ঢাকার বাজারে নতুন করে দাম বেড়েছে মুগ, মসুর, খেসারি, ডাবলি, ছোলাসহ সবধরনের ডাল ও পেঁয়াজের। চাল, আটা, সয়াবিন তেল, আদা, রসুনের দাম বেড়েছে আরো আগেই। তবে ডিম, মুরগি ও সবজির দাম তুলনামূলক কম। বৈশাখী তোড়জোড় না থাকায় সহনীয় দামে পাওয়া যাচ্ছে ইলিশও। কিন্তু গরুর গোশত কিনতে হচ্ছে বাড়তি দামে, প্রতি কেজি ৬০০ টাকায়।
গতকাল শুক্রবার বিভিন্ন পর্যায়ের ব্যবসায়ীদের সাথে কথা বলে জানা যায়, করোনাভাইরাস আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ার পরপরই চাল ও মসুর ডালের দাম বাড়ে। তবে অ্যাংকর, ছোলা ও মুগ ডালের দাম স্থিতিশীল ছিল। এখন রমজান মাস কাছাকাছি চলে আসায় ছোলা ও অ্যাংকর ডালের দাম বেড়েছে। সেই সঙ্গে বেড়েছে মুগ ডালের দাম। বাজার ও মানভেদে অ্যাংকর ডালের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৪৫ থেকে ৫০ টাকা, যা এক সপ্তাহ আগে ছিল ৩৫ থেকে ৪০ টাকা। ছোলা বিক্রি হচ্ছে ৮০ থেকে ৯০ টাকা কেজি, যা এক সপ্তাহ আগে ছিল ৭০ থেকে ৭৫ টাকা কেজি। আর ১২০ থেকে ১৩০ টাকা কেজি বিক্রি হওয়া মুগ ডালের দাম বেড়ে ১৪০ থেকে ১৫০ টাকা হয়েছে। সেই সঙ্গে কিছুটা দাম কমার পর নতুন করে আবার বেড়েছে পেঁয়াজের দাম। বিক্রেতারা জানায়, করোনা আতঙ্কে ৮০ টাকায় ওঠার পর গত সপ্তাহে পেঁয়াজের কেজি ৩০ টাকায় নেমে আসে। তবে রোজা সামনে রেখে আবার পেঁয়াজের দাম বেড়েছে। বাজার ও মানভেদে দেশী পেঁয়াজের কেজি এখন বিক্রি হচ্ছে ৪৫ থেকে ৫০ টাকা।
এদিকে পয়লা বৈশাখ ঘনিয়ে এলেও ইলিশের বাজারে এবার কোনো উন্মাদনা নেই। উল্টো দাম কমেছে। বাজারে এক কেজি আকারের একটি ইলিশ পাওয়া যাচ্ছে ৯০০ টাকায়। অন্যান্য বছর বৈশাখের আগে এক কেজি ওজনের একটি ইলিশ কিনতে অন্তত দেড় হাজার টাকা খরচ করতে হতো। কখনো কখনো দুই হাজারও। এবার ইলিশের সেই চাহিদা নেই। তাই মন খারাপ ইলিশ ব্যবসায়ীদের। অনেকে আবার নববর্ষের জন্য ইলিশ মজুদ করে ধরা খেয়েছে বলেও জানা গেছে। বিক্রেতারা জানায়, এক কেজি ওজনের ইলিশ ৮০০ থেকে ৯০০ টাকা দরে বিক্রি করছে তারা। এর চেয়ে কিছুটা ছোট ইলিশের দাম রাখছে ৬৭০ টাকা কেজি। আর আধা কেজি ওজনের ইলিশের কেজি ৫০০ টাকার আশপাশে।
ক্রেতা-বিক্রেতাদের সাথে কথা বলে জানা যায়, অধিকাংশ করোনার প্রভাব এবং রমজানকে সামনে রেখে অধিকাংশ পণ্যের দাম বাড়লেও বেশ স্থির রয়েছে সবজির দাম। খুচরা বাজারে গতকাল প্রতি কেজি করলা ৪০ থেকে ৫০ টাকা, বরবটি ৪০ থেকে ৫০ টাকা, শসা ২০ থেকে ৩০ টাকা, পেঁপে ৩০ থেকে ৪০ টাকা, পাকা টমেটো ২০ থেকে ৪০ টাকা, শিম ২০ থেকে ৪০ টাকা, গাজর ২০ থেকে ৩০ টাকা, মুলা ১৫ থেকে ২০ টাকা, বেগুন ২০ থেকে ৪০ টাকা ও পটোল ৪০ থেকে ৫০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে। আর গত সপ্তাহে ১৬০ টাকা কেজি বিক্রি হওয়া সজনের ডাঁটার দাম কমে ১০০ থেকে ১২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
অনেকটা স্থিতিশীল আছে মাছের দামও। বাজারে বর্তমানে রুই মাছের কেজি বিক্রি হচ্ছে ২২০ থেকে ৩৫০ টাকা। নলা মাছ বিক্রি হচ্ছে ১৬০ থেকে ১৮০ টাকা কেজি। তেলাপিয়া ১৩০ থেকে ১৭০ টাকা, পাঙাশ ১৪০ থেকে ১৮০ টাকা কেজি, শিং ৩০০ থেকে ৪৫০ টাকা, শোল মাছ ৪০০ থেকে ৭৫০ টাকা, পাবদা ৩৫০ থেকে ৪০০ টাকা, বোয়াল ৪০০ থেকে ৭০০ টাকা, টেংরা ৩৫০ থেকে ৪০০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে। এ ছাড়া ব্রয়লার মুরগি বিক্রি হচ্ছে ১২০ থেকে ১২৫ টাকা কেজি। পাকিস্তানি কক মুরগির কেজি বিক্রি হচ্ছে ২৩০ থেকে ২৪০ টাকা। লাল লেয়ার মুরগি বিক্রি হচ্ছে ২০০ থেকে ২২০ টাকা কেজি দরে। ব্রয়লার মুরগির ডিম বিক্রি হচ্ছে প্রতি ডজন ৮০ থেকে ৮৫ টাকায়।