৫ মার্চ ২০১৭, রবিবার, ১:০৪

বিরোধীদের ঘরবন্দী রেখে একতরফা নির্বাচনী প্রস্তুতি সরকারি দলের!

সরকারি কর্তৃপক্ষের সম্মতি ছাড়া সাধারণ একটা সভাও করা যায় না। মিছিল-সমাবেশের অনুমতি চেয়ে পাওয়া যায় না। একটা মানববন্ধন পর্যন্ত লাঠিপেটা করে ছত্রভঙ্গ করে দেয়া হয়। আর মামলার পর মামলা তো আছেই। আদালতের কাঠগড়া আর অবিরাম হাজত-কয়েদখানার চক্কর তো আছেই। এভাবেই বিরোধীদের ঘরবন্দী রেখে একতরফা নির্বাচনী প্রস্তুতি নিয়ে চলেছে সরকারি দল। অন্যদিকে নির্বাচনী তফসিলের কোন হাওয়া-পাত্তা না থাকলেও নৌকায় আগাম ভোট প্রার্থনা করা হচ্ছে। এতে নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘন করা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে।

নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘন শুরু!

নির্বাচনের কোনো ঘোষণা না থাকলেও দলের শীর্ষ নেতৃত্ব থেকেই নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘন করা শুরু করা হলো বলে অভিযোগ উঠেছে। সরকারের নির্ধারিত মেয়াদ অনুযায়ী জাতীয় নির্বাচনের প্রায় ২ বছর বাকি। কিন্তু আগাম নির্বাচনের কোনো ঘোষণা না থাকলেও আগাম নির্বাচনী প্রচারণা শুরু করে দিয়েছেন স্বয়ং আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। গত ২৬ ফেব্রুয়ারি রোববার বগুড়ার সান্তাহার স্টেডিয়ামের জনসভায় তিনি নৌকায় ভোট চেয়ে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থীদের বিজয়ী করার আহ্বান জানান। প্রধানমন্ত্রী বলেন, দেশের মানুষ আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে শান্তিতে আছে, তাদের অর্থনৈতিক উন্নয়ন হয়েছে, জীবনযাত্রার মান বেড়েছে এবং সব ক্ষেত্রে সুযোগ-সুবিধা বৃদ্ধি পেয়েছে। এসব অব্যাহত রাখতে আবারও আওয়ামী লীগকে ভোট দিয়ে সরকার গঠন করে দেশ ও জনগণের সেবা করার সুযোগ দেয়ার আহ্বান জানান তিনি। এ সময় প্রধানমন্ত্রী বিএনপি ও খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধেও বক্তব্য দেন। তিনি অভিযোগ করেন, ‘দেশে অগ্নিসন্ত্রাস এবং আগুন দিয়ে মানুষ হত্যার নির্দেশদাতা ছিলেন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া। তার দল বিএনপি পারে শুধু লুটপাট আর অত্যাচার করতে। তারা টাকা পাচার করে, ধর্ষণ করে, দুর্নীতি করে, জীবন্ত মানুষ পুড়িয়ে মারে। এরা ক্ষমতায় এলে উন্নয়ন বন্ধ হয়ে যাবে।’

এদিকে নির্বাচনী আচরণবিধি সংক্রান্ত বিধিবিধানে দেখা যায় আগাম নির্বাচনী প্রচারণার সুযোগ নেই। বলা হয়েছে, ‘কোনো নিবন্ধিত রাজনৈতিক দল কিংবা উহার মনোনীত প্রার্থী বা স্বতন্ত্র প্রার্থী কিংবা তাহাদের পক্ষে অন্য কোনো ব্যক্তি ভোট গ্রহণের জন্য নির্ধারিত সময়ের তিন সপ্তাহ সময়ের পূর্বে কোনো প্রকার নির্বাচনী প্রচার শুরু করিতে পারিবেন না।’ (বাংলাদেশ গেজেট অতিরিক্ত সংখ্যা ১৮ সেপ্টেম্বর ২০০৮, ক্রমিক ১২)।

