৮ মে ২০২০, শুক্রবার, ৩:৩৭

বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়

১৪ শর্তে অনলাইন কার্যক্রমের অনুমতি

শিক্ষার্থীদের কাছে ক্লাসের বক্তৃতা অনলাইন, ভিডিও এবং অডিও তিন মাধ্যমেই যথাযথভাবে পৌঁছাতে হবে। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের বেতনভাতা প্রদান করতে হবে। এমনি ১৪ শর্তে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে অনলাইনে শিক্ষা ও ভর্তি কার্যক্রম চালানোর অনুমতি দিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি)। বৃহস্পতিবার ‘কার্যালয়-স্মারক’ নামে ওই নির্দেশনাপত্র জারি করা হয়।

এতে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে শর্ত সাপেক্ষে সেমিস্টারের মূল্যায়ন বা পরীক্ষা নেয়ার অনুমতি দেয়ার বিষয়টি উল্লেখ করা হয়েছে। কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ই সর্বোচ্চ ৩০ শতাংশের বেশি অনলাইনে মূল্যায়ন করতে পারবে না। এই ৩০ শতাংশ এবং ছুটির আগে ক্লাস নেয়া বা মূল্যায়নকৃত ৭০ শতাংশ নম্বরের ভিত্তিতে শিক্ষার্থীদের ফল প্রকাশ করা যাবে। ইতোমধ্যে অনলাইনে শিক্ষাক্রম চালানো বিশ্ববিদ্যালয়গুলোই শুধু এই সুযোগ নিতে পারবে। আর যেসব বিশ্ববিদ্যালয় অনলাইনে কার্যক্রম এখনও শুরু করেনি তারা কোন প্রক্রিয়ায় চলতি সেমিস্টারের শিক্ষার্থীদের মূল্যায়ন করবে এবং নতুন ভর্তিকৃত (ভর্তি করলে) শিক্ষার্থীদের শ্রেণি কাজ করাবে- তা নিজেরাই নির্ধারণ করতে পারবে। অর্থাৎ, অনলাইনে কার্যক্রম পরিচালনার সক্ষমতা না থাকা বিশ্ববিদ্যালয়কে শিক্ষার্থী মূল্যায়ন বা পরীক্ষা নেয়ার প্রক্রিয়া ও পরিকল্পনা ঠিক করে ১৭ মে’র মধ্যে ইউজিসিকে জানাতে হবে।

ইউজিসি চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. কাজী শহীদুল্লাহ যুগান্তরকে বলেন, ৯৬টি বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে ৪০টির অনলাইনে কার্যক্রমের সক্ষমতা নেই। ৫৬টি কমবেশি কার্যক্রম চালাতে পারে। নির্দেশনা তৈরির ক্ষেত্রে আমরা এই উভয় ধরনের বিশ্ববিদ্যালয়ের কথা বিবেচনায় রেখেছি। বিশ্ববিদ্যালয়গুলো চাইলে এখনই পরীক্ষা নিয়ে পরের সেমিস্টারে শিক্ষার্থী ভর্তি করাতে পারবে। আবার কেউ যদি মনে করে, মূল্যায়ন পরে করবে; এখন নতুন সেমিস্টারে ভর্তি নিয়ে শিক্ষার্থীদের লেখাপড়া করাবে- সে সুযোগও রয়েছে। কিন্তু চলতি সেমিস্টারের পাঠ অবশ্যই আরোপিত নির্দেশনা অনুযায়ী প্রত্যেক বিশ্ববিদ্যালয়কে শেষ করতে হবে। এর পরই পরের সেমিস্টারে ভর্তির অনুমতি পাবে। উভয় ধরনের বিশ্ববিদ্যালয়কেই মূল্যায়ন পদ্ধতি ও মূল্যায়নের সময়ের কথা অবহিত করে ইউজিসি থেকে পূর্বানুমোদন নিতে হবে।

অনলাইন কার্যক্রম চালানো বিশ্ববিদ্যালয়কে পরীক্ষা নেয়ার দু’টি পন্থা দেয়া হয়েছে। এর একটি হচ্ছে, এখন কেবল লেখাপড়া শেষ করে নতুন সেমিস্টারে ভর্তি নেয়া যাবে। সে ক্ষেত্রে পরীক্ষা নিতে হবে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হওয়ার পর। আর যেসব বিশ্ববিদ্যালয় এখনই পরীক্ষা নিতে চায়, তারা ৩০ শতাংশের বেশি নম্বরের পরীক্ষা নিতে পারবে না। এ ধরনের বিশ্ববিদ্যালয় কোনপথে কীভাবে পরীক্ষা নিবে, সেটাই জানাতে হবে ইউজিসিকে। আর যেসব বিশ্ববিদ্যালয়ে এখনও অনলাইনে নেই বা যায়নি, তারাও নতুন সেমিস্টারে শিক্ষার্থী ভর্তি নিতে পারবে। কিন্তু চলতি সেমিস্টারের এবং আসন্ন সেমিস্টারের শিক্ষার্থীদের কিভাবে লেখাপড়া করা ও পরীক্ষা নেবে তা ইউজিসিকে জানাতে হবে।

ইউজিসি সচিব (চলতি দায়িত্ব) ড. ফেরদৌস জামান বলেন, ৩০ এপ্রিল শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনির সভাপতিত্বে এক ভার্চুয়াল বৈঠকে এই গাইডলাইন তৈরির আলোচনা হয়। নির্দেশনায় দেখা যায়, বছরে দুই সেমিস্টার ধরে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে শিক্ষার্থী ভর্তির অনুমতি দেয়া হয়েছে। ইউজিসি পরিচালক (বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়) ড. ফখরুল ইসলাম যুগান্তরকে বলেন, ইউজিসির ওয়েবসাইটে (www.ugc.gov.bd) অনলাইন শিক্ষা কার্যক্রমের এই গাইডলাইন বা নির্দেশনা প্রকাশ করা হয়েছে। এছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকেও জানিয়ে দেয়া হয়েছে।

https://www.jugantor.com/todays-paper/last-page/305220/