২ জানুয়ারি ২০২৩, সোমবার, ১০:৫৯

উৎসবে বই না পেয়ে কান্না শিক্ষার্থীদের

-নিচের ক্লাসেই বইয়ের সঙ্কট বেশি -কিন্ডারগার্টেন অর্ধেক বইও পায়নি

এ বছর বই উৎসবেই বইয়ের সঙ্কট। স্কুলগুলোতে নিচের ক্লাসের বইয়ের চাহিদা বেশি থাকলেও প্রাক-প্রাথমিক, প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণীর বই পায়নি বিভিন্ন জেলা-উপজেলার অনেক স্কুল। ফলে এসব ক্লাসের ক্ষুদে শিক্ষার্থীরা বই না পেয়ে মনঃক্ষুণ্ন হয়েছে। অনেকে কেঁদেছে। অভিভাবকরাও ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন। অবশ্য জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড (এনসিটিবি) জানিয়েছে প্রথম দিনে সবাই বই না পেলেও জানুয়ারির প্রথম সপ্তাহেই বেশির ভাগ শিক্ষার্থীর হাতে বই পৌঁছে যাবে। কাগজ সঙ্কটে বই উৎসবের দিনে অর্থাৎ নতুন বছরের শুরুর দিনে সবাইকে বই দেয়া সম্ভব হয়নি। চলতি মাসের মধ্যেই পর্যায়ক্রমে সবাই বই পাবে।

শিক্ষা মন্ত্রণালয় সূত্র জানিয়েছে, ২০২৩ শিক্ষাবর্ষে সারা দেশে ৪ কোটি ৯ লাখ ১৫ হাজার ৩৮১ জন শিক্ষার্থীর মাঝে ৩৩ কোটি ৯১ লাখ ১২ হাজার ৩০০ কপি পাঠ্যপুস্তক বিনামূল্যে বিতরণ করা হবে। ২০১০ থেকে ২০২৩ সাল পর্যন্ত বিনামূল্যে পাঠ্যপুস্তক বিতরণের সংখ্যা হবে সর্বমোট ৪৩৪ কোটি ৪৫ লাখ ৮০ হাজার ২১১ কপি।

অপর দিকে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, ২০২৩ শিক্ষাবর্ষে প্রাক-প্রাথমিক ও প্রাথমিক স্তরে ২ কোটি, ১৯ লাখ, ৮৪ হাজার, ৮২৩ জন শিক্ষার্থীর মধ্যে ৯ কোটি ৬৬ লাখ ০৮ হাজার ২৪৫টি বই বিতরণ করা হবে। এর মধ্যে প্রাক প্রাথমিক স্তরে ৬৬ লাখ ২৯ হাজার ৮৪টি আমার বই এবং ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর প্রাক-প্রাথমিক এবং প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয় শ্রেণীর সর্বমোট ২ লাখ, ১২ হাজার ১৭৭টি পাঠ্যপুস্তক বিতরণ করা হবে। কিন্তু নতুন বছরের প্রথম দিনে সারা দেশে উৎসবের মাধ্যমে যে বই বিতরণ করা হয় এটা মূলত প্রতীকী উৎসব মাত্র। কেননা সব শিক্ষার্থীর হাতে সব বই তুলে দিতে না পারলে সেটাকে সর্বজনীন উৎসব বলা যাবে না। তারপরেও এ বছর বিতরণের মাধ্যমে বিনামূল্যে বই বিতরণের এক যুগ পূর্ণ হয়েছে। এটাকেও বড় একটি সাফল্য বলে মনে করছে মন্ত্রণালয়।

