২৪ জানুয়ারি ২০২৩, মঙ্গলবার, ৬:২৪

বন্ধুহীন হয়ে পড়েছে ক্ষমতাসীন আ’লীগ!

নিকট ভবিষ্যতে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ এক ঘরে হয়ে যাবে বলে মনে করছেন সরকার বিরোধী রাজনৈতিক দলসহ বিশিষ্টজনরা। তারা বলছেন, এখনি অনেকটা বন্ধুহীন দলে পরিণত হয়েছে আওয়ামী লীগ। অল্প সময়ের মধ্যে তাদের এক ঘরে করে ফেলা হবে। তারা বলছেন, এরই মধ্যে ডান ও বাম দলগুলো সরকারের বিরুদ্ধে মাঠে নেমেছে। যাদেরকে সরকারের কাছের মনে করা হয়, তারাও দেশের চলমান পরিস্থিতিতে ক্ষমতাসীনদের সমালোচনায় মুখর। বিশেষ করে ভোট ডাকাতি, দুর্নীতি, দুঃশাসন, হত্যা গুম, নিত্যপণ্যের অস্বাভাবিক দাম বৃদ্ধি, দফায় দফায় গ্যাস, বিদ্যুৎসহ জ্বালানির দাম নিয়ে সরকারকে এক হাত নিতে ছাড়ছেন না। সরকার বিরোধী নেতৃত্বদানকারী দল বিএনপির নেতারা বলছেন, এখন এই সরকারের সাথে কেউই নেই। দেশের জনগণ তাদের পতন দেখতে চায়। সব রাজনৈতিক দল আওয়ামী লীগের পতনের লক্ষ্যে আন্দোলন করছে।

সূত্র মতে, টানা তিন মেয়াদে ক্ষমতায় আছে আওয়ামী লীগ। বাংলাদেশের প্রাচীনতম, ঐতিহ্যবাহী এই রাজনৈতিক সংগঠনটি দীর্ঘদিন ক্ষমতায় থাকলেও রাজনৈতিকভাবে সবচেয়ে সংকটকাল অতিক্রম করছে বলেই মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা। এই মুহূর্তে আওয়ামী লীগ প্রায় বন্ধুহীন হয়ে পড়েছে। বিশেষ করে, করোনা সংকট মোকাবেলায় আওয়ামী লীগ রাজনৈতিক পথে না গিয়ে আমলাতান্ত্রিক পথে সমাধান খুঁজায় সেই সংকট বাড়তে থাকে। বর্তমানে দেশের অর্থনৈতিক ক্রাইসিস, মানবাধিকার লংঘন, ভোটারহীনতাসহ নিত্যপণ্যের দাম বাড়ায় সংকট এখন চরমে। ফলে রাজনীতিতে দীর্ঘদিন পর অনেকটা মিত্রহীন হয়েছে আওয়ামী লীগ। রাজনৈতিক ইতিহাস পর্যালোচনা করলে দেখা যায় যে, আওয়ামী লীগ যখনই বন্ধুহীন হয়, তখনই আওয়ামী লীগের জন্য বিপর্যয় আসে। আওয়ামী লীগ আবার নতুন করে স্বেচ্ছায় একাকীত্বকে বরণ করে নেয়ার ফলে রাজনীতিতে আওয়ামী লীগ আবার বিপর্যস্ত হবে কিনা সেই প্রশ্নও রাজনৈতিক অঙ্গনে ঘুরপাক খাচ্ছে। যদিও আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এসেছে দুটি জোটের মাধ্যমে। ১৪ দলীয় ঐক্যজোটে দীর্ঘদিন ধরে আওয়ামী লীগ নেতৃত্ব দিয়ে আসছে। এই জোটে বাম এবং উদার গণতান্ত্রিক প্রগতিশীল রাজনৈতিক দলগুলো রয়েছে। জাসদ, ওয়ার্কার্স পার্টি, সাম্যবাদী দলগুলোর মতো রাজনৈতিক দল নিয়ে এই ১৪ দলীয় জোটের দাবি, তারা মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে লালন করে। ২০০১ সালে এই জোটটি আত্মপ্রকাশ করে। কিন্তু টানা তৃতীয় মেয়াদে ক্ষমতায় আসার পর আওয়ামী লীগ ১৪ দলীয় জোটকে একরকম উপেক্ষাই করতে শুরু করে। প্রথমবারের মতো আওয়ামী লীগ একক মন্ত্রিসভা গঠন করে এবং এই মন্ত্রিসভায় ১৪ দলকে কোনো জায়গা দেয়া হয়নি। ১৪ দলের সমন্বয়ক মোহাম্মদ নাসিম মারা যাবার পর এখন এই জোটের তেমন কোনো ভূমিকাও নেই। ১৪ দলের সামনে কোনো রাজনৈতিক দিক নির্দেশনাও নেই।
জানা গেছে, ১৪ দলের অধিকাংশ দলই এখন আওয়ামী লীগের উপর প্রকাশ্যে না হলেও গোপনে ক্ষুব্ধ এবং তারা মনে করছেন, যেভাবে আওয়ামী লীগ সমস্যা মোকাবেলার চেষ্টা করছে, যেভাবে আওয়ামী লীগ রাজনৈতিক মিত্রদেরকে উপেক্ষা অবহেলা করছে সেটি মোটেও শোভন এবং সমীচীন নয়। এ কারণেই দলের মধ্যে আওয়ামী লীগের সঙ্গে শরীকদের দূরত্ব স্পষ্ট। এখন দলের অনেক শরীক প্রকাশ্যেই দেশের সার্বিক বিষয়াদি নিয়ে সরকারের বিভিন্ন নীতি কৌশলের সমালোচনা করছে। আওয়ামী লীগের আরেকটি জোট হলো মহাজোট। ১৪ দলের বাইরে যারা রয়েছে তাদেরকে নিয়ে আওয়ামী লীগ ২০০৮ সালে নির্বাচনী জোট গঠন করেছিল। এই জোটে আওয়ামী লীগের বাইরে প্রধান শরীক হলো জাতীয় পার্টি। এছাড়াও এখানে বিকল্প ধারাসহ আরও কিছু রাজনৈতিক দল রয়েছে। এই মহাজোটের সঙ্গে আওয়ামী লীগের এখন সম্পর্ক নেই বললেই চলে।

