৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৩, সোমবার, ৭:০৮

আখের অভাবে বন্ধ দর্শনা চিনিকলও

চুয়াডাঙ্গার দর্শনা চিনিকল কেরু এ্যান্ড কোম্পানীর চিনি উৎপাদন বন্ধ হয়ে গেছে আখের অভাবে। মাত্র ৪২ দিন চলার পর চিনিকলটি মাড়াই মৌসুম শেষ করেছে গত শুক্রবার। আখের অভাবে মাড়াই মৌসুম শেষ করা হয়েছে বলে একাধিক সূত্র নিশ্চিত করেছে।

গত বছরের ২৩ ডিসেম্বর থেকে চিনিকলটি আনুষ্ঠানিকভাবে মাড়াই মৌসুম শুরু করে। ওই সময় নির্ধারণ করা হয়েছিল, ৫৩ কার্যদিবসে ৬২ হাজার টন আখ মাড়াই করে তিন হাজার ৮৮৪ টন চিনি উৎপাদন করা হবে।

মাড়াই মৌসুমের নির্ধারিত লক্ষ্যমাত্রা পূরণ করতে পারেনি চিনিকলটি। তার আগেই আখের অভাবে মিলটি বন্ধ করে দিতে হয়েছে। ৪২ দিনে মিলটি ৪৬ হাজার ৯৩৮ টন আখ মাড়াই করেছে।

সংশ্লিষ্ট একাধিক সূত্র মনে করছে, এ বছর চিনিকলটির বড় ধরনের লোকসান হবে চিনি খাতে।

এ ব্যাপারে চিনিকলের ব্যবস্থাপক (কৃষি) আশরাফুল আলম ভুঁইয়া বলেন, ৪২ দিন মিল চলার পর বন্ধ হয়েছে তা ঠিক। তবে এখনই চিনি খাতে লাভ-লোকসানের বিষয়টি বলা সম্ভব নয়।

তিনি আরো বলেন, আখের ফলন এ বছর বেড়েছে। সেই হিসাবে আগের বছরের চেয়ে এ বছর কেরু এ্যান্ড কোম্পানী চিনি খাতে ভালো অবস্থানে থাকবে।

সূত্র জানায়, চিনি খাতে বছরের পর বছর লোকসান দিলেও মদ উৎপাদন করে কেরু এ্যান্ড কোম্পানী প্রতিবছরই লাভ করে। ২০২১-২২ অর্থবছরে কম্পানিটি চিনি খাতে লোকসান দিয়েছিল ৫০ কোটি টাকা। তার পরও লোকসান সমন্বয় করে ওই বছর কম্পানিটির লাভ ছিল প্রায় ৭০ কোটি টাকা।

২০২০-২১ অর্থবছরে কেরু এ্যান্ড কোম্পানী চিনি খাতে লোকসান গুনেছে ৭২ কোটি টাকা। ওই বছর লোকসান ও অ্যালকোহল খাতের লাভ সমন্বয় করে কম্পানিটি লাভ করেছিল ১৪ কোটি ৬৩ লাখ টাকা।

একইভাবে আগের বছরগুলোতেও কেরু এ্যান্ড কোম্পানী চিনি খাতে লোকসান এবং অ্যালকোহল খাতে লাভ করে এসেছে। লাভ-লোকসানের সমন্বয় করে প্রতিবছরই কম্পানিটি লাভজনক প্রতিষ্ঠান বলে ঘোষণা দিয়েছে এবং সরকারকে মোটা অঙ্কের রাজস্ব দিয়েছে।

কেরু এ্যান্ড কম্পানি চিনি ও অ্যালকোহল ছাড়াও করোনাভাইরাস মহামারির সময় স্যানিটাইজার উৎপাদন করেছিল। স্যানিটাইজার উৎপাদনেও লাভবান ছিল এই কম্পানি। এখন স্যানিটাইজার উৎপাদন বন্ধ রেখেছে মিলটি।

কেরু এ্যান্ড কোম্পানীর ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ মোশারফ হোসেন বলেন, ‘এই কম্পানি আধুনিকায়নের উদ্যোগ রয়েছে। এ বছর উন্নত জাতের আখ চাষ করে সফলতা এসেছে। অল্প জমিতে বেশি আখ উৎপন্ন হবে। কৃষকরা আখ চাষে আগ্রহী হবেন। দু-এক বছরের মধ্যে এর সুফল বোঝা যাবে না। সময় লাগবে কয়েক বছর। তারপর একটা ভালো ফলের দিকে যাবে কেরু এ্যান্ড কোম্পানী।’


https://www.kalerkantho.com/print-edition/last-page/2023/02/06/1244156