জামায়াতে ইসলামীর শান্তিপূর্ণ মিছিলে পুলিশ ও আইনশৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনী কর্তৃক বাধা প্রদান এবং আক্রমন করে মিছিলকারীদের হেনস্তা করে তাদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা ও গ্রেপ্তারের নিন্দা জানিয়েছে ১২ দলীয় জোট ও নাগরিক মঞ্চ। গতকাল রোববার দেয়া বিবৃতিতে তারা এ নিন্দা জানান। তারা বলেন, জামায়াতে ইসলামী একটি নিয়মতান্ত্রিক গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক দল। তারা নিষিদ্ধ ঘোষিত কোন রাজনৈতিক দল নয়। শান্তিপূর্ণ সভা-সমাবেশ, মিছিলে বাধাদান, লাঠিচার্জ এবং হামলা মামলা গ্রেফতার করার মতো গণতন্ত্র এবং মানবাধিকারের পরিপন্থী কাজ থেকে বিরত থাকার জন্য নেতৃবৃন্দ তারা সরকার এবং আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে উদাত্ত আহ্বান জানান।
১২ দলীয় জোটের শীর্ষ নেতৃবৃন্দের বিবৃতি : ১২ দলীয় জোটের শীর্ষ নেতৃবৃন্দের বলেন, আমরা মনে করি, জামায়াতে ইসলামী একটি নিয়মতান্ত্রিক গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক দল। তারা নিষিদ্ধঘোষিত কোন রাজনৈতিক দল নয়। গণতন্ত্র, ভোটাধিকার এবং নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পক্ষে তাদের আন্দোলন যৌক্তিক ও সময়োচিত।
তারা বলেন, বিএনপি ঘোষিত ১০ দফা কর্মসূচি বাস্তবায়নের দাবিতে বিএনপিসহ গণতন্ত্রকামী সকল রাজনৈতিক দল দেশব্যাপী যুগপৎ আন্দোলন করছে। নিশিরাতের অবৈধ সরকার ও ভোট ডাকাতদের বিরুদ্ধে জনগণের ভোটাধিকার আদায়ের আন্দোলন সময়ের দাবি এবং সমগ্র দেশবাসীর ইচ্ছার প্রতিফলন।
শান্তিপূর্ণ সভা-সমাবেশ, মিছিলে বাধাদান, লাঠিচার্জ এবং হামলা মামলা গ্রফতার করার মতো গণতন্ত্র এবং মানবাধিকারের পরিপন্থী কাজ থেকে বিরত থাকার জন্য নেতৃবৃন্দ সরকার এবং আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে উদাত্ত আহ্বান জানান।
বিবৃতি দাতারা হলেন জাতীয় পার্টি (জাফর) চেয়ারম্যান মোস্তফা জামাল হায়দার, কল্যাণ পার্টির চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল (অব:) সৈয়দ মোহাম্মদ ইব্রাহিম, বীর প্রতীক, বাংলাদেশ লেবার পার্টির চেয়ারম্যান ডাক্তার মোস্তাফিজুর রহমান ইরান, বাংলাদেশ জাতীয় দলের চেয়ারম্যান এডভোকেট সৈয়দ এহসানুল হুদা, এনডিপি চেয়ারম্যান কারী মোহাম্মদ আবু তাহের, বাংলাদেশ এলডিপি-মহাসচিব শাহাদাত হোসেন সেলিম, জাতীয় গণতান্ত্রিক পার্টি (জাগপা), ব্যারিস্টার তাসমিয়া প্রধান, ইসলামী ঐক্য জোটের চেয়ারম্যান মাওলানা আব্দুল করিম, মুসলিম লীগের মহাসচিব শেখ জুলফিকার বুলবুল চৌধুরী, জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম মহাসচিব গোলাম মহিউদ্দিন ইকরাম, বাংলাদেশ ইসলামিক পার্টির- মহাসচিব এডভোকেট আবুল কাশেম, বাংলাদেশের সাম্যবাদী দলের সাধারণ সম্পাদক, কমরেড সৈয়দ নুরুল ইসলাম।
