২৮ জানুয়ারি ২০২০, মঙ্গলবার, ৯:৫১

জ্বর ও শ্বাসকষ্ট নিয়ে চীনা নাগরিক রাজধানীর হাসপাতালে ভর্তি

মুন্সীগঞ্জে করোনার গুজব

জ্বর, কাশি ও শ্বাসকষ্ট নিয়ে একজন চীনা নাগরিক ঢাকার একটি হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন বলে জানা গেছে। তিনি ৯ দিন আগে গত ১৮ জানুয়ারি চীন থেকে ঢাকায় এসেছেন বলে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানায়। তাকে বাতাস বাইরে বের হয় না এমন একটি কক্ষে রাখা হয়েছে। আইইডিসিআরের পরিচালক অধ্যাপক ডা: মীরজাদী সেব্রিনা ফ্লোরাকে ওই চীনা নাগরিক সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হলে গত রাতে তিনি জানান, ‘আমরা নির্দিষ্ট করে কারো তথ্য সংগ্রহ করি না। সবার তথ্য সংগ্রহ করি। নিপাহ ভাইরাস, ইনফ্লুয়েঞ্জাসহ সব ধরনের তথ্য সংগ্রহের জন্য আমরা নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষা করি। যতক্ষণ পর্যন্ত নিশ্চিত না হচ্ছি ততক্ষণ নির্দিষ্ট করে কিছু বলতে পারছি না। করোনা ভাইরাসের কোনো কেস পেলে আমরা জানিয়ে দেব।’ চীনা নাগরিক ভর্তি হয়েছেন কি না- অথবা তার কী অবস্থা তা তিনি কৌশলে এড়িয়ে যান।

এক প্রশ্নের উত্তরে সেব্রিনা ফ্লোরা বলেন, গতকাল সোমবার পর্যন্ত বিমানবন্দরে দুই হাজার ৪৭০ জনকে পরীক্ষা করা হয়েছে। সন্দেহজনক কাউকে পাইনি। কিন্তু যাত্রীরা নিজেরাই ফোনে আমাদের সাথে যোগাযোগ করছে। কারো জ্বর, কাশি ইত্যাদি সম্বন্ধে জানতে চাচ্ছেন। জিজ্ঞাসা আইইডিসিআরের প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. এ এস এম আলমগীরকে এ ব্যাপারে করা হলে তিনিও জানান, এ ব্যাপারে তার কোনো ধারণা নেই। তিনি সংবাদ মাধ্যমে দেখেছেন।

মুন্সীগঞ্জে করোনার গুজব : আগরতলা থেকে একজন ফেরত

এ দিকে করোনা ভাইরাসে দেশে একজন আক্রান্ত হয়েছে এমন একটি গুজব গতকাল ছড়িয়ে পড়ে। ঢাকার কাছে মুন্সীগঞ্জের একটি উপজেলায় দু’জন করোনা ভাইরাসে মারা গেছে বলে অনলাইন পোর্টালগুলোতে নিউজ হয়েছে। কিন্তু স্বাস্থ্য অধিদফতরের আইইডিসিআর এ সবকে কেবল গুজব বলে বাতিল করে দিয়েছে। আইইডিসিআরের প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. এ এস এম আলমগীর বলেন, এটা কেবলই গুজব। এর কোনো ভিত্তি নেই। কারণ করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হতে হলে চীনে ভ্রমণের ইতিহাস থাকতে হবে। মুন্সীগঞ্জে যে দু’জন মারা গেছেন, এদের কেউ চীন থেকে আসেনি। এটা কেবলই গুজব। তারপরও আমরা বিস্তারিত জানার চেষ্টা করছি। এ দিকে বাংলাদেশের এক নাগরিককে ভারতে যেতে দেয়া হয়নি করোনা ভাইরাসের দোহাই দিয়ে। শওকত আহমেদ নামে এই বাংলাদেশী দুই মাসে আগে চীন থেকে এসেছেন। তার শরীরে করোনা ভাইরাস থাকতে পারে সন্দেহে গতকাল সোমবার সকাল ৯টার দিকে আগরতলা ইমিগ্রেশন থেকে তাকে ফিরিয়ে দেয়া হয়েছে। শওকত আহমেদ চীনে এক সপ্তাহ ছিলেন এবং নভেম্বর মাসের শেষ দিকে তিনি দেশে ফেরেন। কারো দেহে এত দীর্ঘ সময় করোনা ভাইরাস থাকে না। আইইডিসিআরের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, করোনা ভাইরাসের সুপ্তাবস্থা ১৪ দিন। এ সময়ের মধ্যে ল²ণ প্রকাশ পাবে যদি কারো দেহে থাকে।
ড. এ আলমগীর বলেন, যথারীতি বিমানবন্দরে চীন থেকে আগত আমাদের যাত্রীদের পরীক্ষা অব্যাহত রয়েছে। গতকালও আমরা সন্দেহজনক কাউকে পাইনি। বিমানবন্দরে হ্যান্ড স্ক্যানারসহ আর্চওয়ে স্ক্যানার রয়েছে যাত্রীদের শরীরের তাপ মাপার জন্য।

করোনা ভাইরাস কারো দেহে প্রবেশ করলে প্রথমে আক্রান্তের দেহে জ্বর আসে এবং শুকনো কাশি হয়।। সাত দিন রোগীর মারাত্মক শ্বাসকষ্ট হয়। রোগটি এত ভয়াবহ যে খুব দ্রæত হাসপাতালে নেয়া না হলে এবং ব্যবস্থাপনা চিকিৎসা না দিলে রোগীর মৃত্যুও হতে পারে। চিকিৎসকেরা বলছেন, করোনা ভাইরাস প্রথমে মানুষের মুখ ও নাক দিয়ে প্রবেশ করে। দ্বিতীয় পর্যায়ে এটা শ্বাসতন্ত্রে হোস্টসেল খুঁজে নেয় এবং সংখ্যা বৃদ্ধি করে অন্যান্য কোষকে আক্রমণ করে।

https://www.dailynayadiganta.com/first-page/475857/