২৬ মে ২০২২, বৃহস্পতিবার, ১২:৫৫

যানজট ও পানিবদ্ধতায় নাকাল নগরবাসী

সকাল থেকে গুমোট গরমের পর বেলা গড়াতেই হঠাৎ বৃষ্টি নামে রাজধানীতে। এই বৃষ্টি রাজধানীবাসীকে কিছুটা শীতলতা এনে দিলেও এক ঘন্টার বৃষ্টিতে রাজধানীর বিভিন্নস্থানে পানিবদ্ধতা সৃষ্টি হয়। পরবর্তীতে যানজট ও কাদাপানিতে দুর্ভোগে পড়ে নগরবাসী।

গতকাল বুধবার দুপুর সোয়া ১২টার দিকে রাজধানীজুড়ে বৃষ্টি শুরু হয়। চলে দেড়টা পর্যন্ত। এতে বারিধারা, ভাটারা, কুড়িল এলাকার বিভিন্ন সড়কে পানিবদ্ধতা তৈরি হয়। বিশেষ করে অলিগলিতে পানি জমে যায় বেশি। স্থানীয়দের অভিযোগ, ড্রেনে পানি সরে যাওয়ার সুযোগ না থাকায় এভাবে পানিবদ্ধতা দেখা দিয়েছে।

এছাড়া গ্রিন রোড, মিরপুর, মোহাম্মদপুর, শান্তিনগর ও মালিবাগ এলাকায়ও পানিবদ্ধতা দেখা যায়। পথচারী ও বাসিন্দাদের অভিযোগ, সময় মতো ও দ্রুত পানি নিষ্কাশন না করায় এ অবস্থার সৃষ্টি হয়।

এদিকে বৃষ্টিতে রাজধানীর নর্দা থেকে যমুনা ফিউচার পার্ক পর্যন্ত যানজট ও চলাচলে ধীরগতি দেখা গেছে। এসময় রিকশা এবং সিএনজিতে দ্বিগুন ভাড়া নেওয়া হয়।

রাজধানীর আগারগাঁও এলাকায় বেশ কয়েকটি হাসপাতাল ও অনেক গুরুত্বপূর্ণ সরকারি অফিস ও কার্যালয় থাকায় ওই এলাকায় যানজট এমনিতেই অনেক বেশি থাকে। বৃষ্টির কারণে ওই এলাকার সড়কের পাশে পানিবদ্ধতা ও যানজটের সৃষ্টি হয়। আগারগাঁও থেকে আজিমপুরগামী একটি বাসের যাত্রী তাসলিমা খাতুন বলেন, ‘বাসা থেকে যখন বের হলাম, তখন রোদ ছিল। এখানে শিশু হাসপাতালে আমার এক আত্মীয়ের সঙ্গে দেখা করতে ঢোকার পর বৃষ্টি শুরু হয়। বৃষ্টি থামার পর এখন একটু উত্তরার দিকে যাব। কী যে একটা বিরক্তিকর যানজটের ভেতর পড়লাম। এই বৃষ্টি হলে রাস্তায় আরও বেশি সমস্যা হয়।’

সকালে বিজয় সরণি থেকে মিরপুরের দিকে যাওয়ার সময় এক সিগন্যালে তিনবার দাঁড়াতে হয়েছে বলে জানান সুজাত সিদ্দিক। তিনি বলেন, অফিস সময়ে রাস্তা ফাঁকা থাকবে না জানি। সকালে তাড়াতাড়ি বের হলেও এই সিগন্যালের হাত থেকে রেহাই নেই। এত জ্যাম আর এতক্ষণ সিগন্যালে দাঁড়িয়ে থাকতে হয়। ধানমন্ডি ৩২ থেকে পান্থপথে বিশাল যানজটের সৃষ্টি হয় সকাল থেকেই। এদিকে ফার্মগেট থেকে শাহবাগের দিকেও বেশ লম্বা যানজটের দেখা মেলে দিনের শুরু থেকে।

মোহাম্মদপুর থেকে বিএসএমএমইউতে অসুস্থ বোনের জন্য খাবার নিয়ে যাচ্ছিলেন রানী বড়ুয়া। তিনি বলেন, ‘এই রাস্তা আসতে সময় লেগেছে দেড় ঘণ্টা। এভাবে আর কত দিন চলবে। আমরা সাধারণ মানুষ সারা দিনের বেশির ভাগ সময়ই রাস্তায় কাটাচ্ছি। কোথাও পৌঁছানো যায় না সময়মতো। একটা অসুস্থ রোগীবাহী অ্যাম্বুলেন্স রোগী নিয়ে পৌঁছাতে পারে না সময়মতো। কোনো ব্যবস্থাপনা নেই। ট্রাফিক আইন করে রেখেছে তবে কেউ মানে কি মানে না, তা-ও কেউ দেখতে আসে না জীবনেও।

বৃষ্টি থামার পর হাতিরঝিল এলাকার ভেতরেও কিছুটা যানজটের সৃষ্টি হয়। বাসাবো থেকে বাড্ডা পর্যন্ত দীর্ঘ যানজটে আটকে থাকতে হচ্ছে যাত্রীদের। রাস্তায় সিগন্যালে বসে থাকতে হচ্ছে ঘণ্টার পর ঘণ্টা। এমনকি উড়ালসেতুর ওপরেও গাড়ি থেমে আছে। মোটরসাইকেল আরোহী আবদুল্লাহ আল মামুন বলেন, আমি অনেকক্ষণ পর একটা রাইডার পেয়েছি। এই যানজট ঠেলে কেউ যেতে চায় না। বৃষ্টির কারণে ভোগান্তিটা আরও এক ধাপ বেড়ে গেছে।’

কলেজ গেটের ট্রাফিক পুলিশ নুর এ আলম বলেন, সকাল থেকে অফিস টাইমে যানজট বেশি ছিল। এরপর বৃষ্টির কারণে যানজট কিছুটা বেড়ে যায়। এখন পরিস্থিতি আবারও স্বাভাবিক হয়েছে। আমরা তো সব সময়ই পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখার চেষ্টা করছি। প্রাকৃতিক কোনো কিছু তো আমাদের হাতে নেই।

https://dailysangram.info/post/490264