মহাজোটের দ্বিতীয় বৃহত্তম দল জাতীয় পার্টি এখন প্রধান বিরোধী দল। তারা বলেছে যে, তারা বিরোধী দল হিসেবেই দায়িত্ব পালন করবে। যদিও বাংলাদেশের রাজনীতিতে জাতীয় পার্টির তেমন তাৎপর্য এখন আর নেই। হোসেন মোহাম্মদ এরশাদের মৃত্যুর পর জাতীয় পার্টি একরকম ধুঁকে ধুঁকেই চলছে। তবে রাজনৈতিক শক্তি হিসেবে জাতীয় পার্টির অস্তিত্ব যত ক্ষীণই হোক না কেন, এই দলটির সঙ্গে এখন আওয়ামী লীগের সম্পর্ক খুব একটা ভালো নয়। জাতীয় পার্টিকে আওয়ামী লীগ খুব একটা পাত্তা দিচ্ছে না। আওয়ামী লীগের এই একলা চলো কৌশলে আগে ছিল একটা আত্মম্ভরিতা। রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, সামনের দিনগুলোতে এই নীতির পরিণাম ভালো নাও হতে পারে। কারণ সরকার যত কাজই করুক না কেন সাম্প্রতিক সময়ে দেশের অর্থনৈতিক সংকট, বেকারত্ব, গণতন্ত্রের লড়াই, দ্রব্যমূল্যের উর্ধ্বগতি ইত্যাদি নানা পরিস্থিতিতে রাজনৈতিক অস্থিরতা অনেক বেড়েছে। সেই রাজনৈতিক অস্থিরতার কারণেই আওয়ামী লীগ পাশে বন্ধু পাচ্ছে না বলে মত সংশ্লিষ্টাদের।