অপর দিকে নতুন শিক্ষাবর্ষের প্রথম দিনে সব স্কুলে এবং সব শিক্ষার্থীর হাতে একসাথে বই পৌঁছানো সম্ভব হবে না এমন আভাস এনসিটিবি থেকে আগেই দেয়া হয়েছিল। সংস্থাটির চেয়ারম্যান অধ্যাপক ফরহাদুল ইসলাম জানান, উৎসবের মাধ্যমে গতকাল রোববারের অনুষ্ঠানে যে বই বিতরণ করা হয়েছে এটি প্রতীকী অনুষ্ঠান। এই অনুষ্ঠানের মাধ্যমে সবার হাতে সব বই পৌঁছবে না। প্রত্যেক শিক্ষার্থীকে পর্যায়ক্রমে স্ব স্ব স্কুল থেকে জানুয়ারি মাসজুড়েই বই প্রদান করা হবে।

গতকাল বই উৎসবের দিনে রাজধানী ও ঢাকার আশপাশের বিভিন্ন উপজেলার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান প্রধানদের সাথে কথা বলে জানা গেছে অন্যান্য বছরের মতো এবারো প্রথম দিনে সব বই হাতে পায়নি ক্ষুদে শিক্ষার্থীরা। তবে এক মাসের মধ্যে সব বই শিক্ষার্থীরা পাবে বলে আশা প্রকাশ করেছেন প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী মো: জাকির হোসেন। তিনি বলেছেন, আমাদের সব বই কাগজের অভাবে প্রেস থেকে দিতে পারিনি। আগামী এক মাসের মধ্যে সব বই শিক্ষার্থীদের মধ্যে বিতরণ করতে পারব বলে আশা করি।

ঢাকার অদূরে সাভার উপজেলার শিক্ষা অফিস সূত্র জানিয়েছে এবার প্রাথমিক বিদ্যালয়ে নিচের তিনটি শ্রেণীর বই দেয়া সম্ভব হয়নি। প্রাক প্রাথমিক, প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণীর বই সঙ্কট থাকায় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়েও কোনো বই দেয়া যায়নি। এই তিন শ্রেণীর বই উপজেলায় আসার পরপরই স্কুলে স্কুলে পৌঁছে দেয়া হবে। অন্য দিকে রাজধানী ঢাকার মধ্যে ডেমরা থানার অন্তর্গত বিভিন্ন কিন্ডারগার্টের স্কুলগুলোতে কথা বলে জানা গেছে অনেক স্কুলে পঞ্চম শ্রেণীর কোনো বই তারা পায়নি। আবার অনেক স্কুলে চাহিদার মাত্র অর্ধেক বই দেয়া হয়েছে। অন্যান্য শ্রেণীতেও সব বই পাওয়া যায়নি।

বাংলাদেশ কিন্ডারগার্টের অ্যাসোসিয়েশনের জেনারেল সেক্রেটারি মিজানুর রহমান সরকার গতকাল সন্ধ্যায় নয়া দিগন্তকে জানান, শিক্ষা অফিস থেকে বই পাওয়ার ক্ষেত্রে কোনো সমস্যা নেই। শিক্ষা অফিস থেকে যথেষ্ট আন্তরিকতার সাথেই বই বিতরণ করা হচ্ছে। কিন্তু মূল সমস্যা হচ্ছে বই ছাপা সঙ্কটে আমরা বই পাচ্ছি না বা বই পেতে দেরি হচ্ছে। তিনি আরো জানান, দেশে এখন ৭০ হাজারের বেশি কিন্ডারগার্টেন রয়েছে। আর এসব প্রতিষ্ঠানে পড়াশোনা করছে প্রায় এক কোটি শিক্ষার্থী। এই বড় একটি সংখ্যার শিক্ষার্থীদের হাতে যথাসময়ে বই দিতে না পারলে তাদের পাঠদানে বিঘ্ন ঘটবে।

