সরাইলে মেঘনার ভাঙনে বিলীন হচ্ছে ঘরবাড়ি
২২ আগস্ট ২০২১, রবিবার, ১২:৪৬

৬ জেলায় বন্যার অবনতির শঙ্কা

সব নদীর পানি বাড়ছে : ভাঙনে দিশেহারা বিভিন্ন জেলার মানুষ

দেশের অভ্যন্তরে বৃষ্টি ও ভারতে ভারী বর্ষণের কারণে নিচের দিকে নেমে আসছে বাড়তি পানি। ফলে সিলেট অঞ্চলের সুরমা ও কুশিয়ারা ছাড়া দেশের ছোট-বড় সব নদীর পানি বৃদ্ধি পাচ্ছে। কয়েকটি নদীর পানি ইতোমধ্যে বিপৎসীমা অতিক্রম করেছে। পরবর্তী ২৪ ঘণ্টায় ছয় জেলায় চলতি বন্যা পরিস্থিতির অবনতি ঘটতে পারে বলে পানি উন্নয়ন বোর্ড সতর্ক করে দিয়েছে। গতকাল শনিবার সকাল পর্যন্ত পানি উন্নয়ন বোর্ড পর্যবেক্ষণ করে দেশের এমন ৬৪ স্থানের নদীতে পানি বেড়েছে এবং হ্রাস পেয়েছে ৪২টি স্থানে।
এ দিকে ভারতের আসামে ব্রহ্মপুত্র নদে যে পানি এসেছে তা কমতে শুরু করেছে। ভারতের সেন্ট্রাল ওয়াটার কমিশনের ওয়েবসাইটে বলা হয়েছে, আজ রোববার সন্ধ্যার মধ্যে ব্রহ্মহ্মপুত্র নদের পানি সর্বোচ্চ ১৫ সেন্টিমিটার পর্যন্ত হ্রাস পাবে। ব্রহ্মপুত্রের এই পানি বাংলাদেশে যমুনা ও ব্রহ্মপুত্র হয়ে ক্রমান্বয়ে নিচের দিকে প্রবাহিত হয়ে বঙ্গোপসাগরে পড়বে। এ ছাড়া সীমান্ত সংলগ্ন ভারতের প্রায় সব নদীর পানি বাংলাদেশের নদীগুলো দিয়ে প্রবাহিত হয়ে বঙ্গোপসাগরে পড়েছে। ফলে ভারতের আসাম, মেঘালয়, পশ্চিমবঙ্গ, বিহার এলাকায় বন্যা হলে এর পুরো পানিটাই বাংলাদেশে এসে পড়ে এবং এখানে বন্যা ঘটায়। উপরন্তু দেশের নদীগুলো কালের পরিক্রমায় পলিতে ভরাট হয়ে যাওয়ায় অল্প পানিতেই ভরে যাচ্ছে এবং বন্যার সৃষ্টি হচ্ছে।
পানি উন্নয়ন বোর্ড আগামী ২৪ ঘণ্টায় কুড়িগ্রাম, পাবনা, কুষ্টিয়া, মানিকগঞ্জ, রাজবাড়ী ও ফরিদপুর জেলার নিম্নাঞ্চলে বন্যা পরিস্থিতির অবনতির আশঙ্কার কথা জানিয়েছে। ইতোমধ্যে দেশের চার নদীর পানি বিপৎসীমা অতিক্রম করেছে। ২৪ ঘণ্টা পর আরো দুই নদী বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হবে বলে পূর্বাভাসে বলা হয়েছে। এই দুই নদী হলো আরিচা পয়েন্টে যমুনা এবং বাঘাবাড়ি পয়েন্টে আত্রাই নদী। অপর দিকে তিস্তা নদী আগামী ২৪ ঘণ্টায় স্থিতিশীল থাকতে পারে।
ইতোমধ্যে বিপৎসীমা অতিক্রম করেছে এমন নদীগুলোর মধ্যে পাটেশ্বরীতে দুধকুমার ৪ সেন্টিমিটার, মথুরাতে যমুনা ৮ সেন্টিমিটার, গোয়ালন্দে পদ্মা ৪২ সেন্টিমিটার, কুমারখালীতে গড়াই ২০ সেন্টিমিটার বেশি উচ্চতায় প্রবাহিত হচ্ছে। এসব নদীর পানি এক সময় দেশের মধ্যাঞ্চলে এসেও বন্যার পরিস্থিতি তৈরি করে।
