানোর কারণে দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম বিল ডাকাতিয়ায় চলতি বোরো মওসুমে মারা যাচ্ছে কয়েক হাজার বিঘার ধান।

ধান উৎপাদনে ব্যর্থ হয়ে ক্ষেত ছেড়ে দিয়েছে অসংখ্যা কৃষক। বর্তমানে ক্ষতিগ্রস্ত শত শত কৃষক পরিবারে উঠেছে কান্নার রোল। এ বিষয়ে সাবেক মন্ত্রী নারায়ণ চন্দ্র চন্দ এমপি দোষারোপ করলেন পাউবোর কর্মকর্তাদের এবং পাউবোর কর্মকর্তা দায়ী করলেন স্থানীয় জনগণকে।

খাদ্য উৎপাদনের অন্যতম ভান্ডার হচ্ছে বিল ডাকাতিয়া। দীর্ঘদিনের ফসল অজন্মা ও স্থায়ী জলাবদ্ধতার কারণে ৯০ দশকে জনগণ ওয়াপদার বেড়িবাঁধ কেটে জোয়ার ভাটা চালু করে। বিলে কৃষকেরা পকেট ঘের তৈরি করে মাছ ও ধান চাষ করে আসছিল।

উপজেলার কৃষ্ণনগর গ্রামের ধান চাষী বিদ্যুৎ মন্ডল, তারক চন্দ্র মন্ডল, শতদল ঘরামি, অলোক সরকার, বিদ্যুৎ ঘরামি, সুনিল মন্ডল ও রবিন সরকার জানান; শৈলমারী স্লুইস গেইট ভায়া শলুয়া, আমভিটা ও থুকড়া গেইট দিয়ে আশ্বিন-কার্তিক মাসে লবণ পানি ঢুকিয়ে চিংড়ি মাছ চাষ ও জাল দিয়ে মাছ ধরেন একটি মহল। ফলে বিল ডাকাতিয়ায় ব্যাপকভাবে লবণ পানি প্রবেশ করে। তাছাড়া শলুয়া গেইটের কপাট ভেঙে গেছে এবং আমভিটা এবং থুকড়া গেইটে কপাট না থাকার কারণে তাও অরক্ষিত হয়ে পড়েছে।

পূর্বে উঠানো পানির লবণাক্ততা তীব্র হওয়ায় বর্তমানে ধানের গাছ ব্যাপকভাবে মারা যাচ্ছে। ধান উৎপাদনে ব্যর্থ হয়ে ক্ষেত ছেড়ে দিয়েছে অসংখ্যা কৃষক। প্রদীপ জোয়ার্দার ও রাজু সরকারের মত অসংখ্যা কৃষক লবণাক্ততায় ধান গাছ মারা যাওয়ায় আশা ছেড়ে দিয়ে ক্ষেত পরিত্যক্ত ঘোষণা করেছে। রঘুনাথপুর ইউপি চেয়ারম্যান মনোজিৎ বালা বলেন, বিষয়টি এলাকার সবাই জানে আমি এ বিষয়ে কোন বক্তব্য দেব না। কারা পানি উঠায় পানি উন্নয়ন বোর্ড তা ভালোভাবে জানেন। ডুমুরিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শরীফ আসিফ রহমান বলেন, বিষয়টি আমি দেখছি।

স্থানীয় সংসদ সদস্য সাবেক মৎস্য ও প্রাণি সম্পদ মন্ত্রী নারায়ণ চন্দ্র চন্দ বলেন, বিষয়টি আমার জানা আছে। পানি উন্নয়ন বোর্ডকে আমি বিষয়টি নিয়ে বার বার বলেছি। কিন্তু তারা এ বিষয়ে গুরুত্ব দিচ্ছে না। চলতি বছরে কৃষকরা যে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে তা পূরণ হবার নয়। এগুলো চেয়ারম্যান মেম্বারদের দেখা উচিত। এমপির একার পক্ষ্যে কতটা দেখা সম্ভব। আমি উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে বিষয়টি নিয়ে বলছি।

এ ব্যাপারে পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আশরাফুল আলম বলেন, এর জন্য স্থানীয় জনগণ দায়ী। তারা কেন লবণ পানি উঠায়(?) আমাদের বোধগম্য নয়। ইতোমধ্যে শলুয়া গেইটে আমরা কপাট লাগিয়ে দিয়েছি।

https://dailysangram.com/post/518422