৩ জানুয়ারি ২০২৩, মঙ্গলবার, ১০:১১

২০ এর তুলনায় ২২ এর ডিসেম্বরে রেমিট্যান্স কমেছে ১৭ শতাংশ

৩০ ভাগ এসেছে ইসলামী ব্যাংকের মাধ্যমে

বিদায়ী বছরের শেষ মাস ডিসেম্বরে দেশে প্রবাস আয় বা রেমিট্যান্সের প্রবৃদ্ধি হয়েছে সোয়া চার শতাংশ। তবে আগের অর্থবছরের (২০২০-২১) একই সময়ের চেয়ে এটি সোয়া ১৭ শতাংশ কম। বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিসংখ্যান থেকে দেখা যায়, ডিসেম্বরে রেমিট্যান্স এসেছে প্রায় প্রায় ১৭০ কোটি ডলার। এর মধ্যে এক মাসে সর্বোচ্চ রেমিট্যান্স এসেছে ইসলামী ব্যাংকের মাধ্যমে ৫০ কোটি ১০ লাখ মার্কিন ডলার, যা শতকরা প্রায় ৩০ ভাগ। ১২০ কোটি ডলার বা ৭০ ভাগ রেমিট্যান্স এসেছে ৫৪টি ব্যাংকের মাধ্যমে। আর পাঁচটি ব্যাংকের মাধ্যমে এক ডলারও রেমিট্যান্স আসেনি।

ব্যাংকাররা জানিয়েছেন, রেমিট্যান্স-প্রবাহ বাড়ানোর জন্য কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে নানা পদক্ষেপ নেয়া হচ্ছে। কিন্তু প্রবাহ সেই হারে বাড়ছে না; বরং তুলনামূলকভাবে কমে যাচ্ছে। যেমন, বিদায়ী বছরের জুলাই মাসে রেমিট্যান্স এসেছিল প্রায় ২১০ কোটি মার্কিন ডলার, আগস্টে এসেছিল ২০৪ কোটি মার্কিন ডলার; কিন্তু সেপ্টেম্বর থেকে হঠাৎ করে রেমিট্যান্স-প্রবাহ কমে যায়। ওই মাসে রেমিট্যান্স আসে ১৫৪ কোটি ডলার। এর অন্যতম কারণ হলো কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে রেমিট্যান্সের ডলারের দর হঠাৎ করে বেঁধে দেয়া। ব্যাংকগুলো ডলার সঙ্কটের কারণে বাড়তি রেমিট্যান্স সংগ্রহের জন্য রেমিট্যান্সের ডলারের দর বাড়িয়ে দিয়েছিল। আগস্টে এক ডলারের বিপরীতে ১১৩ টাকা পান প্রবাসীদের দেশে থাকা সুবিধাভোগীরা; কিন্তু সেপ্টেম্বরে রেমিট্যান্সের ডলারের দাম ১০৮ টাকা পরে তা কমিয়ে ১০৬ টাকায় নামিয়ে আনা হয়। হঠাৎ করে ডলারের দর কমিয়ে দেয়ায় প্রবাসীরা ব্যাংকিং চ্যানেলের মাধ্যমে রেমিট্যান্স পাঠাতে নিরুৎসাহিত হয়ে পড়েন। যার সরাসরি প্রভাব পড়ে সামগ্রিক রেমিট্যান্সের ওপর। এক মাসের ব্যবধানে রেমিট্যান্স কমে যায় ৫০০ মিলিয়ন বা ৫০ কোটি ডলার। এর প্রভাব বছরের শেষ মাস পর্যন্ত থাকে। অর্থাৎ রেমিট্যান্স-প্রবাহ ২০০ কোটি ডলার তো দূরের কথা ১৭০ কোটি ডলারের ঘরেও পৌঁছতে পারেনি। অক্টোবরে আসে ১৫২ কোটি, নভেম্বরে আসে ১৫৯ কোটি এবং ডিসেম্বরে ১৬৯ কোটি ৯৭ লাখ মার্কিন ডলার।

বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিসংখ্যান থেকে দেখা যায়, এর মধ্যেও বরাবরের মতো ডিসেম্বরে ৫৯টি ব্যাংকের মধ্যে সর্বোচ্চ রেমিট্যান্স আসে ইসলামী ব্যাংকের মাধ্যমে ৫০ কোটি ১০ লাখ মার্কিন ডলার। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ রেমিট্যান্স আসে অগ্রণী ব্যাংকের মাধ্যমে প্রায় ১০ কোটি মার্কিন ডলার। তৃতীয় সর্বোচ্চ রেমিট্যান্স আসে আল-আরাফা ইসলামী ব্যাংকের মাধ্যমে প্রায় ৯ কোটি মার্কিন ডলার এবং চতুর্থ সর্বোচ্চ রেমিট্যান্স আসে ডাচ্-বাংলা ব্যাংকের মাধ্যমে আট কোটি ৬২ লাখ মার্কিন ডলার। পঞ্চম সর্বোচ্চ রেমিট্যান্স আসে সোনালী ব্যাংকের মাধ্যমে সাত কোটি ৭৭ লাখ মার্কিন ডলার। ডিসেম্বরে ৫৯টি ব্যাংকের মধ্যে এক ডলারও রেমিট্যান্স আসেনি পাঁচ ব্যাংকে। এর মধ্যে স্টেট ব্যাংক অব ইন্ডিয়াসহ তিনটি বিদেশী ও একটি সরকারি ব্যাংক বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক (বিডিবিএল) রয়েছে। আরো চয় ব্যাংকের মাধ্যমে ন্যূনতম রেমিট্যান্স এসেছে। এর মধ্যে সিটি ব্যাংক এনএ-এর মাধ্যমে ৩০ হাজার ডলার, সীমান্ত ব্যাংকের মাধ্যমে ৭০ হাজার ডলার, পদ্মা ব্যাংকের মাধ্যমে ৬০ হাজার মার্কিন ডলার, এনআরবি ব্যাংকের মাধ্যমে এক লাখ ১০ হাজার ডলার, আইসিবি ইসলামী ব্যাংকের মাধ্যমে ৪০ হাজার মার্কিন ডলার, বেঙ্গল কমার্শিয়াল ব্যাংকের মাধ্যমে ১০ হাজার মার্কিন ডলার রেমিট্যান্স এসেছে।


https://www.dailynayadiganta.com/first-page/717679