অপর দিকে পাউবো আগামী পাঁচ দিনের একটি পূর্বাভাসে জানিয়েছে, ওই সময়ের মধ্যে বিপৎসীমা অতিক্রম করতে পারে কুড়িগ্রামে ধরলা, বাঘাবাড়িতে করতোয়া ও আত্রাই, সিরাজগঞ্জে ও আরিচায় যমুনা, এলাসিন ঘাটে ধলেশ্বরী, তালবাড়িয়ায় গঙ্গা, গোয়ালন্দ, মাওয়া ও ভাগ্যকূলে পদ্মা, কুমারখালীতে গড়াই এবং সুরেশ্বরীতে পদ্মা নদী। গোয়ালন্দে পদ্মা পাঁচ দিন পর ৬১ সেন্টিমিটার, সুরেশ্বরীতে পদ্মা বিপৎসীমার ৩৯ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হতে পারে।
এ দিকে বিভিন্ন নদীতে পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় বিপদ বাড়ছে তীরবর্তী এলাকার মানুষের। ফি বছরই জুলাই থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত বন্যার পানিতে ভাসিয়ে নিয়ে যায় অসংখ্য বাড়িঘর, ক্ষেতের ফসল। নদী ভাঙনের কবলে ভিটে-মাটি হারিয়ে নিঃস্ব হয়ে যাচ্ছে হাজার হাজার পরিবার। নদী থেকে শত মিটার দূরের বাড়িও ভাঙনের শিকার হচ্ছে। বন্যার প্রভাবে এবারও ভাঙ্গছে বিভিন্ন জেলার নদীতীরবর্তী এলাকা। এতে দিশাহারা হয়ে পড়েছে দুর্গত এলাকার অসংখ্য ক্ষতিগ্রস্ত মানুষ।
পদ্মা-মেঘনায় বিলীন হচ্ছে চাঁদপুরের শিলাচর গ্রাম
চাঁদপুর সংবাদদাতা জানান, চাঁদপুর সদর উপজেলার রাজরাজেশ^র ইউনিয়নের শিলাচর এলাকায় পদ্মা নদীর পানি বৃদ্ধি পেলেই ভাঙন শুরু হয়। ওই ইউনিয়নের পূর্ব দিকে মেঘনা নদী আর পশ্চিম দিকে প্রমত্তা পদ্মা। পদ্মা-মেঘনার ভাঙণে প্রায় প্রতি বছরই রাজরাজেশ্বরের কোনো না কোনো গ্রাম নদীতে বিলীন হয়ে যাচ্ছে। ইউনিয়নের মূল ভূখণ্ডের মাঝখান দিয়েও সর্বনাশা পদ্মা আঘাত হেনে শিলাচর ও চিরারচর গ্রামকে আলাদা করে দিয়েছে। পদ্মার স্রোতে গত ক’দিনের ভাঙনে বহু পরিবারের বসতভিটা ও ফসলি জমি নদীতে চলে গেছে। হুমকির মুখে রয়েছে শিলাচর ও বলাশিয়া গ্রামের গুচ্ছগ্রাম। শিলাচর গ্রামের প্রায় তিন শতাধিক পরিবার ভাঙন আতঙ্কের মধ্যেই দিনযাপন করছে।
স্থানীয়দের সাথে কথা বলে জানা গেছে, ২০২০ সালেও বড় ধরনের ভাঙনের মুখে পড়ে শিলাচর এলাকাটি। তখন ওমর আলী উচ্চবিদ্যালয়ের তিন তলা পাকা নতুন ভবন পদ্মায় বিলীন হয়ে যায়। একই সাথে বসতবাড়ি হারায় শতাধিক পরিবার। বর্তমানে প্রায় তিন শতাধিক পরিবার এই এলাকায় বসবাস করছে। কয়েকটি পরিবার তাদের ঘরবাড়ি অন্যত্র সরিয়ে নিচ্ছেন, কেটে নিচ্ছেন জমির গাছপালা। এদের কেউ কেউ একাধিকবার নদী ভাঙনের শিকার হয়েছেন। ইউপি সদস্য আলী আহমদ বলেন, ভাঙনে ইউনিয়নের ছয়টি ওয়ার্ডই বিলীন হওয়ার পথে। নদীর স্রোত এবং অপরিকল্পিতভাবে ড্রেজিং করার কারণে আমরা ভাঙন হুমকিতে। রাজরাজেশ^র ইউনিয়ন চেয়ারম্যান হযরত আলী ব্যাপারী বলেন, শিলাচর গ্রামের তিন শতাধিক বসতভিটা ইতোমধ্যে নদীতে বিলীন হয়ে গেছে। গত কয়েক দিন দুইটি গণকবরস্থান, দুইটি মসজিদ, একটি ঈদগাঁ ও একটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় নদীতে বিলীন হয়ে গেছে। ভাঙন হুমকিতে বলাশিয়া গুচ্ছ গ্রাম।
