২ মার্চ ২০১৭, বৃহস্পতিবার, ৭:৫৭

খেলাপি দেখিয়ে ৩০ হাজার কোটি টাকা গায়েব

বাংলাদেশ ব্যাংকের কাছে ঋণ মওকুফের তালিকা চেয়েছেন হাইকোর্ট

২০১৬ সালের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত কোন কোন প্রতিষ্ঠান ও ব্যক্তির ঋণ মওকুফ করা হয়েছে তার একটি তালিকা দাখিলের নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। একই সাথে ঋণ মওকুফ পাওয়া কোম্পানি বা ব্যক্তিরা দেশের অন্য কোনো ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠান থেকে ঋণ গ্রহণ করেছেন কি না, করে থাকলে কী পরিমাণ করেছেন, তা উল্লেখ করে আগামী ৩০ দিনের মধ্যে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নরকে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে।

একই সাথে ব্যাংক কোম্পানি আইনের ২৮ (১) ও ৪৯ (চ) ধারা অনুযায়ী বাংলাদেশ ব্যাংকের ঋণ মওকুফের মতা কেন অসাংবিধানিক হবে না তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছেন হাইকোর্ট।

রুলে বিবাদি করা হয়েছে অর্থ সচিব, ব্যাংকিং বিভাগের সচিব, আইন সচিব, কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নর, মহাহিসাব নিরীক, কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ব্যাংকিং অপারেশন বিভাগের মহাব্যবস্থাপককে।

বিচারপতি জুবায়ের রহমান চৌধুরী ও বিচারপতি মো: ইকবাল কবিরের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন। এ বিষয়ে পরবর্তী আদেশের জন্য ২ এপ্রিল দিন ধার্য করেছেন আদালত। বিশেষ বার্তাবাহকের মাধ্যমে আদালতের এ আদেশ সংশ্লিষ্টদের কাছে পৌঁছে দেয়ার জন্য সুপ্রিম কোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেলকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে।

গতকাল হাইকোর্টের এ আদেশের বিষয়টি জানিয়ে ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এস এম মনিরুজ্জামান সাংবাদিকদের বলেন, ওই আদেশ ছাড়াও ঋণ মওকুফ পাওয়া প্রতিষ্ঠান ও ব্যক্তি অন্য কোনো ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠান থেকে ঋণ গ্রহণ করেছেন কি না, করে থাকলে তার পরিমাণ উল্লেখ করে একই সময়ের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে।

তিনি আরো বলেন, গত ২৬ ফেব্রুয়ারি একটি ইংরেজি দৈনিকে ‘সরকারের কাছ থেকে শতকরা ৬০ ভাগ খেলাপি ঋণ দেখিয়ে প্রতারণার মাধ্যমে ৩০ হাজার কোটি টাকা গায়েব’ শিরোনামে প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। এই প্রতিবেদন নজরে নিয়ে আদালত রুল জারি করেন।

২৮ ফেব্রুয়ারি এ প্রতিবেদন আমলে নেন হাইকোর্টের একটি বেঞ্চ।

আদালতে রাষ্ট্রপে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এস এম মনিরুজ্জামান, সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল শামস-উদ-দোহা ও খায়রুন নেসা।

ব্যাংক কোম্পানি আইনের ৪৯ (চ) ধারায় বলা হয়েছে, ঋণ শৃঙ্খলার স্বার্থে বাংলাদেশ ব্যাংক সাধারণভাবে সব ব্যাংক-কোম্পানি বা কোনো বিশেষ ব্যাংক-কোম্পানি বা বিশেষ শ্রেণীর ব্যাংক-কোম্পানির জন্য ঋণ শ্রেণীকরণ ও সঞ্চিতি সংরণ, ঋণ মওকুফ, পুনঃতফসিলীকরণ কিংবা পুনর্গঠনসংক্রান্ত বিষয়গুলো বাধ্যতামূলকভাবে অনুসরণীয় নির্দেশ প্রদান করতে পারবে।

২৮ (১) ধারায় বলা হয়েছে, বাংলাদেশ ব্যাংকের পূর্বানুমোদন ব্যতিরেকে, কোনো ব্যাংক কোম্পানি তার কাছ থেকে নিম্নবর্ণিত ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের গৃহীত ঋণ বা তার অংশ বা তার ওপর অর্জিত সুদ মওকুফ করবে না।

http://www.dailynayadiganta.com/detail/news/200138