২৪ জানুয়ারি ২০২৩, মঙ্গলবার, ৭:০৩

বায়ুদূষণে টানা তিন দিন শীর্ষে ঢাকা

রাজধানীর মহাখালীর বায়ুমান পরিমাপক স্টেশন আইসিডিডিআরবিতে গতকাল সোমবার বায়ুদূষণের মাত্রা ছিল ৪৫১। ইটভাটা অঞ্চল হিসেবে পরিচিত হেমায়েতপুরে ছিল ৩৯৮ এবং ঢাকায় যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাস স্টেশনে ৩৬৩। বায়ুদূষণের ক্ষেত্রে এগুলো সর্বোচ্চ মাত্রা। দূষণের মাত্রা ৩০০ অতিক্রম করলে সেই অঞ্চলের বায়ুকে হ্যাজার্ডাস বা বিপজ্জনক বলে অভিহিত করা হয়।

বৈশ্বিক বায়ুমান পর্যবেক্ষণকারী সুইজারল্যান্ডভিত্তিক ওয়েবসাইট ‘আইকিউ এয়ার’ বিশ্বের প্রায় ১০০টি বড় শহরের বায়ুদূষণ নিয়ে লাইভ প্রতিবেদন প্রকাশ করে থাকে। গতকাল ঢাকা ছাড়া বিশ্বের কোনো শহরের বায়ুদূষণের মাত্রা ৩০০ অতিক্রম করেনি। আইকিউ এয়ারের তথ্যানুসারে টানা তিন দিন বায়ুদূষণে শীর্ষে রয়েছে ঢাকা।
গতকাল সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে দ্বিতীয় অবস্থানে থাকা চীনের উহানে বায়ুদূষণের মাত্রা ছিল ২৪০। আর তৃতীয় অবস্থানে থাকা কুয়েত সিটির ১৮৪, এরপর ভারতের দিল্লির ১৮১ এবং পাকিস্তানের লাহোরের ১৮০।

সাধারণত একিউআই মান ০-৫০-এর মধ্যে থাকলে তাকে ভালো বলা হয়। ৫১-১০০-এর মধ্যে থাকলে মডারেট, ১০১-১৫০-এর মধ্যে থাকলে বিশেষ সংবেদশীল মানুষের জন্য অস্বাস্থ্যকর, ১৫১-২০০-এর মধ্যে থাকলে অস্বাস্থ্যকার, ২০১-৩০০ থাকলে তাকে খুব অস্বাস্থ্যকর বলা হয়। অন্যদিকে ৩০১-৫০০ পর্যন্ত থাকা বায়ুর মানকে বিপজ্জনক বলা হয়।

সাধারণত অতিমাত্রায় বায়ুদূষণ এলাকায় রেড অ্যালার্ট জারি করা হয়। এ ছাড়া অধিক সতর্কতার জন্য সাধারণের চলাচল সীমিত করার সুপারিশ করা হয়। এর আগে দিল্লিতে এ ধরনের পদক্ষেপ নেওয়ার নজির দেখা গেছে।

পরিবেশ বিশ্লেষকরা বলছেন, সাধারণত কলকারখানা ও যানবাহনের কারণে বায়ু অতিমাত্রায় দূষিত হচ্ছে। অন্যদিকে বনায়ন ধ্বংসের ফলে অক্সিজেন ও কার্বন ডাই-অক্সাইডের ভারসাম্য নষ্ট হচ্ছে। শীতাতপ নিয়ন্ত্রক যন্ত্র থেকে নির্গত সিএফসি বাতাসে মিশে যাচ্ছে।

এ বিষয়ে ইন্টারন্যাশনাল সেন্টার ফর ক্লাইমেট চেঞ্জ অ্যান্ড ডেভেলপমেন্টের পরিচালক ও ইনডিপেনডেন্ট ইউনিভার্সিটি, বাংলাদেশের (আইইউবি) অধ্যাপক সালিমুল হক বলেন, ‘বর্তমানে বাতাসে ধুলা আগের চেয়ে বেশি পরিমাণে বেড়েছে। আগে এত মেগাপ্রজেক্ট ও গাড়ি ছিল না। পাশাপাশি ঢাকা ও পাশের এলাকার জলাশয় ভরাট হওয়ায় ধুলার নতুন উৎস জন্মেছে। বায়ুদূষণ কমাতে আমাদের সমন্বিত পরিকল্পনা গ্রহণ এবং আইনের কঠোর প্রয়োগ করতে হবে।’


https://www.kalerkantho.com/print-edition/last-page/2023/01/24/1235306