অপর এক বিধিতে উল্লেখ করা হয়েছে, ‘সরকারি সুবিধাভোগী অতি গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি তাহার নিজের বা অন্যের পক্ষে নির্বাচনী প্রচারণায় সরকারি যানবাহন, সরকারি প্রচারযন্ত্রের ব্যবহার বা অন্যবিধ সরকারি সুবিধা ব্যবহার করিতে পারিবেন না।’ উল্লেখ্য, এখানে সরকারি সুবিধাভোগী অতি গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তির মধ্যে প্রথমেই প্রধানমন্ত্রীর পদ উল্লেখ রয়েছে। (বাংলাদেশ গেজেট অতিরিক্ত সংখ্যা ২৪ নবেম্বর ২০১৩, ক্রমিক ১৪)।

বগুড়ার জনসভার মধ্য দিয়ে এসব বিধির সরাসরি লঙ্ঘন ঘটেছে বলে পর্যবেক্ষকরা মনে করেন। এর আগে আওয়ামী লীগের দলীয় কাউন্সিলে দলের সভানেত্রী ও প্রধানমন্ত্রী আগামী নির্বাচনের প্রস্তুতি নেয়ার জন্য দলের নেতাদের নির্দেশ দেন। যদিও নির্বাচনের সম্ভাব্য কোনো সময়ের কথা এ যাবৎ উল্লেখ করা হয়নি তবু ইশারা-ইঙ্গিতে অচিরেই একটি জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠানের সম্ভাবনার কথা জানা যায়। প্রধান বিরোধীদল বিএনপিও ইতোমধ্যে নির্বাচনে নিজেদের প্রস্তুত হবার কথা উল্লেখ করেছে।

কৌশল-অপকৌশল প্রয়োগ

বিশ্লেষকরা বলছেন, এমনিতেই বর্তমান সরকার ক্ষমতায় আসার পর থেকে বিরোধীদের রাজনৈতিক ময়দান থেকে উচ্ছেদ করার জন্য সবরকম কৌশল-অপকৌশল প্রয়োগ করে আসছে। সেই থেকে এযাবত দেশের সর্বত্র বিরোধী রাজনৈতিক নেতাকর্মী ও সমর্থকদের ওপর হামলা, মামলা, গুম, খুন প্রভৃতি দমনমূলক কার্যক্রম বাস্তবায়িত হয়ে চলেছে। বিশেষ করে একেকজন নেতাকর্মীকে কাবু করার জন্য মামলা দায়ের করাকে এক ‘মোক্ষম’ হাতিয়ার হিসেবে প্রয়োগ করা হচ্ছে। ২০১৩ সালের ২৫ অক্টোবর থেকে বিএনপি-জামায়াতের নেতাদের বিরুদ্ধে নতুন করে মামলা দেয়া শুরু হয়। সারাদেশে কেবল নাশকতার অভিযোগে জোটের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে বর্তমানে মামলার সংখ্যা প্রায় পাঁচ হাজার। আসামী করা হয়েছে জোটের প্রায় সাড়ে চার লাখ নেতাকর্মীকে।

