১৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৩, বুধবার, ৩:১৭

যুক্তরাষ্ট্রের গণতন্ত্র সম্মেলনে আমন্ত্রণ পায়নি বাংলাদেশ

যাচ্ছে পাকিস্তান নেপাল ও মালদ্বীপ

মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের আহ্বানে আসছে গণতন্ত্র সম্মেলনে এবারও বাংলাদেশ আমন্ত্রণ পায়নি বলে জানা গেছে। আগামী ২৯ ও ৩০ মার্চ ভার্চুয়ালি ওই বৈশ্বিক সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে। বাংলাদেশ আমন্ত্রণ না পেলেও দক্ষিণ এশিয়ার সার্কভুক্ত ভারত, পাকিস্তান, নেপাল ও মালদ্বীপ আমন্ত্রণ পেয়েছে।

এবারের সম্মেলনে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের কর্তৃত্ববাদী সরকারকে প্রতিহত করা, দুর্নীতি দমন ও মানবাধিকার সমুন্নত রাখা এ তিন লক্ষ্যে অঙ্গীকার পূরণের অগ্রগতি এবং ভবিষ্যতের চ্যালেঞ্জ বিষয়ে আলোচনা হবে। মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ক্ষমতায় আসার পর ২০২১ সালে যুক্তরাষ্ট্র প্রথমবারের মতো বিশ্বের গণতান্ত্রিক দেশগুলোকে নিয়ে ‘গণতন্ত্রের বৈশ্বিক সম্মেলন’র আয়োজন করেছিল। সে সম্মেলনে ১১০টি দেশের প্রায় সাড়ে সাতশ প্রতিনিধি অংশ নিয়েছিলেন। সেই সম্মেলনে বাংলাদেশ আমন্ত্রণ পায়নি। তখন ঢাকার তরফে পরবর্তী সম্মেলন অর্থাৎ দ্বিতীয় সম্মেলনে আমন্ত্রণ পাওয়ার প্রত্যাশা ব্যক্ত করা হয়েছিল। রাষ্ট্রবিজ্ঞানীদের মতে বিশ্বের যে সব দেশ গণতান্ত্রিক শুধু সে সব দেশকে সম্মেলনে আমন্ত্রণ জানানো হয়।

বাইডেন প্রশাসন আয়োজিত গণতন্ত্র সম্মেলনে এবারও আমন্ত্রণ না পাওয়ায় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এ নিয়ে বিস্তর আলোচনা-সমালোচনা চলছে। নেটিজেনরা লিখছেন গণতান্ত্রিক দেশের প্রথম শর্তই হলো জনগণের ভোটের অধিকার নিশ্চিত করা। তারপর মানবাধিকার, আইনের শাসন, সংবাদপত্রের স্বাধীনতা ইত্যাদি। ২০১৪ ও ২০১৮ সালের মতো পাতানো নির্বাচনের মাধ্যমে সরকার গঠন করা কোনো গণতান্ত্রিক দেশ হতে পারে না।
মার্কিন গণতন্ত্র শীর্ষ সম্মেলনে আমন্ত্রণ না পাওয়া প্রসঙ্গে পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন সাংবাদিকদের বলেছেন, আমন্ত্রণ না পাওয়া নিয়ে বাংলাদেশ খুব একটা চিন্তিত নয়। গণতন্ত্রের সম্মেলনে আমন্ত্রণ জানালেই গণতন্ত্র ভালো প্রমাণ হবে তা কিন্তু নয়। কোন দেশকে কি বিবেচনায় আমন্ত্রণ করা হয়েছে তা যুক্তরাষ্ট্রই ভালো বলতে পারবে।

এবারের গণতন্ত্র সম্মেলনে যুক্তরাষ্ট্রের সহআয়োজক হিসেবে রয়েছে কোস্টারিকা, দক্ষিণ কোরিয়া, নেদারল্যান্ড এবং জাম্বিয়া। সম্মেলনে দক্ষিণ এশিয়ার চার দেশ ভারত, পাকিস্তান, নেপাল ও মালদ্বীপসহ বিশ্বের ১১১টি দেশ আমন্ত্রণ পেয়েছে।

এদিকে দায়িত্বশীল একটি সূত্র জানায়, বাইডেনের গণতন্ত্র সম্মেলনে আমন্ত্রণের পূর্বশর্ত হিসেবে কিছু বিষয়ে বাংলাদেশের আগাম প্রতিশ্রæতি চেয়েছিল মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। কিন্তু ঢাকা তাতে তাৎক্ষণিক সাড়া দেয়নি। ফলে আমন্ত্রণ পাওয়ার বিষয়টি শেষ পর্যন্ত ঝুলে যায়।

বাংলাদেশকে কেন আমন্ত্রণ জানানো হয়নি প্রসঙ্গে সাংবাদিকদের পক্ষ থেকে যোগাযোগ করা হলে ঢাকাস্থ যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাসের মুখপাত্র (ভারপ্রাপ্ত) ব্রায়ান শিলার গণমাধ্যমকে বলেন, বিশ্বের বিভিন্ন অঞ্চলের কিছু বিষয়ের ও বৈচিত্রের প্রতিনিধিত্ব করে এমন দেশগুলোকে প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন গণতন্ত্র সম্মেলনে আমন্ত্রণ জানিয়েছেন।

প্রথম শীর্ষ সম্মেলনে অংশগ্রহণকারী দেশগুলোকে গণতন্ত্র শক্তিশালী করতে প্রতিশ্রæতিবদ্ধ হওয়ার আহŸান জানায় যুক্তরাষ্ট্র এবং ২০২২ সালকে তা ‘বাস্তবায়নের বছর’ হিসেবে ঘোষণা করে।

মুখপাত্র ব্রায়ান শিলার বলেন, আমরা বাংলাদেশসহ আগের সম্মেলনে আমন্ত্রণ না পাওয়া দেশগুলোর গণতন্ত্রকে শক্তিশালী করতে এবং কর্তৃত্ববাদ ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে লড়াই এবং মানবাধিকারের প্রতি শ্রদ্ধায় তাদের প্রতিশ্রæতির বিষয়ে কর্মপরিকল্পনা প্রকাশ করতে বলেছি। দ্বিতীয় সম্মেলনে আমন্ত্রণ জানানোর ক্ষেত্রে এগুলো বিবেচনায় নেওয়া হয়েছে। 

https://www.dailyinqilab.com/article/555655