২১ মে ২০২০, বৃহস্পতিবার, ৪:২০

শ্রমিক-কর্মচারীদের বেতনের ৫ হাজার কোটি টাকা

শর্ত পূরণের ব্যর্থতায় টাকা পাননি অনেকে

কেন্দ্রীয় ব্যাংক ছাড় করেছে ২ হাজার ৭শ’ কোটি টাকা, ব্যাংকগুলোর দাবি বেশিরভাগ অর্থ শ্রমিকদের হিসাবে পাঠানো হয়েছে

গার্মেন্ট সেক্টরের শ্রমিক-কর্মচারীদের জন্য প্রধানমন্ত্রী ৫ হাজার কোটি টাকার প্রণোদনা প্যাকেজ ঘোষণা করলেও নীতিমালার শর্ত পূরণে ব্যর্থতার কারণে অনেকে টাকা পাননি।

এর ফলে ঈদের আগে সাধারণ গার্মেন্ট শ্রমিকরা বেতন-ভাতা না পাওয়ায় নতুন করে সংকট দেখা দিয়েছে।

কারণ সম্পর্কে বিভিন্ন ব্যাংকের দায়িত্বশীল কর্মকর্তারা যুগান্তরকে জানিয়েছেন, কেউ খেলাপি হওয়ায় ঋণ পাননি, পোশাক মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএর সদস্য না হওয়ায় সাব-কন্ট্রাক্টসংশ্লিষ্টরা তাদের শ্রমিকদের জন্য ঋণ নিতে পারেননি।

এছাড়া যেসব গার্মেন্ট শ্রমিকদের ব্যাংক হিসাব কিংবা মোবাইল ব্যাংকিং সুবিধা নেই, তাদের এখনও বেতন দেয়া সম্ভব হয়নি।

এ বিষয়ে সাউথইস্ট ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) এম কামাল হোসেন যুগান্তর বলেন, ৪৭০ কোটি টাকার জন্য তারা কেন্দ্রীয় ব্যাংকে আবেদন করে এপ্রিলের জন্য পেয়েছেন ১৪০ কোটি টাকা। ইতোমধ্যে প্রায় সব টাকাই শ্রমিকদের হিসাবে দেয়া হয়েছে। তবে ঋণখেলাপি কোনো কারখানা বা মালিককে প্রণোদনার টাকা দেয়া হয়নি। ইসলামী ব্যাংক শ্রমিকদের ৩ মাসের বেতন দিতে চেয়েছে ৫৫০ কোটি টাকা। বাংলাদেশ ব্যাংক এক মাসের বেতন বাবদ ১৭২ কোটি টাকা দিয়েছে। বাকি টাকা পরে দেয়া হবে। এ প্রসঙ্গে ইসলামী ব্যাংকের উপব্যবস্থাপনা পরিচালক (ডিএমডি) আবু রেজা মো. ইয়াহিয়া বলেন, ইতোমধ্যে ১৭২ কোটি টাকাই শ্রমিকদের হিসাবে পঠানো হয়েছে।

সোনালী ব্যাংক ১৩টি কারখানার শ্রমিকের ৩ মাসের মজুরি দেয়ার জন্য ৩০ কোটি টাকার আবেদন করেছে। ব্যাংকটি পুরো টাকাও পেয়েছে। এর মধ্যে এপ্রিলের বেতন বাবদ ১০ কোটি টাকার বেশি দেয়া হয়েছে বলে জানান ব্যাংকটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) মো. আতাউর রহমান প্রধান। তিনি বলেন, ছাড় করা টাকা শ্রমিকের হিসাবে চলে গেছে।

অগ্রণী ব্যাংক ২০৯ কোটি টাকার বিপরীতে ৬৫ কোটি টাকা পেয়েছে। এ প্রসঙ্গে অগ্রণী ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) মোহাম্মদ শামস উল ইসলাম বলেন, কারখানার মালিককে জানিয়ে তার নিজের বা প্রতিষ্ঠানের নামে ঋণ সৃষ্টি করে বেতনের টাকা সরাসরি শ্রমিকের হিসাবে দেয়া হয়েছে।

রূপালী ব্যাংক ৪১টি কারখানার শ্রমিকের মজুরি দিতে পেয়েছে প্রায় ৯০ কোটি টাকা। এ প্রসঙ্গে ব্যাংকটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) ওবায়েদ উল্লাহ আল মাসুদ বলেন, শ্রমিকদের ৩ মাসের বেতন বাবদ ৯০ কোটি টাকা অনুমোদন করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এর মধ্যে এপ্রিলের জন্য ৩০ কোটি টাকা ছাড় করা হয়েছে।

করোনা সংকট মোকাবেলায় রফতানিমুখী শিল্পের শ্রমিক-কর্মচারীদের বেতন-ভাতা দিতে সরকার ৫ হাজার কোটি টাকার তহবিল গঠন করেছে। এ তহবিল থেকে ৩ হাজার ৪৭ কোটি টাকার ঋণ নিতে ৪৭টি ব্যাংকের কাছে আবেদন করে ২ হাজার ৪৪টি প্রতিষ্ঠান। এর বিপরীতে এপ্রিলের বেতন বাবদ ২ হাজার ৭০০ কোটি টাকা ছাড় করেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। বাকি টাকা পরবর্তী মাসে ছাড় করা হবে।

https://www.jugantor.com/todays-paper/first-page/309068/