২৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৩, বৃহস্পতিবার, ১২:০২

গণমাধ্যম সঙ্কুুচিত হওয়া উদ্বেগজনক : জাতিসঙ্ঘ

বাংলাদেশে গণমাধ্যমের কাজের সুযোগ সঙ্কুচিত হওয়ায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছে জাতিসঙ্ঘ। গতকাল নিউ ইয়র্কে জাতিসঙ্ঘ সদর দফতরে নিয়মিত সংবাদ সম্মেলনে এক প্রশ্নের জবাবে বিশ্বসংস্থার মুখপাত্র স্টিফেন ডুজারেক বলেন, বাংলাদেশে কিছু মিডিয়া আউটলেটে কাজের ক্ষেত্র সঙ্কুচিত হওয়ায় আমরা ইতোমধ্যে উদ্বেগ প্রকাশ করেছি। এ ব্যাপারে আমাদের অবস্থান আমরা অব্যাহতভাবে ব্যক্ত করে যাবো।

ডুজারেককে প্রশ্ন করা হয়েছিল, আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের আগে বাংলাদেশ সরকার প্রধান বিরোধী দলের সংবাদপত্র দৈনিক দিনকালের প্রকাশনা বন্ধ করে দিয়েছে। পত্রিকাটিতে শতাধিক সাংবাদিক ও প্রেসকর্মী কাজ করতেন। পত্রিকাটি এমন ধরনের সংবাদ পরিবেশন করত, যা সাধারণত মূল ধারার গণমাধ্যমগুলো কভার করত না। এ ব্যাপারে আপনার মন্তব্য কী?

এ দিকে বাংলাদেশের সাংবাদিকদের ওপর আইনি হয়রানি বন্ধ করতে সরকারকে অনুরোধ করেছেন জাতিসঙ্ঘের বিশেষজ্ঞরা।
জাতিসঙ্ঘের চারজন বিশেষজ্ঞ জেনেভা থেকে দেয়া এক যৌথ বিবৃতিতে সাংবাদিক ও মানবাধিকার কর্মীদের ওপর প্রলম্বিত আইনি প্রক্রিয়া চালিয়ে যাওয়ার চর্চা বন্ধ করার আহ্বান জানান। তারা দৈনিক প্রথম আলোর অনুসন্ধানী সাংবাদিক রোজিনা ইসলামের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রত্যাহার করতে বাংলাদেশ সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।

বিবৃতিতে বলা হয়, বাংলাদেশসহ বিভিন্ন দেশে সাংবাদিক ও সম্পাদকদের বিরুদ্ধে গুরুতর অভিযোগ আনার এবং পরে সেই সব মামলার মীমাংসা না করে ঝুলিয়ে রাখার বিপজ্জনক প্রবণতা লক্ষ করা যায়। এসব অভিযোগ প্রায়ই ভিত্তিহীন হয়। রোজিনা ইসলামের বিরুদ্ধে করা মামলায় এই দীর্ঘসূত্রতার প্রবণতার প্রতিফলন দেখা যায়। সাংবাদিকদের হুমকি দেয়া, ভয় দেখানো, হয়রানি করা ও চুপ করিয়ে দেয়ার উপায় হিসেবে এই পন্থা অবলম্বন করা হয়।

অনুসন্ধানী প্রতিবেদন থামিয়ে দিতে, গণমাধ্যমের স্বাধীনতা হরণ করতে এবং সেলফ সেন্সরশিপের সংস্কৃতিকে উৎসাহিত করতে বিচার বিভাগকে ব্যবহার করা উচিত নয় বলে মন্তব্য করে এতে বলা হয়, সাংবাদিকদের ওপর নিপীড়নমূলক আইনি কার্যক্রম পুনর্বিবেচনা করা, ঔপনিবেশিক আমলের দাফতরিক গোপনীয়তা আইন ও সম্প্রতিকালের ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন পর্যালোচনা করা প্রয়োজন। একই সাথে সরকারের উচিত দেশের আইন ও তার প্রয়োগকে মানবাধিকার রক্ষায় আন্তর্জাতিক দায়বদ্ধতার সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ করা। স্বাধীন, সেন্সরশিপবিহীন ও অবাধ গণমাধ্যম গণতন্ত্রের অন্যতম হাতিয়ার।

বিবৃতিদাতা জাতিসঙ্ঘের বিশেষজ্ঞরা হলেন, মত প্রকাশ ও প্রচারের অধিকার সংরক্ষণ এবং উন্নয়ন বিষয়ক স্পেশাল র‌্যাপোর্টিয়ার আইরিন খান, মানবাধিকারকর্মীদের অধিকার বিষয়ক স্পেশাল র‌্যাপোর্টিয়ার মেরি ললর, নারী ও শিশুদের প্রতি সহিংসতার কারণ ও পরিণতি বিষয়ক স্পেশাল র‌্যাপোর্টিয়ার রিম আলসেলাম এবং বিচারক ও আইনজীবীদের স্বাধীনতাবিষয়ক স্পেশাল র‌্যাপোর্টিয়ার মার্গারেট স্যাটাথুয়েট।

https://www.dailynayadiganta.com/first-page/729816