২০ সেপ্টেম্বর ২০১৯, শুক্রবার, ১২:০৫

খালেদের গোপন টর্চার সেলের সন্ধান

যুবলীগের ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সাংগঠনিক সম্পাদক খালেদ মাহমুদ ভূঁইয়ার একটি টর্চার সেলের সন্ধান পেয়েছে র‌্যাব। বুধবার রাতে গুলশানের বাসা থেকে গ্রেফতারের পর র‌্যাবের জিজ্ঞাসাবাদে খালেদ টর্চার সেলের কথা স্বীকার করেন।

এর পর অভিযান চালায় র‌্যাব-৩-এর একটি দল। রাত সাড়ে ১১টার দিকে রাজধানীর কমলাপুর রেলস্টেশনের উল্টোদিকে ইস্টার্ন কমলাপুর কমার্শিয়াল কমপ্লেক্সের চতুর্থ তলায় ওই টর্চার সেলের সন্ধান পাওয়া যায়।

টর্চার সেল থেকে ইলেকট্রিক শক দেয়ার অত্যাধুনিক যন্ত্রপাতি, গায়ের চামড়া জ্বলে জ্বালাপোড়া করে এমন বৈদ্যুতিক যন্ত্রপাতি, বিপুল পরিমাণ লাঠিসোটা ও হকিস্টিক উদ্ধার করা হয়।

র‌্যাবের দায়িত্বশীল সূত্র জানায়, ওই টর্চার সেল থেকে ১৯০ পিস ইয়াবা, ৫ বোতল মদ, ৭০০ গ্রাম সিসা, দেড় কেজি সিসা খাওয়ার কয়লা উদ্ধার করা হয়। এ ছাড়া দুটি অস্ত্রের তেলের বোতলও উদ্ধার করা হয়।

জিজ্ঞাসাবাদে খালেদ জানায়, কেউ চাঁদা দিতে অস্বীকার করলে বা কারও সঙ্গে তার শত্রুতা তৈরি হয়েছে- এমন ব্যক্তিকে চর্টার সেলে ধরে নিয়ে যাওয়া হতো। সেখানে আটকে রাখত তার সহযোগীরা।

এর পর তার ওপর চলত অমানুষিক নির্যাতন। চাঁদার টাকা না আসা পর্যন্ত নির্যাতন চালানো হতো। ভুক্তভোগীদের বরাত দিয়ে র‌্যাব জানায়, হাত-পা বেঁধে ওই টর্চার সেলে আটকে রেখে শরীরের বিভিন্ন অংশে শক দেয়া হতো।

দাবিকৃত চাঁদা পেলেই সেখান থেকে ছাড়া পেতেন ভুক্তভোগীরা। র‌্যাবের এক কর্মকর্তা বলেন, খালেদ অস্ত্র-গুলিসহ গ্রেফতারের পর গোয়েন্দা তথ্য ও নির্যাতনের শিকার হয়েছেন এমন ভুক্তভোগীদের দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে টর্চার সেলের সন্ধান পেয়ে আমরা অভিযান পরিচালনা করি।

র‌্যাবের একটি সূত্র জানায়, টর্চার সেলটিতে রাতভর মাদক সেবন করত খালেদের সহযোগীরা। কখনও কখনও মাদকের আসরের মধ্যমণি হতেন খালেদ। ওই টর্চার সেলে কাউকে আনার পর নির্যাতন করার আগে ইয়াবা সেবন করত তারা।

ইয়াবা সেবনের পর মাথায় অস্ত্র ঠেকিয়ে গুলি করার হুমকি দিত। এমনকি পাওনা টাকা আদায়ে অনেক ব্যক্তিকে ওই চর্টার সেলে আনা হয়েছে। নির্মম নির্যাতন করে পাওয়া টাকা উচ্চহারে সুদসহ আদায় করার পরই তাদের মুক্তি মিলত।

https://www.jugantor.com/todays-paper/first-page/222534/