এদিকে একদিকে বন্ধুহীন অন্যদিকে আওয়ামী লীগের অভ্যন্তরীণ কোন্দল মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে। অনেকেই বলছেন, আওয়ামী লীগ বিএনপিকে ঠেকাবে না ঘর সামলাবে? জানা গেছে, তারা সারাদেশে দলের কাউন্সিল ও সম্মেলন করে মাধ্যমে মাঠ দখলে রাখতে চায়। এরই মধ্যে আওয়ামী লীগ ধারাবাহিকভাবে কর্মসূচি ও সম্মেলনের বাস্তবায়ন করছে। সার্বিক কোন্দল আর শক্তি ক্ষয়ের বিষয়ে জানতে চাইলে আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক এস এম কামাল হোসেন বলেন, আওয়ামী লীগ একটি বিশাল সংগঠন। তাই দলের মধ্যে প্রতিযোগিতা আছে। সেটা নিয়ে ঝামেলাও হয়। এটাকে বড় করে দেখার কিছু নাই। আমরা ঐক্যবদ্ধ আছি। তবে তিনি তৃণমূলে ক্ষোভের কথা স্বীকার করে বলেন, তাদের নানা অভিযোগ আছে নেতাদের বিরুদ্ধে।

সূত্র মতে, দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে রাজনৈতিক অঙ্গনে চলছে নানা সমীকরণ। বিএনপি ও সমমনা দলগুলো এখন আন্দোলনমুখী। সরাসরি কোনো জোটে না থাকলেও সরকারের পদত্যাগ, তত্ত্বাবধায়ক সরকারসহ ১০ দফা দাবিতে মাঠের যুগপৎ আন্দোলনে নেতৃত্ব দিচ্ছে বিএনপি। আন্দোলনকে কেন্দ্র করে ইতোমধ্যে কয়েকটি জোট গঠন হয়েছে। এসব জোটের পরিধি বাড়ানোর পাশাপাশি আরও নতুন জোট গঠনেরও তৎপরতা চলছে। এসব জোট গঠনের একমাত্র টার্গেটই হচ্ছে আওয়ামী লীগকে এক ঘরে করে ফেলা। এরই মধ্যে যুগপৎ আন্দোলনের অংশ হিসাবে ৫৪ দল গণমিছিল, গণ-অবস্থান ও মিছিল-সমাবেশে কর্মসূচি পালন করেছে। আরও কিছু দল জোট করেছে। বাম ঘরোনার ৭টি রাজনৈতিক দল নিয়ে ‘ফ্যাসিবাদ বিরোধী বাম মোর্চা’ নামে নতুন রাজনৈতিক জোটের আত্মপ্রকাশ হয়েছে। তারাও সরকার বিরোধী আন্দোলনে স্বোচ্চার। বিএনপি নেতারা বলছেন, দেশের চলমান সংকট নিরসনে ডান, বামসহ সব দল, সংগঠন, সুশীল, বুদ্ধিজীবী ছাড়াও সবাইকে ঐক্যবদ্ধ করতে জাতীয় ঐক্যের ঘোষণা দিয়েছে দল। এখানে নির্দিষ্ট কোনো ব্যক্তি কিংবা গোষ্ঠী নয়, সবাইকে নিয়েই এগোতে চাইছে দলটি। তাই জোট, দল, সংগঠন কিংবা ব্যক্তির সংখ্যাতত্ত্ব দিয়ে বিএনপি তাদের চলমান গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের আন্দোলনকে পরিমাপ করছে না, গুরুত্ব দিচ্ছে ঐক্যকে।

অচিরেই আওয়ামী লীগ একঘরে হয়ে যাবে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আবদুল মঈন খান। সম্প্রতি নাগরিক অধিকার আন্দোলন ফোরাম এর আয়োজনে এক আলোচনা সভায় তিনি বলেন, আমরা মানুষের কাছে যাচ্ছি। তাদেরকে আন্দোলনের জন্য প্রস্তুত করছি। গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারসহ দেশকে বাঁচানোর পরিবেশ সৃষ্টি করছি। আওয়ামী লীগকে চিরতরে বিদায় করার জন্য পর্যাপ্ত শক্তি নিয়েই আমরা মাঠে নামবো। অচিরেই আওয়ামী লীগ একঘরে হয়ে যাবে।