নাগরিক মঞ্চ: নাগরিক মঞ্চের নেতৃবৃন্দ সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেন, গণতান্ত্রিক আন্দোলন ব্যাহত করতে জামায়াতকে পুলিশের প্রতিপক্ষ বানাবেন না।
গতকাল দেয়া বিবৃতিতে নাগরিক মঞ্চের নেতৃবৃন্দের মধ্যে দেশপ্রেমিক নাগরিক পার্টির চেয়ারম্যান ও নাগরিক মঞ্চের সমন্বয়কারী আহসান উল্লাহ শামীম, বাংলাদেশ মুসলিম সমাজের চেয়ারম্যান ও নাগরিক মঞ্চের সমন্বয়কারী মোঃ মাসুদ হোসেন, বাংলাদেশ রিপাবলিকান পার্টির চেয়ারম্যান ও নাগরিক মঞ্চের সমন্বয়কারী মোফাস্সির অধ্যাপক বাজলুর রহমান আমিনী, বাংলাদেশ স্বাধীন পার্টির চেয়ারম্যান মির্জা আজম, বাংলাদেশ ইসলামী সমাজতান্ত্রিক পার্টির চেয়ারম্যান ইঞ্জিনিয়ার হাফিজুর রহমান, বাংলাদেশ ইসলামী জনতা পার্টির চেয়ারম্যান ও নাগরিক মঞ্চের সমন্বয়কারী শেখ ওসমান গনি বেলাল, বাংলাদেশ আইডিয়াল পার্টির চেয়ারম্যান ও নাগরিক মঞ্চের সমন্বয়কারী কে এম ইব্রাহিম খলিল, সুশীল ফোরামের সভাপতি ও নাগরিক মঞ্চের সমন্বয়কারী মোঃ জাহিদ, দেশপ্রেমিক নাগরিক পার্টির মহাসচিব ড. শওকত হোসেন, বাংলাদেশ মুসলিম সমাজের মহাসচিব ডা. মোঃ মাসুম হোসাইন, ইসলামী সমাজতান্ত্রিক পার্টির মহাসচিব কমর উদ্দিন লিটনসহ নেতৃবৃন্দ বলেন, গত ৩০ ডিসেম্বর বিএনপিসহ বিরোধী দলগুলোর যুগপদ আন্দোলন এর অংশ হিসেবে পূর্ব ঘোষিত কর্মসূচি পালন করতে বাদ জুমা জামায়াতের নেতা কর্মীরা মৌচাক-মালিবাগ এলাকায় গণমিছিল করলে জামায়াতের বিবৃতি ও গণমাধ্যমের ফুটেজ অনুযায়ী পুলিশ আগবাড়িয়ে আক্রমণ করে শান্তিপূর্ণ মিছিলটি ছত্রভঙ্গ করে পথচারীসহ অসংখ্য নেতা কর্মীদের গ্রেফতার করে বন্দী অবস্থায় জামায়াত নেতাকর্মীদের অমানবিক নির্যাতন করে অনেকের হাত ভেঙ্গে দিয়েছে। আমরা এই নারকীয় ও পৈচাষিক কর্মকা-ের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই।
তারা বলেন, সভা, সমাবেশ, মিছিল-মিটিং জনগণের গণতান্ত্রিক অধিকার। নাগরিক মঞ্চ মনে করে মিছিল, মিটিং এ বাধা দেওয়া এবং গ্রেফতার, হয়রানি করা গণতন্ত্রের পরিপন্থী ’ কাজ। সরকার এ ধরণের কর্মকাণ্ড থেকে বিরত থেকে মানুষের গণতান্ত্রিক অধিকারের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হবেন। গণতন্ত্রগামী জনতার আন্দোলনে অগ্রগামী নেতৃবৃন্দের মধ্যে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলমা আলমগীর, মির্জা আব্বাস, বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুস সালাম, রুহুল কবির রিজভী ও বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমীর ড. শফিকুর রহমান ও গ্রেফতারকৃত আলেম-ওলামাসহ সকল রাজবন্দীদের মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার ও নিঃশর্ত মুক্তির জোর দাবি জানান।
