বেশ কিছুদিন ডিমের বাজার স্থিতিশীল থাকার পর আবারও অস্থির হয়ে উঠছে। দুই সপ্তাহের ব্যবধানে ডিমের দাম ডজনে ১৫ থেকে ২০ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে। খুচরা পর্যায়ে ফার্মের ডিম ডজনপ্রতি ১৩০ থেকে ১৩৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। প্রতি হালি বিক্রি হচ্ছে ৪৫ টাকায়। গত বছরের আগস্ট-অক্টোবরেও ডিমের বাজার অস্থির হয়ে উঠেছিল।
ব্যবসায়ীরা বলছেন, শীতে ডিমের উত্পাদন কমে যাওয়ায় বাজারে চাহিদার তুলনায় সরবরাহ কিছুটা কমেছে। তাই দাম কিছুটা বেড়েছে।
রাজধানীর জোয়ারসাহারা বাজারের ব্যবসায়ী মো. নজরুল ইসলাম গতকাল বৃহস্পতিবার কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘ডিমের বাজার আবার আগের মতোই হয়ে যাচ্ছে। সপ্তাহে সপ্তাহে দাম বাড়ছে। দুই সপ্তাহ আগে ডিমের ডজন বিক্রি করেছি ১১৫ থেকে ১২০ টাকায়, সেটা এখন বিক্রি করতে হচ্ছে ১৩০ টাকায়।’
ডিমের দাম বাড়ার বিষয়টি স্বীকার করে তেজগাঁও ডিম ব্যবসায়ী বহুমুখী সমবায় সমিতির সভাপতি মো. আমান উল্লাহ গতকাল কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘নভেম্বর ও ডিসেম্বরে ডিমের দাম কম ছিল। এখন বাজারে ডিমের সরবরাহ কিছুটা কমেছে, যার কারণে দামও বাড়ছে।’ তিনি বলেন, ‘আগের দামের তুলনায় এখন পাইকারিতে প্রতি এক শ ডিমে ১০০ থেকে ১৫০ টাকা পর্যন্ত দাম বেড়েছে।’
এর আগে গত বছরের আগস্ট থেকে অক্টোবর পর্যন্ত ডিমের বাজার অস্থির হয়ে উঠেছিল। ডজনপ্রতি দাম উঠেছিল ১৫৫ টাকা পর্যন্ত। হালিপ্রতি দাম ছিল ৫৫ টাকা পর্যন্ত। তখন ডিমের বাজার নিয়ন্ত্রণে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর অভিযানও চালিয়েছিল।
বাজারসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, ডিমের সরবরাহ কমার অজুহাত দিয়ে আবার ডিমের বাজার অস্থির করে তুলছে পাইকারি ব্যবসায়ীরা। বাজার নিয়ন্ত্রণে রাখতে আগের মতো জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের নিয়মিত অভিযান জরুরি।
গতকাল রাজধানীর কারওয়ান বাজার, তেজগাঁও এবং জোয়ারসাহারা বাজারের ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, আগের বাড়তি দামেই বিক্রি হচ্ছে আদা, রসুন, চাল, আটা, ময়দা, ডালসহ বিভিন্ন নিত্যপণ্য। নতুন করে সবজির দাম কিছুটা বাড়লেও মুরগির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।
ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, আদার কেজি বিক্রি হচ্ছে ২০০ টাকায়। দেশি রসুন কেজিপ্রতি ১১০ থেকে ১২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে, চীনা রসুন বিক্রি হচ্ছে ১৫০ টাকা কেজি দরে। মোটা চাল নতুন ব্রি-২৮ বিক্রি হচ্ছে কেজিপ্রতি ৫৮-৬০ টাকায়। আর নতুন স্বর্ণা চাল ৫০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।
ব্রয়লার মুরগির দাম মোটামুটি স্থিতিশীল রয়েছে। প্রতি কেজি ব্রয়লার মুরগি ১৫০ টাকায় পাওয়া যাচ্ছে। কারওয়ান বাজারের কিচেন মার্কেটের মেসার্স মা আয়েশা ব্রয়লার হাউসের ব্যবসায়ী মো. আমজাদ হোসেন গতকাল কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘ব্রয়লার মুরগি কেজি ১৫০ টাকা, সোনালি মুরগি ২৬০ থেকে ২৭০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। দেশি মুরগি ৪৭০ থেকে ৪৮০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।’
সপ্তাহের ব্যবধানে বাজারে বেশ কিছু সবজির দাম কিছুটা বেড়ে বিক্রি হচ্ছে। সবজিভেদে কেজিতে পাঁচ থেকে ১৫ টাকা পর্যন্ত দাম বেড়েছে।