৮ জুন ২০২২, বুধবার, ১১:৪৪

সিলেটে আবার পানি বাড়ছে

সিলেট জেলায় বন্যা পরিস্থিতি স্বাভাবিক হওয়ার দুই সপ্তাহ যেতে না যেতেই আবারও বাড়ছে পানি। সোমবার ভোররাতে উজান থেকে আসা ঢলে সুরমা নদীর পানি বেড়ে কানাইঘাটে বিপত্সীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। আরো ১০ দিন বৃষ্টিপাতের পূর্বাভাস দিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। এ অবস্থায় আবারও বন্যার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।

এরই মধ্যে জেলার কানাইঘাট উপজেলার নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। স্থানীয় বাজারে পানি উঠেছে। পানি বাড়ার কারণে বিভিন্ন স্থানে বাঁধের সংস্কারকাজ ব্যাহত হচ্ছে।

জানা গেছে, সোমবার ভোররাতে উজান থেকে ঢল নামে সুরমায়। এতে এক রাতেই কানাইঘাট পয়েন্টে প্রায় চার ফুট পানি বেড়ে যায়। পরে দিনের বেলা পানি কিছুটা কমলেও গতকাল মঙ্গলবার পানি বেড়েছে।

সিলেট পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) সূত্রে জানা গেছে, সুরমার পানি সোমবার বিপত্সীমা অতিক্রম করেছে। গতকাল বিকেলের প্রতিবেদন অনুযায়ী কানাইঘাটে সুরমা নদীর পানি বিপত্সীমার ৪২ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল। এর আগে একই দিন ভোর ৬টায় পানি বিপত্সীমার ৪৪ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল। এদিকে সিলেট পয়েন্টে সুরমা নদীর পানি বিপত্সীমার কাছাকাছি চলে এসেছে। এ ছাড়া কুশিয়ারা নদীর জকিগঞ্জের অমলসিদ, বিয়ানীবাজারের শেওলা ও শেরপুর পয়েন্টে পানি বাড়ছে।

কানাইঘাটের সমাজকর্মী মাহবুবুর রহমান কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘আগের বন্যার পানি নেমে যাওয়ার দুই সপ্তাহ হয়নি। পানি নেমে গেলেও নিম্নাঞ্চলের অনেক জায়গার পানি রয়ে গেছে। এর মধ্যে আবার নতুন করে পানি বাড়া শুরু হওয়ায় মানুষের মধ্যে আতঙ্ক ও হতাশা কাজ করছে। ’ বন্যার কারণে বেকার হওয়া শ্রমজীবীদের অনেকে এখনো ভালোভাবে গুছিয়ে নিতে পারেননি জানিয়ে তিনি বলেন, তাঁদের সংকটটা বেশি। অনেকে কাজে ফিরতে পারেননি। এর মধ্যে সোমবার পানি বেড়ে কানাইঘাট বাজার এলাকার কিছু কিছু জায়গা ডুবেছে।

সিলেটের নদীগুলোতে পানি বাড়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন পানি উন্নয়ন বোর্ড সিলেটের উপবিভাগীয় প্রকৌশলী এ কে এম নিলয় পাশা। তিনি কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘সিলেটে সব পয়েন্টে নদীর পানি বাড়ছে। কানাইঘাট পয়েন্টে সুরমা নদীর পানি বিপত্সীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। অন্যান্য নদীর পানিও বাড়া-কমার মধ্যে আছে। ’ বন্যার শঙ্কা সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘সিলেটে বৃষ্টিপাত হচ্ছে কয়েক দিন ধরে। তবে এ বৃষ্টিপাতে বন্যা হওয়ার নয়। মূলত পাহাড়ি ঢলের কারণে নদীর পানি দ্রুত বাড়ছে। পাহাড়ি ঢল না কমলে বন্যার শঙ্কা থেকেই যাচ্ছে। ’ আগের বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত বাঁধের কাজ ব্যাহত হচ্ছে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘বিগত বন্যার পর ক্ষতিগ্রস্ত বাঁধগুলো সংস্কারে আমরা হাত দিয়েছি। কিন্তু বিভিন্ন জায়গায় পানি বাড়ায় আমাদের কাজ ব্যাহত হচ্ছে। ’

আবহাওয়া অধিদপ্তরের সিলেট কার্যালয়ের জ্যেষ্ঠ আবহাওয়াবিদ সাঈদ আহমেদ চৌধুরী বলেন, আগামী ১৭ জুন পর্যন্ত সিলেটে বৃষ্টিপাত হবে। আপাতত দিনে কম, রাতে বেশি বৃষ্টি হবে। তবে ১২ জুন রাত থেকে বৃষ্টিপাতের পরিমাণ বাড়বে। এর পর থেকে রাতের পাশাপাশি দিনের বেলাও বৃষ্টিপাত বেশি হবে। বরাক অববাহিকায়ও বৃষ্টির পূর্বাভাস আছে।

https://www.kalerkantho.com/print-edition/last-page/2022/06/08/1153510