২৮ জানুয়ারি ২০২৩, শনিবার, ৬:৪৬

আদা-রসুন চাল-চিনি মরিচ ও সবজির মূল্য আরো বেড়েছে

অস্বাভাবিক হারে বেড়েই চলছে নিত্যপণ্যের দাম। কখনো এটা, আবার কখনো ওটা। সরকারও ব্যবসায়ীদের দাবিতে বিভিন্ন পণ্যের দাম বৃদ্ধি করে ঘোষণা দিচ্ছে। অল্প আয়ের মানুষের এখন ত্রাহি অবস্থা। তাদের প্রশ্ন, এভাবে আর কত বাড়বে নিত্যপণ্যের দাম? শীতের মওসুম শেষের দিকে। তবু বাজারে শীতের সবজির দাম কমেনি। সপ্তাহের ব্যবধানে রসুনের দাম কেজি প্রতি বেড়েছে ৩০ থেকে ৪০ টাকা। আমদানি করা শুকনো মরিচের দাম কেজিতে বেড়েছে ১৩০। সরু চালের দামও নতুন করে বেড়েছে।

গতকাল শুক্রবার রাজধানীর বিভিন্ন বাজারে দেখা গেছে, প্রতি কেজি আলু ৩০ টাকা, কাঁচামরিচ ১২০ টাকা, ধনিয়া পাতা ১২০ টাকা, টমেটো ৫০ টাকা, শিম ৪০ টাকা, ঢ্যাঁড়স ১২০ টাকা, করলা ১২০ টাকা, বাঁধাকপি আকার অনুযায়ী ৫০-৪০ টাকা, ফুলকপি আকার অনুযায়ী ৫০-৪০ টাকা, গাজর ৫০-৬০ টাকা, চাল কুমড়া প্রতিটি ৫০-৬০ টাকা, মিষ্টি কুমড়ার ৪০-৫০ টাকা, বরবটি ১২০ টাকা, চিচিঙ্গা ৮০ টাকা, পটল ৬০, ঢেঁড়স ৬০, কচুর লতি ৭০-৮০, ঝিঙ্গা ১০০ টাকা, ধুন্দুল ৬০-৭০ টাকা, বেগুন ৬০ টাকা ও পেঁপে ৩০ টাকা করে বিক্রি হচ্ছে। অন্যদিকে প্রতি পিস লাউ ৮০-১০০ টাকা, প্রতি হালি কাঁচকলা ৪০ টাকা, প্রতি আটি লাল ও পালন শাক ১০-১৫ টাকা করে বিক্রি হচ্ছে। বাজারে কাঁচামরিচ প্রতিকেজি বিক্রি হচ্ছে ১০০ থেকে ১২০ টাকায়। আগে কাঁচামরিচের কেজি ছিল ৮০ থেকে ৯০ টাকা। এছাড়া বাজারে কাঁচকলার হালি বিক্রি হচ্ছে ২০-৩০ টাকায়। লেবুর হালি বিক্রি হচ্ছে ২০ টাকা

এদিকে নতুন পেঁয়াজের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৩৫ থেকে ৪০ টাকা। মসলার বাজারে দাম বেড়েছে রসুনের। প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ১২০-১৮০ টাকায়। দেশি আদা ১৫০-২০০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে। চায়না আদার কেজি

টিসিবি বলছে, গত বছর একই সময়ে দেশে আদার দাম মানভেদে ৫০-১১০ শতাংশ, রসুনের দাম ৪৫-১২৭ শতাংশ এবং শুকনো মরিচের দাম ৭৫-১৫২ শতাংশ কম ছিল।

প্রায় বেশিরভাগ পণ্যের দর বৃদ্ধির মধ্যে বাজারে কমেছে কেবল আটার দাম। খোলা আটার কেজি বিক্রি হচ্ছে ৬০ টাকা। প্যাকেট আটার কেজি ৬৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। আগে কেজি ছিল ৭০ টাকা। ২ কেজির প্যাকেট আটা বিক্রি হচ্ছে ১৩০ টাকায়। আগে কেজির প্যাকেট ছিল ১৪০-১৪৫ টাকা।

বাজারে দেশি মসুরের ডালের কেজি বিক্রি হচ্ছে ১৪০ টাকা। ইন্ডিয়ান মসুরের ডালের কেজি ১২০-১২৫ টাকা। বাজারে সয়াবিন তেলের লিটার বিক্রি হচ্ছে ১৮৭ টাকা। লবনের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৩৮-৪০ টাকা।