গত কয়েক বছরের চিত্রে দেখা যায়, বিরোধী জোটের প্রধান দুই দল বিএনপি ও জামায়াতের কেন্দ্রীয়, জেলা ও তৃণমূল পর্যায়ের এমন নেতা খুঁজে পাওয়া যাবে না যাদের নামে মামলা নেই। প্রতিদিনই কোনো না নেতা গ্রেফতার হয়ে চলেছেন। দৌড়ের ওপর আর আত্মগোপনের মধ্যে থাকতে হচ্ছে তাদের। আর এটাই সরকারের কৌশল হয়ে দাঁড়িয়েছে। অভিযোগ উঠেছে, দেশের অন্যতম জনপ্রিয় দল দু’টিকে ধ্বংস করার জন্য নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে হাজার হাজার মামলা দায়ের করা হয়েছে এবং এই ধারা অব্যাহত রয়েছে। ‘রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত’ হয়ে দায়েরকৃত মামলাগুলোর এখন যেনতেনভাবে বিচারকার্য সমাধা করার চেষ্টা চালানো হচ্ছে বলেও অভিযোগ উঠেছে। বিএনপি নেত্রী সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়াসহ নেতৃবৃন্দকে দোষী সাব্যস্ত করে তাদের নির্বাচনের অযোগ্য করানোর আয়োজন চলছে- এমন অভিযোগ করে আসছে বিএনপি। আদালতে লড়াইরত আইনজীবী, ভুক্তভোগী বিএনপি-জামায়াত নেতৃবৃন্দ প্রমুখদের ধারণা, আওয়ামী লীগ সরকার চাচ্ছে মামলার খড়গ ও শাস্তি দিয়ে সর্বোচ্চ নেতৃত্ব থেকে শুরু করে বিভিন্ন পর্যায়ের উল্লেখযোগ্য সংখ্যক নেতাকে আগামী সংসদ নির্বাচনে অংশগ্রহণ থেকে বিরত রাখতে। তারা জানান, নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে অসংখ্য মামলা থাকার কারণে তারা প্রতিনিয়ত পুলিশ ও সরকারদলীয় নেতাকর্মীদের হয়রানির শিকার হচ্ছেন। মামলায় জামিন নিতে গিয়ে তারা গলদঘর্ম হচ্ছেন। কোনো কোনো নেতাকে সপ্তাহে অন্তত চারদিন আদালতে হাজিরা দিতে হচ্ছে। নেতাকর্মীরা বাড়িঘরে থাকতে পারছেন না। কার্যত তারা পালিয়ে বেড়াচ্ছেন। ঈদ-বিবাহ-উৎসব-জানাযাসহ সামাজিক অনুষ্ঠানে তারা অংশ নিতে পারছেন না। মামলা ছাড়াও পুলিশ ও স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের হুমকি-ধমকিতে তারা দিশেহারা। রাজনৈতিক সূত্রগুলো থেকে বলা হচ্ছে, নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে অন্তত অর্ধলাখ মামলা আছে এবং দিন দিন এ মামলার সংখ্যা বাড়ছে। এসব মামলায় লাখ লাখ নেতাকর্মীকে আসামী করা হয়েছে। এর মধ্যে বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে দুর্নীতি, রাষ্ট্রদ্রোহ, নাশকতা ও মানহানির অভিযোগে প্রায় ৩৪টি মামলা রয়েছে। দলের সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানের বিরুদ্ধে ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলাসহ শতাধিক মামলা রয়েছে। দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের বিরুদ্ধে নাশকতা ও মানহানির অভিযোগে ৮৮টি মামলা, মির্জা আব্বাসের বিরুদ্ধে ৭৮টি, বিএনপি নেতা ও বিশিষ্ট সাংবাদিক শওকত মাহমুদের বিরুদ্ধে ২২টি, বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলালের বিরুদ্ধে ৭০ থেকে ৭৫টি, হাবিব উন নবী খান সোহেলের বিরুদ্ধে ১১০টি, যুবদল নেতা সাইফুল ইসলাম নিরবের বিরুদ্ধে সর্বাধিক ১৪৩টি মামলা রয়েছে। অনেক জামায়াত নেতাকর্মীর একেকজনের বিরুদ্ধেও বহুসংখ্যক মামলা বিদ্যমান। এদিকে গ্রেফতারের পর জামিন পাওয়া মাত্রই জেলগেট থেকে পুনরায় গ্রেফতার যেন রেওয়াজে পরিণত হয়েছে। এর ফলে আদালতের আদেশ-নির্দেশ গুরুত্বহীন হয়ে পড়ছে। একজন বিশিষ্ট নাগরিক জানান, আদালতের নির্দেশে যারা মুক্তি পায় তাদের আবার নতুন করে কোনো মামলায় গ্রেফতার দেখানো বা পুনরায় গ্রেফতার করা আদালতের প্রতি অসম্মান দেখানো। এটা আইনের শাসনের সঙ্গে অসংগতিপূর্ণ- যা মানুষের অধিকার ক্ষুণœ করে। অপর একজন শিক্ষাবিদ বলেন, ঢালাওভাবে প্রতিপক্ষের রাজনীতিকদের এই প্রক্রিয়ায় হয়রানি গণতন্ত্রকেই ক্ষতিগ্রস্ত করে। উদারনৈতিক গণতান্ত্রিক চর্চাই কেবল দেশকে স্থিতিশীল করতে পারে।