দ্বাদশ নির্বাচনের আরও প্রায় দুই বছর বাকি থাকলেও সরকারের আস্থাভাজন সংসদের প্রধান বিরোধী দল জাতীয় পার্টি সরকারের কঠোর সমালোচনায় সরব হয়ে উঠেছে। গত এক বছর আগে থেকে সমালোচনা শুরু করলেও সাম্প্রতিক সময়ে সরকারের নানা ইস্যুতে এ সমালোচনা আরো তীব্র করে দিয়েছেন দলটির শীর্ষ নেতারা। দলটির চেয়ারম্যান গোলাম মোহাম্মদ কাদেরের পাশপাশি গত কয়েক মাস আগে মহাসচিব নিযুক্ত হওয়া মুজিবুল হক চুন্নুকে সংসদ, দলীয় সমাবেশ এবং এমনকি ঘরোয়া বৈঠকেও সরকারের সালোচনায় সরর দেখা যায়। সম্প্রতি এক অনুষ্ঠানে গোলাম মোহাম্মদ কাদের বলেছেন, সাংবিধানিকভাবেই দেশে একনায়কতন্ত্র চলছে। মুজিবুল হক চুন্নু বলেছেন, আওয়ামী লীগের সঙ্গে আর কোনো প্রেম নেই আমাদের। পৌরসভা নির্বাচনে কারচুপির অভিযোগ তুলে ভোটাধিকার রক্ষার আন্দোলনে রাজপথে নামার হুঁশিয়ারি দিয়েছিল জাতীয় পার্টি (জাপা)। আন্দোলনে না নামলেও দলটির নেতারা নানা ইস্যুতে সরকারের সমালোচনা করে আসছেন। স্বাস্থ্য খাতের বেহাল, টিকা নিয়ে অনিশ্চয়তা, বাজেট, কর্মসংস্থানসহ নানা বিষয়েই কঠোর সমালোচনা করে চলেছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন মহাজোটের অন্যতম শরিক জাপা। গৃহপালিত বিরোধী দলের তকমা পাওয়া জাপা কেন সমালোচকের ভূমিকায় আবির্ভূত হয়েছে, তা নিয়ে কৌতূহল রয়েছে রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের মধ্যেও।

শুধু জাতীয়পার্টি নয়, ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ তার বামপন্থী মিত্রদের কাছ থেকে তীব্র সমালোচনার মুখে পড়েছে। আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন ১৪ দলীয় মহাজোটের এক বৈঠকে জোটের শীর্ষ নেতারা দাবি করেন, আওয়ামী লীগ তাদেরকে শুধু তখনই ডাকে, যখন তারা কোনো সংকটের মুখোমুখি হয়। বামপন্থী দলগুলো আরও জানায়, আওয়ামী লীগ তাদেরকে সরকারে কোনো জায়গা দেয় না এবং এই জোটের প্রতি কোনো গুরুত্ব দেয় না, যা হতাশাজনক। এই বৈঠকের সভাপতিত্ব করেন জোটের সমন্বয়ক ও আওয়ামী লীগের জ্যেষ্ঠ নেতা আমির হোসেন আমু। সূত্রে জানা গেছে, আওয়ামী লীগের সভাপতি ইতোমধ্যে নির্বাচনী প্রচারণা এবং ‘নৌকা’ মার্কার জন্য ভোট চাওয়া শুরু করেছেন। জোটের নেতারা আমুকে জানান, তারা এখনো জানেন না, আওয়ামী লীগ কি আগামী নির্বাচনে এককভাবে অংশ নেবে না জোটের অংশ হিসেবে নেবে। তারা এটাও জানেন না যে, এ বিষয়ে তাদের কোনো ভূমিকা রয়েছে কি না। বৈঠক সূত্র আরও জানায়, দিলীপ বড়ুয়া অভিযোগ করেন, সাম্প্রতিক বছরগুলোতে বেশ কয়েকটি আর্থিক কেলেঙ্কারির ঘটনা ঘটেছে এবং জনগণের আত্মবিশ্বাস ফিরিয়ে আনতে সরকারকে এসব কর্মকা- বন্ধ করতে হবে। তিনি আরও জানান, যদি সরকার আর্থিক দুর্নীতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে না পারে, তাহলে এটা বিরোধী দলকে তাদের ‘অশুভ উদ্দেশ্য’ সফল করতে সহায়তা করবে। ব্যাংকিং খাতে জনগণের আস্থা ফিরিয়ে আনার উদ্যোগ নিতে আওয়ামী লীগের প্রতি আহ্বান জানান তিনি। বৈঠকে আনোয়ার হোসেন মঞ্জুও আর্থিক দুর্নীতি ও মূল্যস্ফীতির বিষয়গুলো উল্লেখ করেন। সূত্র জানায়, যদি বর্তমান মূল্যস্ফীতির হার বজায় থাকে, তাহলে শ্রমিক বিক্ষোভ শুরু হতে পারে। তিনি জানতে চান, যদি কর্মীরা মূল্যস্ফীতির প্রতিবাদে সড়কে নেমে আসে, তাহলে সে পরিস্থিতি মোকাবিলা করার জন্য আওয়ামী লীগের কোনো পরিকল্পনা আছে কি না। সাম্প্রতিক সময়ে কিছু আওয়ামী লীগ নেতার ব্যবহার করা ‘খেলা হবে’ উক্তি নিয়ে হতাশা প্রকাশ করেন ওয়ার্কার্স পার্টির নেতা রাশেদ খান মেনন। এ ধরনের শ্লোগান ১৪ দলীয় মহাজোটের ভাবমূর্তি ও মূলনীতির সঙ্গে খাপ খায় না, যোগ করেন তিনি। ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ইসমাইল হোসেন জানতে চান, কেন সরকার জাতীয় নির্বাচনের ১ বছর আগে থেকেই প্রচারণা শুরু করেছে, বিশেষত দেশে যখন মূল্যস্ফীতি ও আর্থিক সংকট চলছে।