শুকনো মরিচের দাম বেড়েছে অস্বাভাবিক হারে। ব্যবসায়ীরা বলছেন, আগে যে শুকনো মরিচ প্রতি কেজি বিক্রি হতো ১০০-১৫০ টাকায় তা এখন ৫০০ টাকা পর্যন্ত পৌঁছেছে। আমদানি কমে যাওয়ার পাশাপাশি উৎপাদন সংকটে পণ্যটির রেকর্ড পরিমাণ দাম বেড়েছে। বর্তমানে শুকনো মরিচ কেজিপ্রতি সর্বনিম্ন ৩৫০-৫০০ টাকায় ওঠানামা করছে। আসন্ন রমজানের আগে সরবরাহ না বাড়লে দাম আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা ব্যবসায়ীদের।

এদিকে চিনির বাজারও উত্তপ্ত রয়েছে। এখনই প্রতি কেজি ১২০ টাকার নিচে চিনি পাওয়া যাচ্ছে না। আগামী ফেব্রুয়ারি মাস থেকে নতুন করে প্রতি কেজি চিনিতে দাম বাড়বে পাঁচ টাকা। টিসিবির তথ্য অনুযায়ী, গত এক সপ্তাহে চিনির দাম বেড়েছে প্রতি কেজিতে ২ শতাংশ বেশি।

বৃহস্পতিবার এক বিজ্ঞপ্তিতে চিনির দাম বাড়ানোর সিদ্ধান্তের কথা জানায় চিনি পরিশোধনকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর মালিকদের সংগঠন বাংলাদেশ সুগার রিফাইনার্স অ্যাসোসিয়েশন। সবশেষ গত বছরের ১৭ নবেম্বর খুচরা পর্যায়ে চিনির দাম বাড়ানো হয়েছিল। নতুন করে দাম বাড়ায় চিনির বাজার লাগামছাড়া হতে পারে বলে আশঙ্কা খুচরা বাজারের ব্যবসায়ীদের।

বাজারে গুঁড়ো ডানো দুধ বিক্রি হচ্ছে গত সপ্তাহের তুলনায় ৭০ টাকা বেশি দামে। দোকানিরা গত সপ্তাহে ৮৮০ টাকায় ১ কেজি ডানো গুঁড়ো দুধ বিক্রি করলেও এই সপ্তাহে বিক্রি করছেন ৯৫০ টাকা। গত সপ্তাহে ১২৫০ টাকায় ১ কেজি ইলিশ পাওয়া গেলেও এখন কিনতে লাগছে ১৪০০ টাকা। ১৮০ টাকা কেজি দরের দেশি আদা এই সপ্তাহে ২০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

এদিকে বাজারে ফের সরু চালের দাম বেড়েছে। বাজারভেদে সরু মিনিকেট চাল ৬৮ থেকে ৭৫ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। মাঝারি মানের বি আর ২৮ বিক্রি হচ্ছে ৬০-৬২ টাকা। ভালো মানের নাজিরশাইল চালের কেজি ৭৫ থেকে ৮৫ টাকা। আর মোটা চাল ৫৪-৫৫ টাকা কেজি।

বাজারে গরুর গোশতের কেজি ৬৮০-৭০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। খাসির গোশতের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৯০০-১০০০ টাকায়। এদিকে প্রতি কেজিতে প্রায় ১০ টাকা বেড়েছে ব্রয়লার মুরগির দাম। ব্রয়লার মুরগির দাম বেড়ে প্রতি কেজি ১৫৫-১৬০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। পাশাপাশি ডিমের দামে দেখা দিয়েছে বিশৃঙ্খলা। কোনও কোনও এলাকায় প্রতি ডজন (১২ পিস) ডিম বিক্রি হচ্ছে ১৩০ টাকায়। তবে নিত্যপণ্যের বাজারগুলোতে এ দাম ১২৫ টাকা দেখা গেছে।

মাছের বাজারে দেখা গেছে, কাতল মাছ প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ৩০০ টাকায়, তেলাপিয়া ২২০ টাকায়, পাবদা ৪৫০ টাকা, মলা ৩৬০ টাকা, শোল ৭০০ টাকা, শিং মাছ ৫৫০ থেকে ৬০০ টাকা, পাঙাশ ১৮০ টাকা, কৈ ২৬০ টাকা, বোয়াল ৫৫০ থেকে ৬৫০ টাকা, টেংরা ছোটগুলো ৫০০ আর বড় ৬৫০ টাকা, রুই ২৬০ থেকে ২৮০ টাকা, চিংড়ি ৬০০ এবং গলদা চিংড়ি ৭০০ টাকা।

https://dailysangram.com/post/514983