রাজনৈতিক কার্যালয় বন্ধ

দেশে সুষ্ঠু ও অবাধ নির্বাচনী পরিস্থিতি তৈরির জন্য মুক্ত রাজনৈতিক কার্যক্রমের কোনো বিকল্প নেই। কিন্তু দেশের বিভিন্ন স্থানে বিরোধী রাজনৈতিক দলের কার্যালয় কোনো কারণ ছাড়াই বন্ধ করে রাখা হয়েছে। ২০১১ সালের ১৯ সেপ্টেম্বর থেকে দীর্ঘ সময় ধরে বন্ধ রয়েছে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী কেন্দ্রীয় ও ঢাকা মহানগরীর কার্যালয়। বন্ধ রয়েছে বিভিন্ন মহানগরসহ সারাদেশের কার্যালয়গুলো। জামায়াতে ইসলামীর কোনো অফিসেই কার্যক্রম চালাতে পারছে না দলের নেতাকর্মীরা। একটি বৈধ রাজনৈতিক দলকে প্রকাশ্য সভা সমাবেশও করতে দিচ্ছে না আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। নিজেদের বাড়িতেও থাকতে পারছেন না তারা। একইভাবে বন্ধ রয়েছে ইসলামী ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় কার্যালয়সহ সারাদেশের কার্যালয়গুলো। একজন বুদ্ধিজীবী জানান, বাংলাদেশের প্রতিটি গণতান্ত্রিক আন্দোলনে ভূমিকা পালন করেছে জামায়াতে ইসলামী। অংশ নিয়েছে জাতীয় সংসদ থেকে শুরু করে স্থানীয় পর্যায়ে প্রতিটি নির্বাচনে।

আন্দোলন-সংগ্রামের কারণে জামায়াতে ইসলামীর বহু নেতাকর্মী প্রাণ দিয়েছেন, পঙ্গুত্ববরণ করছে অগণিত নেতাকর্মী। ২০০৯ সালে নির্বাচনের মধ্য দিয়ে ক্ষমতায় আসে আওয়ামী লীগ। এরপর বিরোধীদলের সভা-সমাবেশে বাধা দেয়া শুরু হয়। একপর্যায়ে জামায়াতে ইসলামীর সভা-সমাবেশ অঘোষিতভাবে নিষিদ্ধ করা হয়। ধীরে ধীরে ঘরোয়া বৈঠক বন্ধ করে দেয়া হয়। দীর্ঘদিন বন্ধ থাকা এসব কার্যালয়েও পুলিশ মাঝে-মধ্যে হানা দিয়ে নানাপ্রকার ‘কাহিনী’ সাজায় বলে জামায়াতের অভিযোগ। কোনো রাজনৈতিক দলকে নিষিদ্ধ না করেও তাদের সঙ্গে সেরকম আচরণই করা হচ্ছে সরকারি মহল থেকে। তাদের রাজনৈতিক কর্মকা-ে বাধা প্রদান করা নিয়মিত ও সাধারণ ঘটনায় পরিণত হয়েছে। সর্বসাম্প্রতিক সময়েও বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলোর বিরুদ্ধে সেই একই কায়দা ও কৌশল প্রয়োগ অব্যাহত রাখা হয়েছে। গোপন বৈঠক, নাশকতার পরিকল্পনা, বিনা অনুমতিতে মিছিল-সমাবেশ, বিস্ফোরক দ্রব্য-জিহাদী বই থাকা প্রভৃতির অভিযোগ তুলে যেকোনো শান্তিপূর্ণ ও ঘরোয়া কার্যক্রমে আইনশৃঙ্খলার দোহাই দিয়ে কর্মসূচি ভ-ুল করে দেয়া হয়। এমনকি ঘরোয়া দলীয় সভা ও মানববন্ধনের মতো নিরীহ কর্মসূচিতেও বাধা দেয়া হয়, ব্যানার কেড়ে নেয়া হয়, ঘটনাস্থল থেকে আটক করে নিয়ে যাওয়া হয়। সরকারের সাধারণ নির্দেশনা ও স্থানীয় দলীয় নেতাদের ইঙ্গিতে সাধারণ কর্মসূচিতে বাধা প্রদানের ঘটনাগুলো ঘটে বলে অভিযোগে প্রকাশ। এভাবে বিরোধীদলীয় রাজনীতিকে একপ্রকার চিপাগলি বা কানাগলিতে ঢুকিয়ে দেয়া হয়েছে বলে ভাষ্যকারদের অভিমত।

