৭ জুন ২০২২, মঙ্গলবার, ১০:৫৭

ডলার দামের আরেক লাফ

আমদানি পর্যায়ে ৯২ টাকা ৫০ পয়সা নির্ধারণ

আবারো বাড়ল ডলারের দাম। বৃহস্পতিবারের পর গতকাল সোমবার আমদানি পর্যায়ে প্রতি ডলারে এক টাকা বেড়ে ৯১ টাকা ৫০ পয়সা থেকে ৯২ টাকা ৫০ পয়সায় লেনদেন হয়েছে। লেনদেনের এ তথ্য বেসরকারি ব্যাংকগুলো কেন্দ্রীয় ব্যাংককে অবহিত করেছে বলে ব্যাংকাররা জানান।

জানা গেছে, গত বৃহস্পতিবার এক দিনে ডলারের দাম রেকর্ড বেড়েছিল। ওই দিন প্রতি ডলারে আমদানি পর্যায়ে (বিসি সেলিং) সর্বনিম্ন ১ টাকা ৭৫ পয়সা ও সর্বোচ্চ ২ টাকা ৩৫ পয়সা বেড়ে ৯০ টাকা ৯০ পয়সা ও ৯১ টাকা ৫০ পয়সা নির্ধারণ করা হয়। আর আন্তঃব্যাংকে ১ টাকা বাড়িয়ে ৮৯ টাকা থেকে ৯০ টাকা নির্ধারণ করা হয়। এর আগে কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে ব্যাংকগুলোকে একক দর অর্থাৎ ৮৯ টাকা ১৫ পয়সা নির্ধারণ করে দেয়া হয়েছিল। কিন্তু কেন্দ্রীয় ব্যাংকের এ দর নির্ধারণ করে দেয়ার পর হঠাৎ ডলারের বিক্রেতা শূন্য হয়ে পড়ে ব্যাংকিং খাতে। একই সাথে রেমিট্যান্স প্রবাহও কমতে থাকে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে কেন্দ্রীয় ব্যাংক সিদ্ধান্ত নেয়ার মাত্র তিন দিনের মাথায় একক দর থেকে সরে এসে ডলারের দাম নির্ধারণ ব্যাংকগুলোর হাতে ছেড়ে দেয়।

ব্যাংকাররা জানান, কেন্দ্রীয় ব্যাংকের বেঁধে দেয়া দরের চেয়ে বেশি দামে ডলার কেনা হয়। এ কারণে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নির্ধারিত দরে কেউ লেনদেন করতে পারেনি। পরিস্থিতি সামাল দেয়ার জন্যই ডলারের একক দর তুলে দেয়া হয়। এরই প্রভাব পড়ছে বৈদেশিক মুদ্রাবাজারে।

একটি বেসরকারি ব্যাংকের তহবিল ব্যবস্থাপক জানান, বাজারের চাহিদা ও জোগানের ভিত্তিতেই ডলারের দাম নির্ধারণ করে দেয়া হচ্ছে। এ কারণে গত রোববার প্রতি ডলারে ৫০ পয়সা এবং গতকাল আরো ৫০ পয়সা বাড়িয়ে আমদানি পর্যায়ে ৯২ টাকা ৫০ পয়সা নির্ধারণ করে দেয়া হয়। তবে আন্তঃব্যাংকে এক এক ব্যাংক এক এক হারে লেনদেন করেছে। আর ব্যাংকগুলো নগদ ডলারের সঙ্কট মেটাতে ৯৬ টাকা ৫০ পয়সা দরে গতকাল ডলার লেনদেন করেছে। একটি ব্যাংকের ট্রেজারি হেড জানিয়েছেন, আগামী সপ্তাহজুড়েই ডলারের দাম বাড়তে থাকবে, কারণ ডলারের সরবরাহ কমে গেছে। কিন্তু চাহিদা কমেনি, বরং বেড়ে গেছে। তিনি বলেন, বেশি দাম পাওয়ার আসায় প্রবাসীরা বেশি করে রেমিট্যান্স পাঠাবেন। এতে আপনাআপনিই ডলারের সরবরাহ বেড়ে গিয়ে মূল্য স্থিতিশীল হবে।

এ দিকে ডলারের মূল্য বেশি বেড়ে গেলে পণ্য আমদানি ব্যয় বেড়ে যাবে। এতে মূল্যস্ফীতির চাপ বেড়ে যাবে। এ পরিস্থিতি সামাল দেয়ার জন্য বিলাসজাত পণ্য আমদানি কমানোর ওপর জোর না দিলে বৈদেশিক মুদ্রা মজুদের ওপর চাপ আরো বেড়ে যেতে পারে। এ কারণেই কেন্দ্রীয় ব্যাংকের পক্ষ থেকে বাজার তদারকিতে জোর দেয়া হয়েছে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে, ব্যাংকগুলো যাতে অবাধ সুযোগের অপব্যবহার না করে সে জন্য বাজার তদারকি অব্যাহত রাখবে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। ব্যাংকগুলো কৃত্রিম সঙ্কট সৃষ্টি করতে বাড়তি ডলার মজুদ রাখছে কি না তা যাচাই করা হবে। এ জন্য প্রতিদিনের এনওপির (ব্যাংকগুলোর ডলার রাখার সীমা) অবস্থান, আমদানি পর্যায়ে ডলারের মূল্য এবং কী দামে বিদেশ থেকে রেমিট্যান্স সংগ্রহ করছে তার তথ্য প্রতিদিন বেলা ১১টার মধ্যে বাংলাদেশ ব্যাংকে পাঠানোর নির্দেশ দেয়া হয়েছে সংশ্লিষ্ট।

https://www.dailynayadiganta.com/first-page/668619