খুলনা ব্যুরো জানায়, খুলনায় গতকাল আড়াই লাখ শিক্ষার্থীর হাতে নতুন বই তুলে দেয়া হয়েছে। গতকাল সকালে খুলনা সরকারি বালিকা উচ্চবিদ্যালয় মাঠে মাধ্যমিক স্তরের শিক্ষার্থীদের মাঝে পাঠ্যপুস্তক বিতরণ উৎসব অনুষ্ঠিত হয়। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন খুলনার অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার মো: শহিদুল ইসলাম। অনুষ্ঠানে সরকারি দৃষ্টি ও শ্রবণ প্রতিবন্ধী বিদ্যালয় এবং মোহাম্মদ নগর ইসলামিয়া দাখিল মাদরাসাসহ ১২টি মাধ্যমিক পর্যায়ের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের হাতে নতুন বই তুলে দেয়া হয়। খুলনার জেলা প্রশাসক খন্দকার ইয়াসির আরেফীনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন মেট্রোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার সাজিদ হোসেন, মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা খুলনাঞ্চলের পরিচালক প্রফেসর শেখ হারুনুর রশিদ ও উপপরিচালক এ এস এম আবদুল খালেক।

খুলনা জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা খো: রুহুল আমিন বলেন, খুলনায় বছরের প্রথম দিন খুলনা মহানগরীসহ জেলার সব মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের হাতে আড়াই লাখ শিক্ষার্থীর হাতে নতুন বই তুলে দেয়া হয়েছে। বছরের প্রথম দিন নতুন বই পেয়ে শিক্ষার্থীরা ভীষণ খুশি।

খালি হাতে ফিরেছে নেত্রকোনার অনেক শিক্ষার্থী
নেত্রকোনা প্রতিনিধি জানান, বছরের প্রথম দিন ঘটা করে বই উৎসব করার পাশাপাশি বহু শিক্ষর্থীকে খালি হাতে বাড়ি ফিরতে হয়েছে। গতকাল নেত্রকোনা সরকারি মডেল প্রাথমিক বিদ্যালয়, নেত্রকোনা সরকারি বালিকা উচ্চবিদ্যালয় ও আঞ্জুমান সরকারি উচ্চবিদ্যালয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে বই বিতরণ উৎসব অনুষ্ঠিত হয়। জেলা প্রশাসক অঞ্জনা খান মজলিশ শিক্ষার্থীদের মধ্যে নতুন বই তুলে দিয়ে বই উৎসব উদ্বোধন করেন। এ সময় উপস্থিত ছিলেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মাহমুদা আক্তার, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ফখরুজ্জামান জুয়েল, জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা আবদুল গফুর, জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা তাহমিনা খানম প্রমুখ।

তবে সময়মতো বই না পৌঁছায় গতকাল নেত্রকোনা চন্দ্রনাথ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিশু ও প্রথম শ্রেণী ছাড়া অন্য শ্রেণীর বই বিতরণ সম্ভব হয়নি। একই কারণে মোহনগঞ্জ উপজেলার কয়েকটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে বই বিতরণ সম্ভব না হওয়ায় অনেক শিক্ষক সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পোস্ট করেন। এ ব্যাপারে মোহনগঞ্জ উপজেলা ভারপ্রাপ্ত শিক্ষা কর্মকর্তা বিশ^জিৎ সাহা জানান, প্রথম শ্রেণী থেকে পঞ্চম শ্রেণী পর্যন্ত বিতরণের জন্য কোনো বই পৌঁছায়নি। বই পৌঁছালে তা বিতরণ করা হবে।