চাঁদপুর সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সানজিদা শাহনাজ বলেন, আমরা ভাঙন এলাকা পরিদর্শন করেছি। বিষয়টি আমাকে চেয়ারম্যান লিখিত জানিয়েছেন। এই বিষয়ে জেলা প্রশাসক পানি উন্নয়ন বোর্ডের প্রকৌশলীর সাথে আলাপ করেছেন। স্থানটি তিন নদীর মোহনা এবং ভাঙন প্রতিরোধ টেকনিক্যাল বিষয় হওয়ায় আমি বেশি কিছু বলতে পারছি না। চাঁদপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী এস এম রেফাত জামিল বলেন, বোর্ডের কারিগরি কমিটি পদ্মার ভাঙনসহ তিন নদীর মোহনা রক্ষায় ২০২০ সালের ডিসেম্বর মাসে স্টাডি করেছেন। তাদের রিপোর্ট কর্তৃপক্ষের নিকট জমা দিয়েছেন। এখন তাদের স্টাডির বিষয়টি যাচাই-বাছাই করার জন্য আমাদের ইনস্টিটিউট অব ওয়াটার মডেলিং (আইডব্লিউএম) শিগগিরই সার্ভে করতে আসবেন। তিনি আরো বলেন, বিভিন্ন আলাপে বুঝতে পেরেছি ইচ্ছে করলেই হঠাৎ পদ্মার ওই অংশের ভাঙন প্রতিরোধ করা যাবে না। কারণ ওখানে প্রতিরোধ করলে তার প্রভাব চাঁদপুর শহরের মোলহেডে এসে পড়বে। এর আগেই শহরের বিপরীতের চরগুলো অপসারণ করতে হবে।
সরাইলে দিশেহারা সহস্রাধিক পরিবার
সরাইল (ব্রাহ্মণবাড়িয়া) সংবাদদাতা জানান, সরাইলে মেঘনার ভাঙনে দিশেহারা সহস্রাধিক পরিবার। উপজেলার পানিশ্বর ইউনিয়নের পালপাড়া, সাখাইতি ও লায়ারহাটি গ্রামের দুই কিলোমিটার এলাকা ভাঙনের কবলে পড়েছে। এলাকা ঘুরে দেখা যায়, এলাকার ঘরবাড়ি, মসজিদ ও চাতালসহ বিভিন্ন স্থাপনা নদীতে বিলীন হয়ে যাচ্ছে। এ ব্যাপারে পানিশ্বর শাখাইতি এলাকার হাজী ছমির বাড়ির কুতুব উদ্দিন ভূঁইয়া বলেন, নদীভাঙনের কবলে অত্র এলাকার ২০ থেকে ২৫টি চাতাল মিল নদীতে বিলীন হয়ে গেছে। একেকটি চাতাল মিলে কয়েক শ’ শ্রমিক কাজ করত। এখন তারা কর্মহীন হয়ে মানবেতর জীপন-যাপন করছেন। পানিশ্বর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো: দ্বীন ইসলাম বলেন, গত চার-পাঁচ ছর ধরে মেঘনা নদীর ধারাবাহিক ভাঙনে ২৫টি চাতাল মিলের ৬০ ভাগ নদীতে বিলীন হয়ে গেছে। এখানকার অগণিত পরিবার রাস্তায় মানবেতর জীবন-যাপন করছেন। পালপাড়া এলাকা থেকে দুই কিলোমিটার এলাকাজুড়ে নদীভাঙনের কবলে রয়েছে। গত তিন বছর ধরে কোটি কোটি টাকার জিও টেক্স বস্তা ফেলে নদীভাঙন প্রতিরোধের চেষ্টায় সাময়িক সুবিধা হলেও স্থায়ীভাবে তেমন কোনো কাজ হয়নি।
