৩ জানুয়ারি ২০২৩, মঙ্গলবার, ১০:১৩

উদ্বোধন হলেও প্রস্তুত হয়নি বাণিজ্যমেলা প্রাঙ্গণ

পূর্বাচলে বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশ-চায়না ফ্রেন্ডশিপ এক্সিবিশন সেন্টারে (বিবিসিএফইসি) শুরু হয়েছে মাসব্যাপী ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্যমেলা। মেলার দ্বিতীয় দিনে ক্রেতা-দর্শনার্থীর উপস্থিতি খুব একটা দেখা যায়নি। মেলার বেশির ভাগ স্টল ও প্যাভিলিয়নে চলছে নির্মাণ আর গোছানোর কাজ। রোববার ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্যমেলার উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। দেশীয় পণ্যের প্রচার, প্রসার, বিপণন, উৎপাদনে সহায়তার লক্ষ্যে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ও রফতানি উন্নয়ন ব্যুরোর যৌথ উদ্যোগে ১৯৯৫ সাল থেকে ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্যমেলার আয়োজন করা হচ্ছে। দেশের রফতানি পণ্যের প্রবৃদ্ধি ও বাজার বৈচিত্র্যের লক্ষ্যে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়, রফতানি উন্নয়ন ব্যুরো এবং অন্যান্য সহায়ক সংস্থা এই মেলার আয়োজন করছে।

উদ্বোধনের পর ক্রেতা-দর্শনার্থীদের জন্য মেলা খুলে দেয়া হয়। তবে মেলায় অংশ নেয়া বেশির ভাগ প্রতিষ্ঠানের স্টল ও প্যাভিলিয়ন এখনো প্রস্তুত হয়নি। স্টলের নির্মাণকাজ চলছে। আবার অনেক স্টলে পণ্য গোছানোর কাজে ব্যস্ত থাকতে দেখা গেছে সংশ্লিষ্টদের। তাই মেলা পুরোপুরি জমে উঠতে আরো কয়েকদিন সময় লাগবে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।

এ দিকে উদ্বোধনের পরও মেলা প্রস্তুত না হওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন ক্রেতা-দর্শনার্থীরা। মেলায় আসা শরিফুল ইসলাম নামে এক দর্শনার্থী জানান, মেলা শুরু হয়েছে তাই ঘুরতে এসেছি; কিন্তু মেলায় অধিকাংশ স্টল এখনো নির্মাণ করা হয়নি। খিলগাঁও থেকে মোটরসাইকেলে এসেছি। এখানে এসে ভালো লাগত যদি পরিপূর্ণ প্রস্তুত দেখতে পারতাম।

তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, এটা আন্তর্জাতিক বাণিজ্যমেলা। এখানে অনেক বিদেশী ক্রেতা ও দর্শনার্থীরাও আসবেন। তারা যদি এ রকম অব্যবস্থাপনা দেখেন তাহলে তো এটা আমাদের জন্য লজ্জার। তাই এই বিষয়ে কর্তৃপক্ষের নজর দেয়া উচিত।
মেলা প্রাঙ্গণের বাইরে প্রায় অর্ধশতাধিক প্রবেশ টিকিট কাউন্টারের বেশির ভাগই ফাঁকা। মেলায় প্রবেশের ফটকগুলোতে দায়িত্বরতরা অলস সময় কাটাচ্ছেন। তবে মেলা প্রাঙ্গণের ভেতরে নির্দিষ্ট শিশু কর্নারে সবচেয়ে বেশি উপস্থিতি দেখা গেছে দর্শনার্থীদের। উন্মুক্ত স্থানে এই শিশু কর্নারে শিশুদের জন্য বিভিন্ন ধরনের রাইড রাখা আছে, যা ব্যবহার করতেই মূলত সেখানে শিশুসহ অভিভাবকদের ভিড় দেখা গেছে।
মেলায় অংশ নেয়া স্টলের কর্মকর্তারা বলছেন, মেলা এখনো জমেনি তবে কিছু ক্রেতা, দর্শনার্থী আসতে শুরু করেছেন; কিন্তু বিক্রি এখনো সেভাবে শুরু হয়নি। প্রতিটি স্টলেই একই অবস্থা। আমরা নিজেরাও এখনো সবকিছু গুছিয়ে নিতে পারিনি। প্রথম সপ্তাহ পর্যন্ত এমনিতেও ক্রেতা-দর্শনার্থী একটু কম আসে। চার-পাঁচ দিন পর থেকে হয়তোবা দর্শনার্থীর সংখ্যা বাড়তে থাকবে।

এবারের মেলায় প্রদর্শিত পণ্যের মধ্যে রয়েছে- দেশীয় বস্ত্র, মেশিনারিজ, কার্পেট, কসমেটিকস অ্যান্ড বিউটি এইডস, ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিকস, ফার্নিচার, পাট ও পাটজাত পণ্য, গৃহসামগ্রী, চামড়া, জুতাসহ চামড়াজাত পণ্য, স্পোর্ট গুডস, স্যানিটারি ওয়্যার, খেলনা, স্টেশনারি, ক্রোকারিজ, প্লাস্টিক, মেলামাইন পলিমার, হারবাল ও টয়লেট্রিজ, ইমিটেশন জুয়েলারি, প্রক্রিয়াজাত খাদ্য, হস্তশিল্পজাত পণ্য, হোম ডেকর ইত্যাদি।

ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্যমেলায় ১০টি দেশের ১৭টি প্রতিষ্ঠান অংশ নিয়েছে। মেলা প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত খোলা থাকবে। তবে সাপ্তাহিক বন্ধের দিন রাত ১০টা পর্যন্ত মেলা চলবে। এবার মেলায় প্রবেশমূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে প্রাপ্তবয়স্কদের জন্য ৪০ টাকা এবং অপ্রাপ্তবয়স্কদের জন্য ২০ টাকা। মেলার টিকিট অনলাইনে ক্রয় করলে ৫০ শতাংশ ছাড়ের সুযোগ থাকবে। এ ছাড়াও মেলায় প্রায় এক হাজার গাড়ি পার্কিংয়ের ব্যবস্থাসহ বিদেশী প্রতিষ্ঠানের জন্য ১৭টি প্যাভিলিয়ন, মিনি প্যাভিলিয়ন ও স্টল রয়েছে। দেশী ও বিদেশী প্রতিষ্ঠানের জন্য দু’টি হলের বাইরে মিলে মোট ৩৩১টি স্টল, প্যাভিলিয়ন ও মিনি প্যাভিলিয়ন রয়েছে।

https://www.dailynayadiganta.com/last-page/717649