৯ মে ২০২০, শনিবার, ৭:১৪

ছাত্রশিবিরের সাবেক কর্মী নাঈম উদ্দিন মুরাদের ইন্তিকালে গভীর শোক প্রকাশ

বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবিরের চৌদ্দগ্রাম উপজেলা শাখার সাবেক কর্মী নাঈম উদ্দিন মুরাদ (৩২), পিতা-মৃত মুকবুল আহম্মদ, মাতা- ছালেহা বেগম, গ্রাম- লুদিয়ারা, পোস্ট - বাতিশা, উপজেলা - চৌদ্দগ্রাম, জেলা- কুমিল্লা, গত ৮ মে দিবাগত রাত ২টায় ইন্তিকাল করেছেন। ৫ ভাই ১ বোনের মাঝে তিনি ছিলেন সকলের ছোট।

২০১৩ সালের ১৮ ফেব্রুয়ারি বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমীর আল্লামা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর ফাঁসির রায়ের প্রতিবাদে জামায়াত ঘোষিত কর্মসূচি পালনকালে পুলিশের গুলিতে জামায়াত কর্মী ইব্রাহিম শাহাদাত বরণ করেন এবং শিবিরকর্মী নাঈম উদ্দিন মুরাদ গুলিবিদ্ধ হন। পরে মারাত্মক আহত অবস্থায় পুলিশ তাকে গ্রেফতার করে নিয়ে যায়। তার বিরুদ্ধে পুলিশ মামলা দিয়ে পুলিশি পাহারায় ঢাকা মেডিকেল কলেজে চিকিৎসা দেয়। যার কারণে তার সঠিক চিকিৎসা না হওয়ায় তিনি চিরতরে পঙ্গু হয়ে যান। ২ মাস পুলিশ পাহারায় থাকার পর আদালত জামিন দিলে তাকে সাভার সিআরপিতে ২ বছর চিকিৎসা দেয়া হয়। কিন্তু তার অবস্থার কোনো উন্নতি হয়নি। তিনি আহত হওয়ার পর থেকে মৃত্যুর আগ পর্যন্ত কোনো দিন দাঁড়াতে বা পা দিয়ে চলাচল করতে পারেননি। ধীরে ধীরে তার সমস্ত শরীর শুকাতে থাকে এবং পচন ধরে যায়। বিগত সাত বছরের অধিকাংশ সময় তিনি বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন। মৃত্যুর ১ সপ্তাহ আগে তার ১টি পা শরীর থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। অবশেষে ৮ মে দিবাগত রাত ২টা ২০ মিনিটের সময় তিনি ইন্তিকাল করেন ( ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। ৯ মে সকাল ১০টায় লুদিয়ারা প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মাঠে সালাতে জানাযা শেষে তাকে হাজি বাড়ির পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়েছে।

শোকবাণী

বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবিরের সাবেক কর্মী নাঈম উদ্দিন মুরাদের ইন্তিকালে গভীর শোক প্রকাশ করে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর নায়েব আমীর ও সাবেক এমপি ডা. সৈয়দ আব্দুল্লাহ মোঃ তাহের ৯ মে এক শোকবাণী প্রদান করেছেন।

শোকবাণীতে তিনি বলেন, চৌদ্দগ্রাম উপজেলা ছাত্রশিবিরের সাবেক কর্মী নাঈম উদ্দিন মুরাদের ইন্তিকালে আমি গভীর শোক প্রকাশ করছি।

ডা: তাহের বলেন, ২০১৩ সালে সংগঠনের আহবানে সাড়া দিয়ে অন্যায়ের প্রতিবাদ করতে গিয়ে তিনি পুলিশের গুলিতে মারাত্মকভাবে আহত হন। অত্যন্ত অমানবিকভাবে আহত অবস্থায় পুলিশ তাকে গ্রেফতার করে। গ্রেফতার অবস্থায় তিনি চিকিৎসা থেকে বঞ্চিত হন। ফলে তিনি পঙ্গু হয়ে যান। দীর্ঘ সাত বছর যাবৎ পঙ্গুত্বের জীবন যাপন করে অবশেষে মহান রবের ডাকে সাড়া দিয়ে তিনি দুনিয়া থেকে চিরবিদায় গ্রহণ করলেন। তিনি তার যৌবনের সকল অংশ আল্লাহর জন্য কুরবানি করেছেন। তার এ বিশাল ত্যাগ ইসলামী আন্দোলনের কর্মীদের যুগ যুগ ধরে অনুপ্রাণিত করবে।

মহান আল্লাহ তায়ালা তাকে শহীদ হিসেবে কবুল করে জান্নাতুল ফিরদাউসে উচ্চ মর্যাদা দান করুন।

তিনি তার শোক-সন্তপ্ত পরিবার-পরিজনদের প্রতি গভীর সমবেদনা জানিয়ে বলেন ,মহান আল্লাহ তায়ালা তাদেরকে এ শোকে ধৈর্য ধারণ করার তাওফিক দান করুন।