আ’লীগের দুশ্চিন্তা কোথায়?

ক্ষমতায় থেকে নির্বাচন করে যে সুবিধা আওয়ামী লীগ নিয়েছে এবং আগামীতে নিতে চাচ্ছে তা দেশ-বিদেশের কোথাও গ্রহণযোগ্যতা পায়নি। এমনকি দলের পুরনো ও একনিষ্ঠ লোকেরাও এ নিয়ে বিব্রত থাকেন। এ কারণে একটি অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচন অনুষ্ঠানে আ’লীগ ভরসা পাচ্ছে না এবং এ নিয়ে ভেতরে দুশ্চিন্তা ভর করেছে বলে সূত্রে জানা গেছে। ‘বিপুল উন্নয়ন’ করার প্রচারণা এবং ‘উন্নয়নের গণতন্ত্র’ তত্ত্ব সাধারণ মানুষের কাছে আদৌ গ্রহণযোগ্যতা পেয়েছে কিনা- তা যাচাইয়ের একমাত্র মাপকাঠি হলো অবাধ নির্বাচন। ফলে নির্বাচন কবে হবে সে বিষয়ে কোনো ঘোষণা ছাড়াই নির্বাচনী প্রস্তুতি নেয়া শুরু করে সরকারি দল। সূত্র জানায়, দলীয় সভাপতি শেখ হাসিনা আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ব্যাপারে খুবই তৎপর হয়েছেন। দলের প্রতিটি ফোরামে নির্বাচনের প্রস্তুতি নেয়ার নির্দেশনা দিচ্ছেন। তিন মাস পরপর মাঠ জরিপ করা হচ্ছে। সাম্প্রতিক জরিপগুলোতে মাঠপর্যায়ে দলের কোন্দল এবং এমপিদের সঙ্গে জনমানুষের দূরত্বের বিষয়টি উঠে এসেছে বলেও জানা গেছে। একজন নেতা জানান, আওয়ামী লীগের যত সুসময়ই থাকুক না কেন, বর্তমান আওয়ামী এমপিদের মধ্যে ১২৭ জনই বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত। অর্ধশতাধিক এমপি রাজনীতিতে নতুন কিংবা পারিবারিক উত্তরাধিকার থেকে এমপি হয়েছেন। ফলে প্রকৃতই প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ ভোট হলে কার অবস্থা কেমন হতে পারে, সেটা এখনো পরিষ্কার নয়। এ অবস্থায় মাঠের অবস্থা নেতিবাচক প্রতীয়মান হলে আগাম নির্বাচনের সম্ভাবনাও তিরোহিত হবে। অথবা ৫ জানুয়ারির পুনরাবৃত্তি ঘটাতে হবে বলে বিশ্লেষকদের অভিমত।

http://www.dailysangram.com/post/274298