পাবনায় পদ্মা-যমুনার পানি বিপদসীমার কাছাকাছি
পাবনা ও ঈশ্বরদী সংবাদদাতা জানান, পদ্মা ও যমুনা নদীতে পানি বেড়ে বিপদসীমার কাছাকাছিতে অবস্থান করছে। পাকশী হার্ডিঞ্জ ব্রিজ পয়েন্টের পদ্মা নদীতে বিপদসীমার মাত্র ১৩ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে পানি প্রবাহিত হচ্ছে। অন্য দিকে যমুনা নদীতে পানি বেড়ে বিপদসীমার ৫ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এ ছাড়া পাবনায় প্রবাহিত ইছামতি, হুরাসাগর, গুমানি, চলনবিল, গাজনার বিলসহ ছোট-বড় ২০টি নদীতে পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। এতে কৃষকের ফসল, ধান, পটোল, মরিচসহ বিভিন্ন ফসল ডুবে গেছে। অনেকের ঘরবাড়িতে পানি উঠে গেছে। অনেকের মধ্যেই সহায় সম্বল হারানোর উৎকণ্ঠা কাজ করছে। এভাবে পানি বাড়লে বড় ধরনের বন্যারও আশঙ্কা করছেন স্থানীয়রা।
পদ্মায় অস্বাভাবিক পানি বৃদ্ধির ফলে ঈশ্বরদীর নদী তীরবর্তী লোকজন চরম বিপর্যয়ের মধ্যে পড়েছে। তলিয়ে গেছে বসতবাড়ি, সবজি ও আখ ক্ষেত, পশুর বাথান এমনকি নদী রক্ষা বাঁধ। উপজেলার চরধাপাড়ী মৌজার মোল্লাপাড়ায় বিপুলসংখ্যক মানুষ পানিবন্দী হয়ে পড়েছে। সুজানগর উপজেলার সাতবাড়ীয়ার বাসিন্দা মমিন মৃধা জানান, এরই মধ্যে তার আউশ ধান ডুবে গেছে। সেই সাথে পটোল ও মরিচের ক্ষেতও ডুবে গেছে। সদর উপজেলার ভাদুরডাঙ্গি গ্রামের শামসুল হক জানান, হঠাৎ পানি বৃদ্ধিতে তার পাঁচ বিঘা ফসল পানির নিচে চলে গেছে। উঁচু জায়গা না থাকায় গরু-ছাগল নিয়েও বিপাকে পড়েছেন। বেড়া পাউবোর সহকারী প্রকৌশলী আবদুল খালেক জানান, যমুনায় বিপদসীমার ৫ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে পানি প্রবাহিত হচ্ছে। ইতোমধ্যে বেশ কয়েকটি এলাকায় পানি প্রবেশ করেছে। পানি উন্নয়ন বোর্ড পাবনার নির্বাহী প্রকৌশলী শাহ আলম চৌধুরী জানান, পদ্মা নদীতে এবার অস্বাভাবিক পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। আমাদের পাকশী হাডিঞ্জ ব্রিজ পয়েন্টে বিপদসীমা ১৪ দশমিক ২৫ সেন্টিমিটার অথচ শনিবার ১৪ দশমিক ২০ সেন্টিমিটার পানির উচ্চতা রেকর্ড করা হয়েছে। আর মাত্র ৫ সেন্টিমিটার উঠলেই বিপদসীমা পার হবে।
আতঙ্কে বাঘা-দৌলতপুরের অর্ধলক্ষ মানুষ
বাঘা (রাজশাহী) সংবাদদাতা জানান, পদ্মাবেষ্টিত রাজশাহীর বাঘা ও কুষ্টিয়া জেলার দৌলতপুর উপজেলার চরাঞ্চলের অর্ধলক্ষাধিক মানুষ বন্যা, নদীভাঙন আতঙ্কে বসবাস করছে। প্রতি বছরই নদীভাঙন ও ঘূর্ণিঝড়ে সব কিছু হারিয়ে সংগ্রাম করে বেঁচে থাকেন তারা। এরই মধ্যে বাঘা উপজেলার চরাঞ্চলের সহস্রাধিক পরিবার পানিবন্দী হয়ে পড়েছেন। এতে মানবেতর জীবনযাপন করছেন তারা।
