১২ মার্চ ২০১৭, রবিবার, ৯:৩৩

চট্টগ্রামে চুরির অভিযোগে ব্লেড ও ছুরি দিয়ে হত্যা

নগরীর বন্দর থানার ভেণ্ডাপাড়া এলাকায় এক মাছবিক্রেতাকে হত্যা করেছেন দুর্বৃত্তরা। ‘চোর’ আখ্যা দিয়ে শুক্রবার তাকে বাসা থেকে ধরে নিয়ে প্রথমে মারধর এবং পরে তার শরীরের বিভিন্ন অংশে ব্লেড ও ছুরি দিয়ে কুচিয়ে কুচিয়ে কেটে এবং হাত-পা থেঁতলে দিয়ে মোহাম্মদ বাবুলের (৪০) মৃত্যু নিশ্চিত করে একদল ব্যক্তি। সে মারা গেলে একে একে সটকে পড়ে খুনিরা। এ ঘটনা চলাকালে বাবুলের আত্মীয়স্বজন বারবার ক্ষমা চাইলেও নিস্তার মেলেনি তার। এমন খুনের ঘটনা দেখে অনেকেই ঘটনাস্থলে কেঁদেছে। তবে বাঁচাতে পারেনি মাছ বিক্রেতা মোহাম্মদ বাবুলকে। এলাকাবাসীর উদ্ধৃতি দিয়ে এমন কথাগুলো বলেছেন বন্দর থানার উপপরিদর্শক সাজেদ কামাল।

নিহত বাবুল নগরীর বন্দর থানার কলসীদীঘিরপাড় সড়কের জাফর আলী মাতব্বর বাড়ির মৃত আব্দুল রশিদের ছেলে। বাবুল এলাকায় মাছ বিক্রি করত। তবে বন্দর থানার ওসি মঈনুল ইসলাম জানান, ‘বাবুলের বিরুদ্ধে ছিঁচকে চুরির অভিযোগ আছে।’
জানা গেছে, ‘১০ মার্চ সকালে ভেণ্ডাপাড়ায় বাপ্পীর স্টেশনারি দোকানে চুরি হয়। এরপর স্থানীয়রা বাবুলকে সেখানে ধরে নিয়ে যায়। সে চুরির বিষয়টি অস্বীকার করলে তাকে সবাই মিলে মারধর শুরু করে। এতে একপর্যায়ে মারা যায় বাবুল।

একাধিক এলাকাবাসী জানান, বাবুলকে দোকানের সামনে বেঁধে প্রথমে গণপিটুনি দেয়া হয়। এরপর ব্লেড দিয়ে কুচিয়ে কুচিয়ে হত্যা করা হয়। এ সময় নিহত বাবুলের স্বজনরা তাকে বাঁচাতে চেষ্টা করলে তাদেরও মারধর করা হয়। তাদের চোখের সামনে বাবুলের দেহটি নিথর হয়ে পড়ে থাকে। মৃত্যু নিশ্চিত হলে খুনিরা যে যার মতো এলাকা ত্যাগ করে।

এ দিকে মারধরে বাবুলের মৃত্যুর বিষয়টি জানতে পেরে শুক্রবার রাতে পুলিশ তার লাশ উদ্ধার করেছে। পরে ময়নাতদন্তের জন্য রাতেই চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল মর্গে তার লাশ পাঠায়।

বন্দর থানার উপ-পরিদর্শক সাজেদ কামাল নয়া দিগন্তকে বলেন, এ ঘটনায় নিহতের ছোট ভাই মোহাম্মদ ফারুক বাদি হয়ে সাতজনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত শতাধিক এলাকাবাসীর নামে মামলা করেছে। তিনি জানান, আসামিদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।

নিহতের ছোট ভাই নয়া দিগন্তকে জানান, ‘কোনো প্রমাণ ছাড়া আমার ভাইকে ঘর থেকে ধরে নিয়ে একদল সন্ত্রাসী গণপিটুনি দেয়। তাদের হাতে থাকা ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে আমার ভাইকে খুন করে। চোখের সামনে ভাইকে খুন করল ওরা, কিন্তু কিছুই করতে পারিনি।

বন্দর থানার ওসি মঈনুল ইসলাম বলেন, বাবুলের বিরুদ্ধে ছিঁচকে চুরির অভিযোগ আছে। ‘বাবুল চুরি করতে পারে। কিন্তু তাকে ডেকে নিয়ে পিটিয়ে মেরে ফেলবে এটা তো মানতে পারি না। কেউ আইন নিজের হাতে তুলে নিতে পারে না।

http://www.dailynayadiganta.com/detail/news/202875