প্রতিচিন্তার নির্বাহী সম্পাদক ফারুক ওয়াসিফ বলেন, বিরোধীদের হাজারো সমস্যা, কিন্তু আওয়ামী লীগের চাইতে তারা কম নিরুপায়। বিরোধীদের হারার উপায় আছে, ক্ষমতাসীনদের তো সেই উপায়টাও নেই। মঞ্চের হাঁকডাক যা-ই হোক, সেটা আমাদের রাজনীতির নাটুকে ঐতিহ্য। কিন্তু নাটকের বাইরে বাস্তবে সমঝোতার প্রয়োজন আওয়ামী লীগেরই বেশি। হারানোর ভয়টা তাদেরই বেশি, যেহেতু তারাই ক্ষমতাসীন। নিজের ভালো পাগলেও বোঝে, কিন্তু বলপ্রয়োগের নেশায় যাদের পেয়েছে, তারা বুঝতে অনেক দেরি করে ফেলে।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান বলেন, দেশে গণতন্ত্র নেই, মানবাধিকার নেই। জনগণের ভোটাধিকার থেকে শুরু করে সব নাগরিক অধিকার ক্ষুণœ করা হচ্ছে। এ অবস্থা থেকে মুক্তি পেতে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। যার যে অবস্থান থেকে প্রতিবাদ করতে হবে। সেখানে কে কত বড়, সেটা মুখ্য বিষয় নয়। মূলত এই সরকারের হাত থেকে দেশকে রক্ষা করতে যারাই এগিয়ে আসবে, তাদেরই সাধুবাদ জানাব। সেটা সংগঠন হতে পারে, পেশাজীবী কিংবা ব্যক্তিও হতে পারেন।

নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না বলেছেন, দিন দিন জমজমাটভাবে মানুষের মধ্যে রাজনীতির বিষয়টি আলোচনা হচ্ছে। আওয়ামী লীগকে দেখতে পারে এমন মানুষ দেখি না। যারা শুধু সুবিধা পায় তারাই বলে আওয়ামী লীগ আছে।

জানতে চাইলে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, আমরা রাজনৈতিক দলগুলো ঐক্যবদ্ধ হয়েছি। আরও ঐক্যবদ্ধ হবো। আমি বিশ্বাস করি, ইতোমধ্যে আমাদের গত কয়েক মাসের আন্দোলনে জনগণ জেগে উঠেছে। সবাই এই সরকারের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করছে, ঐক্যবদ্ধ হচ্ছে। ঐকবদ্ধ প্রতিষ্ঠার মধ্য দিয়েই এই দানবকে পরাজিত করা সম্ভব হবে।

https://dailysangram.com/post/514562