৪ মার্চ ২০২৩, শনিবার, ১২:৫১

রমযানের আগেই মাছ গোশতের বাজারে আগুন

রাজধানীর বাজারে মুরগি, ডিম ও সকল প্রকার শাক সবজির মূল্য বৃদ্ধি

পবিত্র রমযান আসার আগেই অস্বাভাবিক হারে বাড়ছে জিনিসপত্রের দাম। পবিত্র রমযানে রোজা রাখার পর শরীরের পুষ্টি যোগাতে মাছ গোশতের চাহিদা থাকে বেশি। কিন্তু এখন থেকেই ব্যবসায়ীরা সকল প্রকার মাছ গোশতের দাম বাড়িয়ে দিচ্ছে। রমযানের আগে এ দাম কমার কোন সম্ভাবনা নেই। ব্রয়লার মুরগীর কেজি ২৪০ থেকে ২৫০ টাকা বিক্রি হচ্ছে, গরুর গোশত ৭৫০ টাকা, খাসির গোশতের দাম ১০০০ থেকে ১১০০ টাকা কেজি। আর মাছের দামও চড়া। ৩০০ টাকার নিচে ভালো কোন মাছ বাজারে নেই। তেলাপিয়া ও পাঙ্গাস মাছের দামও দুইশত টাকার বেশি। অপরদিকে বৃদ্ধি পাওয়া জিনিসপত্রের দামও কমছে না। সবজির দামও ঊর্ধ্বমুখী। নতুন করে বেড়েছে ডাল ও ছোলার দাম।

গতকাল শুক্রবার রাজধানীর বিভিন্ন বাজারে দেখা গেছে, প্রতি কেজি গরুর গোশত বিক্রি হচ্ছে ৭৫০ টাকা দরে। খাসির গোশতের দাম প্রতিকেজি ১০০০ থেকে ১১শ’ টাকা। আর বকরির গোশত ৯০০ টাকা। এদিকে টানা তিন সপ্তাহ ধরে অস্থির ব্রয়লার মুরগি ও ডিমের দাম। প্রতি কেজি ব্রয়লার এখন ২৪০-২৫০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। আর হালিপ্রতি ডিমের দাম ৪৮-৫০ টাকা। সেই উত্তাপ এখন ছড়িয়েছে মাছের বাজারেও। প্রকারভেদে সাধারণ চাষের মাছের দাম কেজিতে বেড়েছে প্রায় ৪০-৫০ টাকা পর্যন্ত। অন্যদিকে ইলিশ-চিংড়ির পাশাপাশি দেশী পদের (উন্মুক্ত জলাশয়ের) মাছগুলোর দাম বেড়েছে ১০০-৩০০ টাকা পর্যন্ত।

গোশত বিক্রেতা সাদিকুল ইসলাম জানান, গত দুই সপ্তাহের ব্যবধানে ছাগলের গোশতের দাম ১০০ থেকে দেড়শ’ টাকা বেড়েছে। মানুষ গোশত কিনছে কম। বিশেষ করে খাসির গোশতের ক্রেতা একদমই নেই। আর গত মাসে গরুর গোশত ৭০০ টাকা কেজি বিক্রি হয়েছে। এখন ৫০ টাকা বাড়তি। সপ্তাহখানেক আগেও ২০-৩০ টাকা কমে বিক্রি করা গেছে। এখন যাচ্ছে না।
মাছের বাজারে দেখা গেছে, চাষের পাঙাশ-তেলাপিয়া থেকে শুরু করে দেশি প্রজাতির সব ধরনের মাছের দাম বেড়েছে। আগে

বাজারে প্রতি কেজি পাঙাশ বিক্রি হতো ১৫০-১৬০ টাকা, যা এখন ১৮০-২০০ টাকায় ঠেকেছে। অন্যদিকে তেলাপিয়া মাছের কেজি হয়েছে ২২০-২৫০ টাকা। যা আগে ১৮০-২০০ টাকায় কেনা যেত।

বাজারে সাধারণত গরিব ও নিম্ন-মধ্যবিত্ত শ্রেণির ক্রেতারা ব্রয়লার মুরগি ও মাছের ওপর নির্ভরশীল। তাদের মধ্যে অনেকে এসব নিত্যপণ্যের দাম বাড়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেন।

মাছ বিক্রেতারা জানান, দোকানে প্রতি কেজি চিংড়ি বিক্রি হচ্ছে ৬০০-১০০০ টাকায়। যা আগে ৫০০-৮০০ টাকার মধ্যে বিক্রি করতেন। অন্যান্য চাষের মাছগুলোও বেশ বাড়তি দামে বিক্রি করতে হচ্ছে। রুই, কাতলা, মৃগেল বিক্রি হচ্ছে ৩৪০-৩৬০ টাকা কেজিতে, যা আগে ২৮০-৩২০ টাকা ছিল। অন্যদিকে বাজারে দেশি প্রজাতির টেংরা, শিং, গচি, বোয়াল মাছের কেজি ৬৫০-৮০০ টাকা। যা ছিল ৬০০-৬৫০ টাকার মধ্যে। তবে এসব মাছ চাষের হলেও কিছুটা কম দামে মিলছে। অন্যদিকে মুদি বাজারে তেল, চিনি, আটা, ময়দা, গুঁড়া দুধসহ অন্যান্য বেশকিছু পণ্য বাড়তি দামে আটকে রয়েছে। সপ্তাহের ব্যবধানে নতুন করে বেড়েছে ডাল ও ছোলার দাম। প্রতি কেজি ছোলা বিক্রি হচ্ছে ১০০-১০৫ টাকা দরে, যা গত সপ্তাহে ৯০-৯৫ টাকা ছিল।

একইভাবে প্রতি কেজি ১০ টাকা বেড়ে বুটের ডাল ৯৫-১০০ এবং মাসকলাইয়ের ডাল ১৫৫-১৬০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। এদিকে বাজারে শীতের সবজির দাম ১০-২০ টাকা বেড়েছে। আর গ্রীষ্মের যে নতুন সবজি এসেছে তাতে হাত দেওয়ার অবস্থা নেই। প্রতিকেজি বেগুন ৮০ টাকা, করলা ১২০ টাকা, বরবটি ১২০ টাকা, পটল ১২০ টাকা, ঝিঙা ৮০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। অন্যদিকে বাজারে এখন পেঁয়াজের দাম কম থাকলেও কমেনি আদা-রসুনের দাম। প্রতিকেজি আদা বিক্রি হচ্ছে মানভেদে ১৪০-২৮০ টাকা ও রসুন ১৬০-২২০ টাকা দরে।

https://dailysangram.com/post/518347