২৫ আগস্ট ২০২১, বুধবার, ২:৫২

ভেঙে পড়েছে রাজধানীর ট্রাফিক ব্যবস্থা

ভয়াবহ আকার ধারণ করছে রাজধানীর যানজট। লকডাউন শিথিল করে শতভাগ গণপরিবহন চলাচলের অনুমতি দেয়ার পর থেকে প্রতিদিনই ভয়াবহভাবে বৃদ্ধি পাচ্ছে যানজট। একটি কাজ নিয়ে এক দেড় ঘণ্টা সময় হাতে নিয়ে বের হয়েও সঠিক সময়ে কাজ করতে পারছেন না কেউ। অনেকের ধারণা লকডাউন শিথিলের পর ট্রাফিক ব্যবস্থাটাই ভেঙে পড়েছে।
তবে ট্রাফিক পুলিশ বলছে, আগেও এমন যানজট হতো। তবে লকডাউনে আটকে থাকা কাজ নিয়ে রাস্তায় বেশি নামছে মানুষ। আবার অ্যাপস-ভিত্তিক যানবাহন চলাচলের কারণে কোনো গাড়িই এখন বসে নেই। করোনা থেকে রক্ষা পেতে অনেকেই এসব গাড়ি ব্যবহার করে নিরাপদে যাওয়ার চেষ্টা করছে। যার কারণে রাস্তায় সব ধরনের যানবাহনের চাপ বেড়ে গেছে। আবার উন্নয়নমূলক কাজের কারণে অনেক রাস্তাও সরু হয়ে হয়ে গেছে।
গতকাল মঙ্গলবার রাজধানীর গাবতলী, মিরপুর, কল্যাণপুর, সায়েন্স ল্যাবরেটরি, এলিফ্যান্ট রোড শাহবাগ পল্টন ঘুরে এমন চিত্র দেখা গেছে।
দুপুর ১২টার সময় কাকরাইলের একটি আর্থিক প্রতিষ্ঠানে কাজ ছিল আরিফুল ইসলামের। যানজটের কথা চিন্তা করে তিনি বাইক নিয়ে দুই ঘণ্টা আগে শেওড়াপাড়ার বাসা থেকে বের হন। রোকেয়া সরণি গিয়ে দেখেন যানজটে আটকে শত শত গাড়ি দাঁড়িয়ে আছে। তখন বিকল্প চিন্তা করেন তিনি। আরিফুল বলেন, মঙ্গলবার নিউমার্কেট, এলিফ্যান্ট রোড, ধানমন্ডি এলাকার শপিংমল, মার্কেট বন্ধ থাকে। হয়তো এই এলাকায় গাড়ির চাপ কম থাকবে। এ কথা ভেবে ৬০ ফিট রাস্তা দিয়ে শ্যামলী শিশুমেলার পাশ দিয়ে মিরপুর সড়কে উঠতে চান। কিন্তু লাভ হয়নি। ৬০ ফিটে উঠেই মাথায় হাত দেন তিনি। পুরো রাস্তা ছিল যানবাহনে আটকা। আরিফুল বলেন, অবশেষে বাইকে করে কাকরাইল পৌঁছাতে তার সময় লেগেছে প্রায় দেড় ঘণ্টা।
গাবতলী থেকে জিরো পয়েন্টে পৌঁছাতে সময় লেগেছে আড়াই ঘণ্টা। শুভযাত্রা পরিবহনের যাত্রী রুমেল হাসান বলেন, গাবতলী থেকে তিনি জিরো পয়েন্টের উদ্দেশে রওনা করেন। কিন্তু যানজটে পড়ে বাস সামনের দিকে এগোতেই পারছিল না। এদিকে ভ্যাপসা গরমে বাসে অসুস্থ হয়ে পড়ছিলেন অনেকেই। বারবারই মনে হচ্ছিল সামনের সিগন্যাল পার হলেই হয়তো জ্যাম ছাড়াবে। কিন্তু তার কোনো লক্ষণ দেখা যাচ্ছিল না। প্রায় আড়াই ঘণ্টা পর তিনি জিরো পয়েন্টে পৌঁছান। শুভযাত্রা পরিবহনের চালক মহসিন জানান, তিনি মানিকগঞ্জ থেকে ঢাকায় এসেছেন। সাভারের পর থেকে মূলত যানজট শুরু হয়েছে। হেমায়েতপুর এসে তা আরো বৃদ্ধি পায়। আর গাবতলী পৌঁছানোর পর তো মনে হচ্ছিল গাড়ির চাকাই ঘুরছে না। তিনি বলেন, রাস্তায় প্রাইভেট গাড়ির সংখ্যাই বেশি। অন্যান্য যানবাহন তো আছেই।
১১ আগস্ট কঠোর লকডাউন শিথিল করার পর থেকেই এখন প্রায় সব গণপরিবহন চলাচল করছে। তবে প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী ১৯ আগস্ট থেকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে সড়ক, রেল ও নৌপথে শতভাগ গণপরিবহন চলাচলের অনুমতি দেয় সরকার। এরপর থেকে প্রতিদিনই বাড়ছে যানজট।া

 

https://www.dailynayadiganta.com/first-page/603778/