সদ্য সমাপ্ত মে মাসে দেশের বিভিন্ন স্থানে ১১টি গণপিটুনির ঘটনা ঘটেছে। এসব ঘটনায় সাতজন নিহত ও তিনজন গুরুতর আহত হয়েছেন। চোর বা ডাকাত সন্দেহে এসব গণপিটুনির ঘটনা সংঘটিত হয়। এছাড়া আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হেফাজতে একজনের মৃত্যু হয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার গণমাধ্যমে পাঠানো এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এই তথ্য জানিয়েছে মানবাধিকার সংস্কৃতি ফাউন্ডেশন (এমএসএফ)।
সংগঠনটি জানায়, বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত ও এমএসএফ কর্তৃক সংগৃহীত বিভিন্ন তথ্য অনুযায়ী, চলতি বছরের মে মাসে মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনা পর্যালোচনায় দেখা যায়, ধর্ষণসহ নারী ও শিশুদের ওপর সহিংসতার ঘটনা উদ্বেগজনকভাবে বেড়ে গেছে।
মানবাধিকার লংঘনের এ ঘটনাগুলো ক্রমাগত বৃদ্ধি পাওয়ায় এমএসএফ গভীর ক্ষোভ ও উদ্বেগ প্রকাশ করছে। এমএসএফ জানায়, জাতীয় দৈনিকসমূহে প্রকাশিত সংবাদের ভিত্তিতে প্রতিবেদনটি তৈরি করা হয়েছে। প্রায় প্রতিটি ঘটনার ক্ষেত্রেই স্থানীয় হিউম্যান রাইটস ডিফেন্ডারদের (মানবাধিকার কর্মী) মাধ্যমে তা ভেরিফাই (যাচাই) করা হয়েছে। চলতি বছরের ১ থেকে ৩১ মে পর্যন্ত সংঘটিত ঘটনার ভিত্তিতে এ রিপোর্ট তৈরি করা হয়েছে।
মে মাসে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পরিচয়ে তুলে নিয়ে যাওয়ার অভিযোগে দুটি ঘটনা গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়। এছাড়া আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হেফাজতে একজনের মৃত্যু, পুলিশের গ্রেফতারকালে ধাওয়া খেয়ে পানিতে ঝাঁপ দিলে মৃত্যু হয় দুজনের। এ সময় কারাগারে মারা গেছে আটজন। এছাড়া চলতি মাসে ৩৮টি রাজনৈতিক সহিংসতার ঘটনায় চারজন নিহত, ১৬ জন গুলিবিদ্ধ হয়ে গুরুতর আহতাবস্থায় চিকিৎসাধীন। এসব ঘটনায় আহত হয়েছেন ৫৬৯ জন।
এদিকে, মে মাসে ৪১৪টি নারী ও শিশু নির্যাতনের ঘটনা সংঘটিত হয়েছে, যা গত মাসের তুলনায় ৪৭টি বেশি। এ মাসে ৮৪টি ধর্ষণের ঘটনা ঘটেছে, যা বিগত মাসে ছিল ৭১টি। এর মধ্যে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের ঘটনা ঘটেছে ২২টি, ধর্ষণ ও হত্যার ঘটনা ঘটেছে চারটি। এদের মধ্যে চারজন কিশোরীসহ ১০ জন প্রতিবন্ধী ধর্ষণের শিকার হয়েছে এবং সংঘবদ্ধ ধর্ষণের শিকার হয়েছে এক প্রতিবন্ধী কিশোরী ও দুই নারী। মে মাসে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের দুটি মামলায় একজন সাংবাদিকসহ পাঁচজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। অন্যদিকে পেশাগত দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে ২৭ জন সাংবাদিক কাজে বাধা পাওয়া এবং হয়রানির শিকার হয়েছেন।