শিক্ষিত জাতি গঠনে জ্ঞানার্জনের বিকল্প নেই : চবি ভিসি
চট্টগ্রাম বিশ^বিদ্যালয়ের ভিসি প্রফেসর ড. শিরীন আখতার বলেছেন, শিক্ষিত জাতি গঠনে জ্ঞানার্জনের কোনো বিকল্প নেই। কোমলমতি শিশুদের লেখাপড়ার প্রতি আগ্রহ বাড়াতে এবং প্রতিটি শিশুকে স্কুলমুখী করতে বর্তমান সরকারের গৃহীত পদক্ষেপ অত্যন্ত প্রশংসনীয়। গতকাল সকালে পাঠ্যপুস্তক উৎসব উপলক্ষে চট্টগ্রাম বিশ^বিদ্যালয় ল্যাবরেটরি স্কুল অ্যান্ড কলেজের শিক্ষার্থীদের বিনামূল্যে বই বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। এতে বিশেষ অতিথি ছিলেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রোভিসি (একাডেমিক) প্রফেসর বেনু কুমার দে, কলা ও মানববিদ্যা অনুষদের ডিন চবি ল্যাবরেটরি স্কুল অ্যান্ড কলেজের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি প্রফেসর ড. মোহাম্মদ মাহবুবুল হক ও চবি রেজিস্ট্রার (ভারপ্রাপ্ত) প্রফেসর এস এম মনিরুল হাসান। এতে সম্মানিত অতিথি হিসেবে ছিলেন চবি ইনস্টিটিউশনাল কোয়ালিটি এস্যুরেন্স সেলের পরিচালক প্রফেসর ড. মোহাম্মদ আবদুল্লাহ মামুন ও চবি ল্যাবরেটরি স্কুল অ্যান্ড কলেজের ম্যানেজিং কমিটির সদস্য ডেপুটি রেজিস্ট্রার শওকত আরা পারভীন। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন স্কুলের সহকারী শিক্ষক শফিউল আজম।

বই পায়নি দক্ষিণাঞ্চলের অধিকাংশ শিক্ষার্থী
বরিশাল ব্যুরো জানায়, বছরের প্রথম দিন প্রাথমিকের খুদে শিক্ষার্থীদের হাতে নতুন বই তুলে দেয়ার কথা থাকলেও বরিশাল বিভাগের বিদ্যালয়গুলোতে নতুন বই তুলে দিতে ব্যর্থ হয়েছে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদফতর। বিভাগের বিভিন্ন উপজেলার প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রতি ক্লাসের প্রথম ১০ জন একটি করে বই পেলেও বাকিরা পায়নি। এতে হতাশ হয়ে বাড়ি ফিরেছে শিক্ষার্থীরা। শিক্ষা কর্মকর্তা জানিয়েছেন, নানা সঙ্কটের কারণে এবার বছরের প্রথম দিন সব শ্রেণীর শিক্ষার্থীদের নতুন বই দেয়া সম্ভব হয়নি। তবে এক সপ্তাহের মধ্যে সবাইকে বই পৌঁছে দেয়া হবে।
সন্তানকে নিয়ে বই নিতে আসা ফাতেমা নামে এক অভিভাবক ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, বই না পেয়ে শিশুদের মন খারাপ হয়েছে, আজ হাতে পেলে ওরা অনেক খুশি হতো। বরিশাল জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অধিদফতর থেকে জানা যায়, নতুন শিক্ষাবর্ষে মোট চাহিদা ১৩ লাখ ২১ হাজার ২০টি বই চাহিদা রয়েছে, এর মধ্যে তিনের এক অংশ শিশু বই পায়নি।

বরগুনা সদর উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা ওমর ফারুক ভূঞা বলেন, উপজেলায় মাদরাসা, ইবতেদায়ী, মাধ্যমিক এবং প্রাথমিকে মোট চাহিদা এক লাখ ১৯ হাজার ৩১৭টি। তবে এসেছে ৫০ হাজার ১৩৮টি বই। এর মধ্যে চতুর্থ, পঞ্চম ও সপ্তম শ্রেণীর একটি বইও আসেনি। প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণীর আংশিক বই পেয়েছি। মাধ্যমিকের ষষ্ঠ থেকে নবম পর্যন্ত তিনটি বিষয়ের বই আসেনি। মাদরাসার ষষ্ঠ, সপ্তম এবং অষ্টম শ্রেণীর কোনো বই এখনো পৌঁছায়নি।