পদ্মায় হঠাৎ পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় বাঘা উপজেলার চকরাজাপুর ইউনিয়নের চরাঞ্চল, গড়গড়ী ও পাকুড়িয়া ইউনিয়নের আংশিক পদ্মার চর এলাকায় সহস্রাধিক পরিবার পানিবন্দী হয়ে পড়েছে। বন্যাকবলিত চর এলাকায় বসবাসরত পানিবন্দী মানুষ এখন অসহায় ও মানবেতর জীবনযাপন করছে। গত কয়েক দিনে পদ্মা নদীর পানি বৃদ্ধির ফলে গড়গড়ী ইউনিয়নের ব্যাংগাড়ী, চাঁদপুর, ব্রাহ্মণডাঙ্গা, কড়ালী নওশারা, সুলতানপুর, পাকুড়িয়া ইউনিয়নের আংশিক ও চকরাজাপুর ইউনিয়নের বেশির ভাগ এলাকা পানিতে ডুবে গেছে। স্থানীয়রা জানান, ভাঙনে প্রায় ৫০টি পরিবার গৃহহীন হয়ে পড়েছে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা পাপিয়া সুলতানা জানান, চরাঞ্চলের পানিবন্দী পরিবারগুলো মানবেতর জীবনযাপন করছে। আমি সরেজমিন পরিদর্শন করে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবগত করেছি। রাজশাহী পাউবোর নির্বাহী প্রকৌশলী শফিকুল ইসলাম শেখ বলেন, পদ্মা নদীর পানি এখনো বিপদসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। বাকি সব নদীর পানি অন্য বছরের চেয়ে এবার এখনো কম আছে। তবে তিস্তার পানি চলে এলে বিপজ্জনক হতে পারে।
বালিয়াকান্দিতে বেড়িবাঁধের উপরে গড়াইয়ের পানি
রাজবাড়ী সংবাদদাতা জানান, জেলার বালিয়াকান্দি উপজেলার নারুয়া ইউনিয়নের মরাবিলা এলাকায় গড়াই নদীর পানি ভেঙে যাওয়া বেড়িবাঁধের ওপর দিয়ে মাঠে প্রবেশ করতে শুরু করেছে। এতে পাঁচটি গ্রামের মানুষের নির্ঘুম রাত কাটছে আতঙ্কে। শুক্রবার সকালে মরাবিলা এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, গড়াই নদীর মরাবিলা এলাকায় বেড়িবাঁধ ও পাকা সড়ক আগেই বিলীন হয়ে গেছে। গড়াই নদীর পানি বৃদ্ধির সাথে সাথে ফসলি জমির ওপর দিয়ে মাঠে পানি প্রবেশ করছে। করণীয় সম্পর্কে নারুয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মো: আবদুস সালাম, ইউপি সদস্য আবজাল হোসেনসহ বেড়িবাঁধ নির্মাণের বিষয়ে আলোচনা করেছেন। এলাকার অনেকেই বলেন, এর আগে বেড়িবাঁধ ও পাকা সড়কসহ প্রায় ২০০ বিঘা জমি নদীভাঙনে বিলীন হয়েছে।
ইউপি সদস্য আবজাল হোসেন বলেন, আমি নির্বাচিত হওয়ার পর মরাবিলা এলাকায় বেড়িবাঁধ ও পাকা সড়ক বিলীন হওয়ার পর তিনবার চলাচলের সড়ক নির্মাণ করেছি। তিনবারই নদীতে বিলীন হয়েছে।

 

https://www.dailynayadiganta.com/first-page/603203