২০ জানুয়ারি ২০২৩, শুক্রবার, ১১:০২

আমন মৌসুমেও স্বস্তি নেই চালের বাজারে

দাম না কমলে রোজায় অস্বস্তি বাড়বে

সবাই তাকিয়ে ছিল আমন ধানের দিকে। ধারণা ছিল আমন উঠলেই চালের দাম কমবে। কিন্তু না, আমন ধানের চাল বাজারে আসার পরও দাম কমেনি, উলটো বেড়েছে।

সপ্তাহের ব্যবধানে সব ধরনের চালের দাম কেজিতে ২ থেকে ৪ টাকা বেড়েছে। পাশাপাশি সয়াবিন তেল, মসুর ডাল, পেঁয়াজ-রসুনের দামও বাড়তি। বৃহস্পতিবার রাজধানীর কাওরান বাজার, নয়াবাজার ও মালিবাগ কাঁচাবাজার ঘুরে ক্রেতা ও বিক্রেতার সঙ্গে কথা বলে এ তথ্য জানা গেছে।

বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, প্রতি কেজি মোটা চাল স্বর্ণা বিক্রি হয়েছে ৫৪ টাকা, যা সাত দিন আগে ৫২ টাকা ছিল। পাইজম চাল প্রতি কেজি বিক্রি হয়েছে ৫৬-৬২ টাকা, যা আগে ৫২-৬০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। সরকারি সংস্থা ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশ (টিসিবি) বলছে, সপ্তাহের ব্যবধানে বুধবার প্রতি কেজি চালের দাম বেড়েছে ২.৬৮ শতাংশ।

মালিবাগ কাঁচাবাজারের খালেক রাইস এজেন্সির মালিক ও খুচরা চাল বিক্রেতা মো. দীদার হোসেন বলেন, সবাই আমনের দিকে তাকিয়ে ছিল। ভেবেছিল আমন ধানের চাল বাজারে এলে দাম কমবে। দামও কমেছিল। কিন্তু হঠাৎ করে আবার বাজারে মোটা ও মাঝারি আকারের চালের দাম বাড়ছে। অতি মুনাফার জন্য মিল পর্যায়ে দাম বৃদ্ধির কারণে পাইকারি বাজারেও বেড়েছে। ফলে খুচরা পর্যায়ে বেশি দামে এনে বেশি দামে বিক্রি করতে হচ্ছে। যার প্রভাব ভোক্তার ওপর পড়ছে।

এদিকে বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, সপ্তাহের ব্যবধানে সয়াবিন তেল, মসুর ডাল, পেঁয়াজ-রসুনের দামও বেড়েছে। বৃহস্পতিবার পাঁচ লিটারের বোতল সয়াবিন ৮৯০ টাকায় বিক্রি হয়েছে, যা সাত দিন আগের ছিল ৮৮০ টাকা। ছোট দানার মসুর ডাল প্রতি কেজি বিক্রি হয়েছে ১৪০ টাকা, যা আগে ছিল ১৩০। প্রতি কেজি আমদানি করা পেঁয়াজ বিক্রি হয়েছে ৫০ টাকা, যা আগে ছিল ৪৫। আমদানি করা প্রতি কেজি রসুন বিক্রি হয়েছে ১৮০ টাকা, যা আগে ছিল ১৫০ টাকা।

রাজধানীর কাওরান বাজারে নিত্যপণ্য কিনতে আসা মো. সালাউদ্দিন বলেন, প্রতি সপ্তাহে কিছু না কিছু পণ্যের দাম বাড়ছে। ভোক্তারা অসহায় হয়ে বাড়তি দরে পণ্য কিনছে। এখন আর আমরা পারছি না। খেয়ে বাঁচতে হবে বলে অল্প পরিমাণে পণ্য কিনে বাড়ি ফিরছি।

জানতে চাইলে কনজুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) সভাপতি ও দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) সাবেক চেয়ারম্যান গোলাম রহমান যুগান্তরকে বলেন, একাধিক পণ্যের দাম বেড়েছে। রমজানের আগে এসব পণ্যের মূল্য কী কারণে বেড়েছে, তা খতিয়ে দেখতে হবে। কারসাজির মাধ্যমে দাম বাড়ালে কঠোর শাস্তির আওতায় আনতে হবে। তবে এখন থেকেই যদি নিত্যপণ্যের দাম নিয়ন্ত্রণ করা না যায়, তবে রমজানে ক্রেতারা অস্বস্তিতে ভুগবে।

জানতে চাইলে বাজার তদারকি সংস্থা বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের পরিচালক মনজুর মোহাম্মদ শাহরিয়ার যুগান্তরকে বলেন, বাজারে শৃঙ্খলা ফেরাতে অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে সব ধরনের ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। বাজার তদারকির পাশাপাশি অভিযোগের শুনানি হচ্ছে।

পাশাপাশি বাজারে পণ্যের দাম ঠিক আছে কি না, তা অভিযান পরিচালনা করে দেখা হচ্ছে। অনিয়ম পেলে সঙ্গে সঙ্গে আইনের আওতায় আনা হচ্ছে। দরকার হলে ব্যবসায়ীদের অধিদপ্তরে ডেকে কথা বলা হচ্ছে। আশা করি, পণ্যের দাম সহনীয় পর্যায়ে আসবে।

https://www.jugantor.com/todays-paper/last-page/636685