শুধু বরগুনা সদর উপজেলা নয়, ভোলার তজুমদ্দিন, পটুয়াখালীর গলাচিপা, দুমকি, ঝালকাঠির রাজাপুর, কাঁঠালিয়া উপজেলা শিক্ষা অফিসেও কথা বলে এমন তথ্য পাওয়া গেছে। এসব উপজেলার শিক্ষা কর্মকর্তারাও হতাশার কথা জানিয়েছেন।
বাকেরগঞ্জ উপজেলা সহকারী প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মুজাহিদুল ইসলাম জানান, সময়মতো প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণী বই পৌঁছতে না পারায় কিছুটা সমস্যা হয়েছে। অপর দিকে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষার বিভাগীয় অফিস থেকে জানানো হয়েছে, ঝালকাঠি এবং পটুয়াখালী জেলার চাহিদাপত্র না পাওয়ায় সাময়িক এই সমস্যা হয়েছে।

রংপুর বিভাগে মাধ্যমিকে সরবরাহ ৬০ ভাগ বই
রংপুর অফিস জানায়, চাহিদার বিপরীতে রংপুর বিভাগে প্রাথমিকের বই ৯২ ভাগ পাওয়া গেলেও মাধ্যমিকের বই পাওয়া গেছে ৬০ ভাগ। তবে এক সপ্তাহের মধ্যে সব বই পাওয়া যাবে বলে জানিয়েছে সংশ্লিষ্ট দফতর। গতকাল সকালে রংপুর জিলা স্কুল অডিটোরিয়ামে মাধ্যমিক স্তর এবং আমাশু কুকরুল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে প্রাথমিক স্তরের বই উৎসবের উদ্বোধন করেন অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার আবু জাফুর, ডিসি ড. চিত্রলেখা নাজনিন, মাধ্যমিক শিক্ষার বিভাগীয় পরিচালক অধ্যাপক আব্দুল মতিন লস্কর ও প্রাইমারি শিক্ষার উপপরিচালক মুজাহিদুল ইসলাম বুলেট। এরপর শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে শুরু হয় বই উৎসব।

নতুন বই পেয়ে মাঠেই পড়া শুরু করে অনেক শিক্ষাথী। শুরু হয় সহপাঠীদের মধ্যে বই নিয়ে আলোচনা। উল্লাসে মেতে উঠেন তারা। সবার কণ্ঠে উঠে আসে উচ্ছ্বাস আর ভালো করার প্রত্যয়। অভিভাবক মারিয়া নুসরাত জানান, প্রথম দিনে বই পেলে শিক্ষার্থীরা যে কি খুশি হয় সেটা বলে বোঝানো যাবে না। আমার মেয়ে তো সারা রাত ঘুম আসেনি। ছটফট করেছে। নতুন বই আনতে যাবে কখন। সকাল ৭টায় আগে বিছানা থেকে উঠে আমাকে জাগিয়েছে।

রংপুর প্রাথমিক শিক্ষা বিভাগের উপপরিচালক মুজাহিদুল ইসলাম বুলেট জানান, বিভাগের আট জেলায় মোট ২৯ লাখ ৪৩ হাজার ৮৬২ জন শিক্ষার্থীর জন্য এক কোটি ২৭ লাখ ৪৪ হাজার ৫০৬টি বইয়ের চাহিদা রয়েছে। এর মধ্যে আমরা ৯২ ভাগ সরবরাহ পেয়েছি। বাকিগুলো ২-৩ দিনের মধ্যে পাবো ইনশা আল্লাহ।
মাধ্যমিক শিক্ষা বিভাগের রংপুর বিভাগীয় পরিচালক অধ্যাপক আব্দুল মতিন লস্কর জানান, মাধ্যমিক পর্যায়ের ৩২ লাখ শিক্ষার্থীর মধ্যে দেড় কোটি বই বিতরণ হবে। এর মধ্যে ৬০ ভাগ সরবরাহ পেয়ে বিতরণ করেছি। বাকিটা এক সপ্তাহের মধ্যে পাবো বলে আশা করি।

https://www.dailynayadiganta.com/first-page/71746