১ জুন ২০২২, বুধবার, ১০:৩০

প্রায় আড়াই সপ্তাহ ধরে আটকা গমবাহী শত শত ট্রাক

গম রপ্তানিতে ভারতের নিষেধাজ্ঞার কবলে পড়েছে বাংলাদেশ। এর ফলে চাঁপাইনবাবগঞ্জের সোনা মসজিদ স্থলবন্দরের বিপরীতে ভারতের মহদিপুর স্থলবন্দরে গত ১৮ দিন ধরে আটকা পড়ে আছে গম বোঝাই শত শত ট্রাক। এদিকে এই অঞ্চলে গত এক সপ্তাহে গমের আটার কেজিপ্রতি মূল্য বৃদ্ধি পেয়েছে প্রায় ২০ টাকা করে।

ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার বাংলাদেশে গম রফতানিতে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে গত ১২ মে। এর ফলে ভারতীয় অংশের বন্দরগুলোর কর্তৃপক্ষ গম পরিবহনকারী যানবহনগুলো সীমান্তের ওপারেই আটকে দেয়। যদিও এসব গম নিষেধাজ্ঞা আরোপের আগেই এলসি করা হয়। গতকাল মঙ্গলবার পশ্চিমবঙ্গের একটি বাংলা টিভি চ্যানেলের খবরে জানা যায়, বাংলাদেশে গম রপ্তানির ক্ষেত্রে কেন্দ্রীয় সরকারি নিষেধাজ্ঞার ফলে বিভিন্ন স্থল, নৌ, রেল ও বিমানবন্দরে আটকে আছে কয়েক হাজার গম বোঝাই ট্রাক। এমনই ছবি লক্ষ্য করা গেছে পশ্চিমবঙ্গের মালদা জেলার মহদিপুর ভারত-বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক বাণিজ্য সীমান্তে। ঐভাবেই গমের ট্রাক রয়েছে ১২ মে থেকে। আর এভাবে দীর্ঘদিন ধরে উত্তপ্ত পরিবেশে গম থাকলে তা নষ্ট হওয়ার আশঙ্কা করছে ভারতীয় রপ্তানিকারকরা। অবিলম্বে ভারত সরকার যাতে দিকটি গুরুত্ব দিয়ে দেখে সেজন্য কেন্দ্রীয় বাণিজ্যমন্ত্রীর কাছে লিখিত আবেদন পাঠিয়েছেন ওয়েস্ট বেঙ্গল এক্সপোর্টার কোর্ট ইউনিটির কর্তারা। কিন্তু আপাতত মালদার মহদিপুরের স্থল বাণিজ্য বন্দর থেকে এখনো বাংলাদেশে গম রপ্তানির ক্ষেত্রে কোন রকম দিক নির্দেশনা আসেনি। কেন্দ্রীয় সরকারের ঐ নির্দেশিকা জারির অনেক পূর্বেই মালদার ঐ মহদিপুরে আন্তর্জাতিক সীমান্তে বিভিন্ন রাজ্য থেকে এসে গম বোঝাই লরিগুলো ফাঁকা পার্কিং জোনে দাঁড়িয়ে আছে। কবে নাগাদ এতো গম বোঝাই লরি যাওয়ার নিদর্শনা আসবে সে ব্যাপারে কিছুই জানে না লরির চালক থেকে শুরু করে রপ্তানিকারকেরা। উল্লেখ্য, গত ১২ মে প্রদত্ত ভারতের কেন্দ্রীয় সরকারের নির্দেশে বলা হয়েছে ১৩ মে তারিখের পর থেকে বিদেশে কোন গম রফতানি হবে না। এরই ধারাবাহিকতায় স্থলবন্দরে গতকাল ৩১ মে পর্যন্ত গমের ট্রাকগুলো আটকে ছিল।

এবিষয়ে চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা সিএন্ডএফ এজেন্ট সমিতির সহসভাপতি খাইরুল ইসলাম পশ্চিমবঙ্গের মহদিপুরে গমের শত শত ট্রাক আটকে পড়ার সত্যতা উল্লেখ করে বলেন, এসব গম এভাবে পড়ে থাকলে নষ্ট হবে।

বাংলাদেশের আমদানিকারকরা এই গমের জন্য এলসি করেছেন। এই গম যদি বাংলাদেশে আদৌ আসতে না দেয়া হয় তাহলে এলসি’র টাকা হয়তো তারা ফেরত পাবেন। তবে কিছু লোকসান তো গুনতেই হবে। তার চেয়ে বড়ো কথা হলো, এই গম বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ চাহিদা পূরণ করতো এবং এতে গম ও আটার মূল্য স্থিতিশীল থাকতো। এরই মধ্যে চাঁপাইনবাবগঞ্জ অঞ্চলে আটার দাম প্রতিকেজি প্রায় ২০ টাকা করে বেড়ে গেছে। এই পরিস্থিতি সারা দেশে সৃষ্টি হলে অবাক হওয়ার কিছু থাকবে না বলে তিনি উল্লেখ করেন।

https://dailysangram.com/post/490892